রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

২০২৫ হজ: প্রযুক্তির ছোঁয়ায় নিরাপদ ও স্মরণীয় হজযাত্রা

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ জুন ২০২৫, ০৩:১৯ পিএম

শেয়ার করুন:

২০২৫ হজ: প্রযুক্তির ছোঁয়ায় নিরাপদ ও স্মরণীয় হজযাত্রা

২০২৫ সালের হজ যাত্রা বাংলাদেশের হাজিদের জন্য একটি বিশেষ ও স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে উঠবে। সরকারের পক্ষ থেকে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সার্বিক সেবার উন্নয়নের মাধ্যমে হাজিদের স্বাচ্ছন্দ্য, নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিত করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ হজ মিশন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একযোগে কাজ করে হাজিদের জন্য সর্বোত্তম পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে নিয়োজিত।

আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার

২০২৫ সালের হজের জন্য চালু করা হয়েছে হজ অ্যাপস, যেখানে হাজিরা যাত্রার পূর্ব প্রস্তুতি, প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা, সময়সূচী, এবং জরুরি যোগাযোগের ব্যবস্থা পাবেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে দ্রুত খবর আদান-প্রদান, হজ সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য সহজে জানা যাবে। পাশাপাশি রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে, যারা ২৪ ঘণ্টা হাজিদের যেকোনো জরুরি সমস্যায় দ্রুত সাড়া দিবে, যেন তারা যাত্রাপথে, মক্কা-মদিনায় বা মিনায় কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই হজ পালনে সক্ষম হন।

আর্থিক সুরক্ষা ও যোগাযোগ সুবিধা

হাজিদের নগদ টাকা বহনের ঝুঁকি কমাতে সরকার চালু করেছে হজ প্রিপেইড কার্ড। এই কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন নিরাপদ এবং সুবিধাজনক হবে, যার ফলে টাকা চুরি বা হারানোর আশঙ্কা থাকবে না। এছাড়া, পরিবারের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগের জন্য হাজিদের জন্য ফোন রোমিং সুবিধা চালু রয়েছে, যা দূর থেকে হলেও আপনজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবে।

আরও পড়ুন: হজযাত্রীদেরকে সর্বোত্তম সেবা প্রদান করতে চায় সরকার: ধর্ম উপদেষ্টা


বিজ্ঞাপন


যাতায়াত ও আবাসনের উন্নয়ন

বিমান ভাড়ায় বিশেষ ছাড় দিয়ে হাজিদের যাত্রা ব্যয় কমিয়েছে সরকার। এছাড় ভবিষ্যতে আরও কমানো হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মিনার তাঁবু ও শৌচাগার ব্যবস্থার মান উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যাতে হাজিরা সুরক্ষিত ও স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারেন। বিশেষ করে মিনায় প্রতিটি হাজির জন্য পর্যাপ্ত স্থান নিশ্চিত করা হচ্ছে, যা অতীতের সংকট কাটিয়ে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করবে।

স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

সৌদি আরবের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় রেখে হাজিদের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। করোনা মহামারীর অভিজ্ঞতা থেকে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানা হচ্ছে, যাতে সবাই নিরাপদে হজ পালন করতে পারে। এছাড়া, হাজিদের দ্রুত সাহায্যের জন্য চিকিৎসা কেন্দ্র ও এম্বুলেন্স সেবা ২৪ ঘণ্টা সচল থাকবে।

প্রশাসনিক ও মনিটরিং

বাংলাদেশ হজ মিশনের মাধ্যমে সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় নজরদারি রাখা হচ্ছে, যাতে হাজিদের যেকোনো সমস্যা দ্রুত সমাধান করা যায়। মনিটরিং কমিটি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও প্রতিবেদন প্রদান করে থাকেন। এই প্রশাসনিক তৎপরতা হাজিদের জন্য নিরাপত্তা ও সহায়তা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

আরও পড়ুন: সরকারি খরচে হজ করলে কবুল হবে কি?

ধর্ম উপদেষ্টার বক্তব্য

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘সরকার সর্বাত্মক আন্তরিকতায় কাজ করছে যাতে প্রত্যেক হাজি নিরাপদ ও সহজে হজ পালনের আমল সম্পন্ন করতে পারেন। প্রযুক্তির সমন্বয়ে হজ ব্যবস্থাপনা গতিশীল ও ফলপ্রসূ হচ্ছে। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের এই উন্নত সেবা ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টান্ত হবে।’

২০২৫ সালের হজ ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তি, মানবিক সেবা ও প্রশাসনিক দক্ষতার সমন্বয় হাজিদের জন্য নতুন যুগের নিরাপদ, আরামদায়ক ও স্মরণীয় অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করবে। বাংলাদেশের হাজিরা এ বছর অভূতপূর্ব সেবা ও সুরক্ষায় ভাগী হতে চলেছেন, যা তাদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকবে।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর