জিলহজ মাসের ৯ তারিখ পবিত্র আরাফাতের দিন। এবারের হজে সৌদি আরবে অবস্থানকারীদের জন্য সেই দিনটি হলো ১৫ জুন, শনিবার। আর সৌদি আরবের বাইরের দেশে অবস্থানকারীরা সঠিক মতানুযায়ী জিলহজের চাঁদ ওঠা সাপেক্ষে নিজ দেশের সঙ্গে মিলিয়ে ৯ জিলহজ রোজা রাখবেন। বাংলাদেশে সেই দিনটি হলো ১৬ জুন, রোববার। অর্থাৎ যারা বাংলাদেশে অবস্থান করছেন, তারা শনিবার শেষরাতে সেহেরি খেয়ে রোববার রোজা রাখলে আরাফার দিনের রোজার বিশেষ সওয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ।
আরাফার দিনের রোজা মূলত একটি। হাদিসে আরাফার দিনের একটি রোজার কথাই এসেছে। যারা বলছেন, একদিন রোজা রাখলে হবে না, তাদের কথা সঠিক নয়। আরাফার দিনে একটি রোজা রাখলে বান্দার দুই বছরের গুনাহ মাফ হয় বলে হাদিস রয়েছে। আল্লাহর রাসুল (স.) বলেন, ‘আরাফার দিনের রোজার বিষয়ে আমি আল্লাহর কাছে প্রত্যাশা রাখি যে, তিনি আগের এক বছরের এবং পরের এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। (সহিহ মুসলিম: ১১৬২)
বিজ্ঞাপন
অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.)-এর জনৈকা স্ত্রী বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ৯ জিলহজ তারিখে রোজা রাখতেন।’ (আবু দাউদ: ২৪৩৭, নাসায়ি: ২৩৭২)
আরও পড়ুন: আরাফার দিন যে দোয়া পড়তে ভুলবেন না
তবে কেউ চাইলে দুইটিও রাখতে পারেন। যেমন কেউ হজের দিন এবং নিজ দেশের সঙ্গে মিলিয়ে আরও একটি রোজা রাখতে পারেন। যদিও দুইটি রাখা বাধ্যতামূলক নয়। তবে, দুটি রাখলে বাড়তি রোজাটির সওয়াবও পাবেন।
তবে সবচেয়ে ভালো আমল তারাই করছেন- যারা জিলহজ মাসের ১ তারিখ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত রোজা রাখছেন। এতে আরাফার রোজা তো পাওয়া যাবেই, একইসঙ্গে তারা অনেক সওয়াব ও ফজিলত লাভ করবেন। কেননা হাদিসে এসেছে, জিলহজের ১ থেকে ৯ তারিখ প্রতিদিনের রোজা ১ বছরের রোজার সওয়াব এবং প্রতিরাতের ইবাদত ১ বছরের ইবাদতের সমান সওয়াব। (তিরমিজি, খণ্ড:১, পৃষ্ঠা-১৫৮)
বিজ্ঞাপন
আল্লাহ তাআলা আরাফার দিন অসংখ্য বান্দাকে ক্ষমা করেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেন, ‘আরাফার দিনের মতো আর কোনো দিন এত অধিক পরিমাণে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় না। আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার নিকটবর্তী হন এবং বান্দাদের নিয়ে ফেরেশতাদের নিকট গর্ব করেন। আল্লাহ বলেন, কী চায় তারা? (সহিহ মুসলিম: ১৩৪৮)
আরও পড়ুন: হাদিসের আলোকে আরাফাতের ময়দানের বিশেষত্ব
মূলত হজ বলতে আরাফার দিনটিকেই বোঝানো হয়। হজের সময় আরাফাতের মাঠে অবস্থান করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। নবীজি (স.) বলেছেন, ‘আরাফাতে অবস্থান করাই হলো হজ।’ (সুনানে নাসায়ি: ৩০৪৪ )
আরাফার দিনে অবতীর্ণ হয়েছে কোরআনে কারিমের সর্বশেষ আয়াত, ‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাঙ্গ করলাম এবং তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত পরিপূর্ণ করলাম এবং ইসলাম তোমাদের দীন মনোনীত করলাম।’ (সুরা মায়েদা: ০৩)
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ৯ জিলহজ তথা আরাফার দিনে রোজা রাখার তাওফিক দান করুন। বেশি বেশি নেক আমল ও দোয়া-দরুদে দিনটি অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

