শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ঢাকা

কাউকে ট্রল করার গুনাহ কেমন?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ মে ২০২২, ০৯:৫০ এএম

শেয়ার করুন:

কাউকে ট্রল করার গুনাহ কেমন?

ট্রল করা মানে অপমান করা, ব্যঙ্গ করা, হাসির পাত্রে পরিণত করা। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে অন্য ইউজারদের পোস্ট, মন্তব্য, ভিডিও ইত্যাদির মাধ্যমে অপমানের শিকার হওয়াকে বলে ট্রল হওয়া। 

ইসলামে কাউকে নিয়ে হাসাহাসি ও ব্যঙ্গ করার সুযোগ নেই। মূলত এমন আচরণ ব্যক্তিত্বহীনতারই পরিচয় বহন করে। মুমিন কখনো তার অপর ভাইকে বিদ্রূপ করতে পারে না, দোষচর্চা করতে পারে না। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন—


বিজ্ঞাপন


‘হে ঈমানদাররা! কোনো মুমিন সম্প্রদায় যেন অপর কোনো মুমিন সম্প্রদায়কে উপহাস না করে; কেননা যাদের উপহাস করা হচ্ছে তারা উপহাসকারীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে এবং নারীরা যেন অন্য নারীদের উপহাস না করে; কেননা যাদের উপহাস করা হচ্ছে তারা উপহাসকারিণীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে। আর তোমরা একে অন্যের প্রতি দোষারোপ করো না এবং তোমরা একে অন্যকে মন্দ নামে ডেকো না; ঈমানের পর মন্দ নাম অতি নিকৃষ্ট। আর যারা তওবা করে না, তারাই জালিম।’ (সুরা হুজরাত: ১১)

উল্লিখিত আয়াত থেকে স্পষ্ট প্রতিয়মান হয় যে, এক এলাকার মানুষ অন্য এলাকাকে নিয়ে, এক গোষ্ঠী অন্য গোষ্ঠীকে নিয়ে, এক জমায়েত অন্য জমায়েতকে নিয়ে বিদ্রূপ করা সম্পূর্ণ নিষেধ। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, বর্তমানে ট্রল ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এমনও দেখা যায়, কারো অসুস্থতা কিংবা মৃত্যু নিয়েও ট্রল করা হচ্ছে। ভেবে দেখা হয় না যে, সুস্থতা-হায়াত-মৃত্যু সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ একমাত্র মহান আল্লাহর হাতে। তিনি চাইলে যাকে ট্রল করছেন, তার আগেই আপনাকে উঠিয়ে নিতে পারেন। আল্লাহ তাআলা বলেন—

‘কেউ জানে না, আগামীকাল সে কী অর্জন করবে, আর কেউ জানে না, কোন স্থানে সে মারা যাবে। নিশ্চয়ই আল্লাহই সর্বজ্ঞ ও সম্যক অবগত।’ (সুরা লোকমান: ৩৪)

একারণে কারো অসুস্থতা ও মৃত্যু নিয়ে ট্রল করা কোনোভাবেই উচিত নয়। এমনকি সে অবিশ্বাসী হলেও। একদিন মহানবী (স.)-এর পাশ দিয়ে একটি জানাজা যাচ্ছিল। তখন তিনি দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। এসময় তাঁকে বলা হলো, জানাজাটি একজন ইহুদির। তিনি বলেছিলেন, ‘সেকি মানুষ নয়?’ (বুখারি: ১৩১২)


বিজ্ঞাপন


দেখুন, প্রিয়নবী (স.) একজন অমুসলিমের মৃত্যুতেও কীভাবে সহমর্মিতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। আর আমরা নোংরা রাজনীতি ও হিংসার বশবর্তী হয়ে অপর মুসলিমকে নিয়ে  কুৎসা রটনা করেই যাচ্ছি।

জারির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) আমার কাছ থেকে তিনটি বিষয়ে ‘বাইআত’ নিয়েছেন।’ ১) সালাত কায়েম করব। ২) জাকাত আদায় করতে থাকব। ৩) প্রত্যেক মুসলিমের কল্যাণ কামনা করব।’ (বুখারি: ৫৫)

সুতরাং মুসলিম হিসেবে অন্য মুসলিমের কল্যাণ কামনা করা, একইসঙ্গে কোনো ব্যক্তি, দল, অঞ্চলকে নিয়ে ট্রল করা থেকে বিরত থাকা মুমিন মুসলমানের জন্য বাঞ্ছনীয়। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সেই তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর