মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫, ঢাকা

কাশ্মীর ইস্যু ঘিরে ভারতের আগ্রাসন: ভূ-রাজনৈতিক পটভূমি কী?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ মে ২০২৫, ০৯:০৬ এএম

শেয়ার করুন:

কাশ্মীর ইস্যু ঘিরে ভারতের আগ্রাসন: ভূ-রাজনৈতিক পটভূমি কী?
মিসাইল হামলার প্রতীকী ছবি

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনা এবং ভারতের মিসাইল হামলা নতুন করে দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। পাকিস্তান তাৎক্ষণিক ও কৌশলগত জবাব দিয়ে সামরিক সক্ষমতা যেমন দেখিয়েছে, তেমনি ভারতের এই পদক্ষেপ ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে—এর পেছনে আসল উদ্দেশ্য কী?

অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপ ও বিভ্রান্তির কৌশল
ভারতের ভেতরে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, কৃষক আন্দোলন, অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার মধ্যে সরকার এক ধরনের ‘ডাইভারশন ট্যাকটিকস’-এর আশ্রয় নিয়েছে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। সীমান্তে উত্তেজনা তৈরি করে দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যর্থতা আড়াল করতেই এই আগ্রাসী পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।


বিজ্ঞাপন


কাশ্মীর প্রশ্নে আক্রমণাত্মক কৌশল
ভারত দীর্ঘদিন ধরে কাশ্মীর নিয়ে আক্রমণাত্মক অবস্থান নিচ্ছে। ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিলের পর থেকেই অঞ্চলটিতে ভারতীয় সেনা তৎপরতা বেড়েছে। এবারের হামলাও সেই নীতির ধারাবাহিকতা, যার মাধ্যমে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে কোনো ধরনের প্রতিরোধ গড়ে উঠার আগেই তা দমন করার বার্তা দিতে চায়।

আন্তর্জাতিক চাপ মোকাবেলায় ‘রাষ্ট্রীয় শক্তি’ প্রদর্শন
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারতের মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। মুসলিমদের ওপর সহিংসতা, সংখ্যালঘুদের নিপীড়ন ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। ঠিক এমন সময় শক্তির প্রদর্শনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ ভিন্ন খাতে ঘোরানো এক কৌশল হতে পারে এই হামলা।

আঞ্চলিক আধিপত্য বিস্তারের প্রচেষ্টা
দক্ষিণ এশিয়ায় চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (CPEC) ভারতের জন্য দীর্ঘদিন ধরে এক প্রতিযোগিতামূলক উদ্বেগের বিষয়। কাশ্মীরের মধ্য দিয়ে যাওয়া এই করিডর ভারতের জন্য কৌশলগতভাবে সংবেদনশীল। সামরিক দমননীতি ও সীমান্ত উত্তেজনার মাধ্যমে ভারত হয়তো নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে চাইছে।

নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক মেরুকরণ
ভারতে সাধারণ নির্বাচন ঘনিয়ে এলে জাতীয়তাবাদী আবেগকে উস্কে দেওয়ার প্রবণতা নতুন নয়। অতীতে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ ও বালাকোট হামলার মতো ঘটনার সময়েও একই ধরনের প্রচার দেখা গেছে। এবারের অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে চালানো হচ্ছে, যার মধ্য দিয়ে ভোটারদের একধরনের সামরিক গৌরবের বার্তা দেওয়া হতে পারে।


বিজ্ঞাপন


ধারণা করা হচ্ছে— ভারতের মিসাইল হামলা নিছক প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ নয়, বরং এর পেছনে রয়েছে বহুস্তরীয় রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক হিসাব-নিকাশ। পাকিস্তানের কৌশলগত সংযম এবং প্রতিক্রিয়াই এখন এই উত্তেজনার পরবর্তী ধাপ নির্ধারণ করবে। তবে আন্তর্জাতিক মহলের উচিত এ অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখতে শক্তিশালী হস্তক্ষেপ নিশ্চিত করা, কারণ দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের এমন সংঘাত গোটা বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। 

এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর