রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

আরাফার দিনের রোজায় দুই বছরের গুনাহ মাফ, সহিহ হাদিসে কী আছে?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ জুন ২০২৫, ০৭:২৯ পিএম

শেয়ার করুন:

আরাফার দিনের এক রোজায় দুই বছরের গুনাহ মাফ, সহিহ হাদিসে কী আছে?

হিজরি বর্ষপঞ্জিতে জিলহজ মাসের ৯ তারিখকে বলা হয় ‘ইয়াওমু আরাফা’ বা আরাফার দিন। হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই দিনে বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান নফল রোজা রেখে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করেন। কারণ, এই একটি রোজা রাখলে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী এক বছর মোট দুই বছরের গুনাহ ক্ষমার আশা করা যায়। এ কথাটি কি শুধু প্রচলিত কথা, না কি সাহিহ হাদিসে প্রমাণিত? চলুন যাচাই করে দেখি।

আরাফার রোজা নিয়ে নবীজি কী বলেছেন

আরাফার দিনের রোজার ফজিলত সম্পর্কে আবু কাতাদাহ (রা.) হতে বর্ণিত, নবী (স.) বলেছেন- صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ، أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ وَالسَّنَةَ الَّتِي بَعْدَهُ অর্থ: ‘আরাফার দিনের রোজা আমি আল্লাহর নিকট আশা রাখি যে, তা পূর্ববর্তী এক বছর এবং পরবর্তী এক বছরের গুনাহ মাফের কারণ হবে।’ (সহিহ মুসলিম: ১১৬২)

হাদিসটির গ্রহণযোগ্যতা

বর্ণনাকারি: হাদিসটি হাদিসের প্রসিদ্ধ সংকলন সহিহ মুসলিমে বর্ণিত, যা হাদিসের দ্বিতীয় সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য গ্রন্থ।
রাবি (বর্ণনাকারী): আবু কাতাদাহ (রা.) একজন বিশুদ্ধ স্মরণশক্তিসম্পন্ন ও নির্ভরযোগ্য সাহাবি।
অতএব, হাদিসটি সহিহ এবং ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে প্রমাণযোগ্য দলিল।

আরও পড়ুন: আরাফার দিনের উত্তম দোয়া যা পূর্ববর্তী নবীরাও পড়েছেন


বিজ্ঞাপন


গুনাহ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

হাদিস বিশেষজ্ঞগণ ব্যাখ্যা করেছেন, এখানে ‘গুনাহ মাফ’ বলতে ছোট গুনাহ বোঝানো হয়েছে। বড় গুনাহ মাফ পেতে তওবা আবশ্যক।
ইমাম নববি (রহ.) বলেন, ‘এই হাদিসে ছোট গুনাহ মাফ হওয়ার কথা বোঝানো হয়েছে, যদি বড় গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা হয়।’ (শরহ মুসলিম)

কখন রোজাটি রাখতে হয়?

আরাফার দিন: হিজরি ৯ জিলহজ (নিজ দেশ বা অঞ্চলের চাঁদের হিসাব অনুযায়ী)।
বাংলাদেশের মুসলিমদের জন্য: সৌদি আরবের হজের নিরিখে নয়, বরং বাংলাদেশের চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ৯ জিলহজে এই রোজা রাখতে হবে। (ওলামায়ে কেরামের অভিমত অনুযায়ী)

হজে থাকলে কি রোজা রাখা যাবে?

না। রাসুল (স.) আরাফার দিন হজের সময় রোজা রাখেননি। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘নবী (স.) আরাফার দিন রোজা রাখেননি।’ (তিরমিজি) তাই হাজিদের জন্য রোজা না রাখাই সুন্নত এবং হাজিদের জন্য আরাফার দিনে রোজা রাখা মাকরুহ। সহিহ মুসলিমে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) আরাফার দিনে রোজা রাখেননি। তিনি সবার সম্মুখে দুধ পান করেছেন। (মুসলিম: ১১৬৩) 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর