মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা বেশিরভাগ পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ ন্যূনতম শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া নির্দিষ্ট কিছু দেশের ওপর উচ্চতর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১০ শতাংশ শুল্কারোপকৃত দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান ও ইরানের মতো দেশও।
বুধবার (২ এপ্রিল) ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার দিনগত রাত ২টা) হোয়াইট হাউসে শুল্ক আরোপের এই ঘোষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশ মার্কিন পণ্যের ওপর ৭৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে। এর প্রতিক্রিয়ায় এখন থেকে বাংলাদেশি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে ৩৭ শতাংশ ‘হ্রাসকৃত সম্পূরক শুল্ক’ আরোপ করা হবে।
বিজ্ঞাপন
আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পণ্যের ওপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প, যা বাংলাদেশের তুলনায় কম। পাকিস্তানের পণ্যে ২৯ শতাংশ এবং আমাদের আরেক পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের পণ্যে ৪৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। চীনা পণ্যে ৩৪ শতাংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বলা হয়েছে হোয়াইট হাউজের তালিকায়। এভাবে, নতুন শুল্ক তালিকায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কর বসানো হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের ভাষ্য, মার্কিন রপ্তানি পণ্যের ক্ষেত্রে যেসব দেশ উচ্চ শুল্কের বাধা তুলে রেখেছে, তাদের তথাকথিত সেই ‘অন্যায্য বাণিজ্য অনুশীলন’ মোকাবিলা করার উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন পদক্ষেপ।
নতুন নীতির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র সমস্ত আমদানির ওপর প্রাথমিকভাবে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে, যাকে বলা হচ্ছে বেইজ লাইন ট্যারিফ। আর যেসব দেশ হোয়াইট হাউসের ভাষায় ‘কারসাজি’ করে ডলারের মান নিয়ন্ত্রণে রেখেছে এবং সুরক্ষামূলক শুল্ক ও অশুল্ক বাধা আরোপ করে রেখেছে, তাদের ক্ষেত্রে উচ্চ হারের সম্পূরক শুল্ক প্রযোজ্য হবে।
বিজ্ঞাপন
শুল্ক আরোপের এই দিনটিকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দিবস’ অভিহিত করে ট্রাম্প বলেন, ‘কয়েক দশক ধরে আমাদের দেশকে দূরের ও কাছের বন্ধু ও শত্রু নির্বিশেষে বিভিন্ন দেশ লুট করেছে, লুণ্ঠন করেছে, ধর্ষণ করেছে এবং ধ্বংস করেছে। বিদেশি মেথররা আমাদের এক সময়ের সুন্দর আমেরিকান স্বপ্নকে ছিন্নভিন্ন করে ফেলেছে।’
ট্রাম্প বলেন, আজকের দিনকে আমেরিকান শিল্পের ‘পুনর্জন্ম’ এবং আমেরিকাকে ‘আবার সম্পদশালী’ করার দিন হিসেবে স্মরণ করা হবে। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কখনো ‘বন্ধু শত্রুর চেয়ে খারাপ হয়’।
তবে অর্থনীতিবিদরা ট্রাম্পের এই নীতির সমালোচনা করে বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার পাল্টায় অন্য দেশগুলোও নতুন করে ব্যবস্থা নেবে, তাতে নতুন করে একটি বাণিজ্য যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করবে। বিশ্ব অর্থনীতির নাজুক দশার মধ্যে নতুন চাপ তৈরি করবে ট্রাম্পের শুল্ক। শুল্কারোপের পূর্ণাঙ্গ তালিকা দেখতে ক্লিক করুন।