হজ ইসলামি শরিয়তের অন্যতম স্তম্ভ ও ফরজ ইবাদত। ইরশাদ হয়েছে, ‘প্রত্যেক সামর্থ্যবান মানুষের ওপর আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহর হজ করা ফরজ’ (সুরা আলে ইমরান: ৯৭)
হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় ৮ জিলহজ থেকে। তাঁবুর নগরী খ্যাত মিনায় অবস্থানের মধ্য দিয়ে। ৮ জিলহজ সূর্যোদয়ের পর মিনায় রওনা করা মোস্তাহাব। তাই ৮ জিলহজ সূর্যোদয়ের আগে কিংবা ৭ জিলহজ মিনায় চলে যাওয়া অনুত্তম। অবশ্য মুআল্লিমের পক্ষ থেকে নিতে বাধ্য করলে তখন যাওয়া দোষণীয় হবে না। (আলমুহিতুল বুরহানি: ৩/৪০২; আলবাহরুর রায়েক: ২/৩৩৫; আলবাহরুল আমিক: ৩/১৪০৭)
বিজ্ঞাপন
৮ জিলহজ জোহর থেকে ৯ জিলহজ ফজর পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মিনায় আদায় করা সুন্নত। হাদিস শরিফে এসেছে, জাবের (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ৮ জিলহজ মিনায় গমন করেছেন এবং সেখানে জোহর, আছর, মাগরিব, এশা ও ফজর নামাজ পড়েছেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৮/৪৭৮, হাদিস: ১৪৭৫৫; সহিহ মুসলিম: ১/৩৯৬)
আরও পড়ুন: আরাফার রোজা বাংলাদেশে কোনদিন রাখতে হবে?
অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের (রা.) বলেন, সুন্নত হল ইমাম জোহর, আছর, মাগরিব, এশা ও ফজর মিনায় পড়বেন। এরপর মিনা হতে আরাফায় রওনা করবেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৮/৪৭৯, হাদিস: ১৪৭৬০; মানাসিক: ১০৪; গুনইয়াতুন নাসিক: ১৪৬; রদ্দুল মুহতার: ২/৫০৩)
৮ জিলহজ দিবাগত রাত মিনায় অবস্থান করা সুন্নত। আর এই দিনে জোহর থেকে ৯ তারিখ সকাল পর্যন্ত পুরো সময় এক নাগাড়ে সেখানে অবস্থান করা মোস্তাহাব। (গুনইয়াতুন নাসিক: ১৪৬; রদ্দুল মুহতার: ২/৫০৩; ফতোয়া খানিয়া: ১/২৯৩; আততাজরিদ: ৪/১৯৫৭; আলইখতিয়ার: ১/১৬০)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: ১৩০ বছর বয়সে হজ, জেদ্দা বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা
মিনায় অবস্থানের পুরোটা সময় হাজিদের তালবিয়া, জিকির ও কোরআন তিলাওয়াতে মশগুল থাকা উচিত। এখানে অবস্থানের প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। অল্প সময়ও জিকির-আজকার থেকে বিরত থাকা উচিত নয়। তাই জিকির ও ইবাদতে মগ্ন থাকা মিনার অত্যন্ত জরুরি আমল। অনর্থক গল্প-গুজব থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
মক্কা থেকে আরাফার ময়দানের দিকে যাওয়ার মহাসড়কের পাশে মিনার অবস্থান। পবিত্র কাবা থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মিনা প্রান্তরের আয়তন প্রায় ২০ বর্গকিলোমিটার।
হজযাত্রীরা কেউ বাসে, কেউ হেঁটে বা অন্য যানবাহনে মিনায় এসে পৌঁছান। মিনায় জোহর, আছর, মাগরিব, এশা এবং ফজরের নামাজ আদায় করে আরাফার ময়দানে যাবেন হাজিরা। আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের পর মুজদালিফায় রাতযাপন এবং জামারাতে কঙ্কর নিক্ষেপ, কোরবানিসহ নানা আনুষ্ঠানিকতা পালন এবং সবশেষে কাবা শরিফে বিদায়ী তাওয়াফের মধ্য দিয়ে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।

