শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪, ঢাকা

ভিন্ন পরিবেশেও রোজা পালন, ভিন্ন সংস্কৃতির মেলবন্ধন

আবুল কাশেম
প্রকাশিত: ১৪ মার্চ ২০২৪, ০১:০৯ পিএম

শেয়ার করুন:

ভিন্ন পরিবেশেও রোজা পালন, ভিন্ন সংস্কৃতির মেলবন্ধন রমজান
ছবি সংগৃহীত। কোলাজ- ঢাকা মেইল

পবিত্র মাস রমজান। মুসলিমদের কাছে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য বছরের সবচেয়ে সেরা সময় এটি। প্রতিটি দেশেই রমজান মাস নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে রয়েছে আলাদা সংস্কৃতি। তবে সবার উদ্দেশ্য এক তা হলো- আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও পবিত্র মাসের তাৎপর্য মেনে চলা। বিশ্বের ১৬০ কোটি মুসলিম ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে রমজান মাস উপভোগ করছেন। বিশ্বের অন্যতম উন্নত দেশ যুক্তরাষ্ট্রেও রমজানে বিশেষ উৎসবের আমেজ বিরাজ করে মুসলিম কমিউনিটির মধ্যে। ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির ও ভিন্ন ভিন্ন দেশের সব মুসলিমরা একত্র হোন এক উদ্দেশ্যে এবং একই উৎসবে।

যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম কমিউনিটি বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে রমজানের একটি অনন্য সংস্কৃতির উদ্ভব হচ্ছে। মসজিদে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মুসলিমরা রোজা ভাঙ্গার জন্য একত্রিত হন। এসময় একটি চমৎকার পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির মিলনমেলায় পরিণত হয়।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: সবার জন্য দরজা খোলা, মাসজুড়ে ত্যাগের উদযাপন

রমজানজুড়ে বিভিন্ন দেশের মুসলিমরা তাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার রান্না করেন। কমিউনিটির অন্যান্যদের সঙ্গে সেসব খাবার ভাগাভাগি করেন। প্রায় প্রতিটি মহাদেশের খাবারের স্বাদ নিতে পারেন মুসলিমরা।

রমজানে মুসলিম পরিবারগুলো বাচ্চাদের বিশেষ স্মৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে চায়। তারা রমজানের বিভিন্ন খাবারের আয়োজনসহ ধর্মীয় নানা বিষয় শিক্ষা দেন। যাতে শিশু তাদের ধর্মীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারে এবং নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে ভালো ধারণা পেতে পারে।

মুসলিম প্রধান দেশগুলোর মতো যুক্তরাষ্ট্রে রমজানে হৈ-হুল্লোড় হয় না। সেখানকার রমজান অনেকটাই শান্ত। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা এসব মুসলিমরা তাদের দেশে রমজানের বিশাল আয়োজনের কথা স্মরণ করেন। শান্তভাবে পালিত হয় রমজান। মুসলিমরা মসজিদে একত্রিত হন এবং ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে রমজান উদযাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রে রমজান তেমন পাবলিক না হলেও সবার মধ্যে মনোযোগ থাকে শতভাগ।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: আনন্দ ও শোকের মাস, মুসলিম বিশ্বের চেয়ে ভিন্ন রীতি

আমেরিকান মুসলমানরা অন্য সকল আমেরিকানদের মতোই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে। রমজান মাসে অনেকভাবে এই বৈচিত্র্যের প্রকাশ ঘটে যার মধ্যে শেষ রাতে সেহেরির খাবার এবং সূর্যাস্তে ইফতারের খাবারও রয়েছে।

ধারণা করা হয় যে, যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের সংখ্যা প্রায় ৩৫ লাখ। ২০১৭ সালে পিউ রিসার্চ সেন্টার জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের মোট মুসলমানের মধ্যে ২০% কৃষ্ণাঙ্গ মুসলমান। যাদের প্রায় ৭০% আমেরিকাতে জন্মগ্রহণ করেছে এবং ৪৯% ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে।

আরও পড়ুন: কারাগারের জানালায় বেহেশতি আলো, সুখে-দুখে একসঙ্গে বাস

রমজানে কাজের ফাকে ও ছুটির দিনে মুসলিমরা তাদের আত্মীয় ও পরিচিতজনদের সঙ্গে জড়ো হন। অনেক মুসলিম কমিনিউটি ইফতারের আয়োজন করে। অনেকে প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিগতভাবে বিনামূল্যে খাবার বিতরণসহ বিভিন্ন দাতব্য কাজে যুক্ত হন।

আমেরিকাতে ইসলামের প্রসার দ্রুত হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে যে, আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে আমেরিকার মুসলমান জনসংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে বর্তমানের ৩৫ লাখ থেকে বেড়ে ৮১ লাখ হবে। এই সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে মুসলমানরা যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় জনগোষ্ঠীতে পরিণত হবে।

আরও পড়ুন: সৌদিতে চলে ইবাদত ও গোপন দানের প্রতিযোগিতা

ইনস্টিটিউট ফর সোশ্যাল পলিসি অ্যান্ড আন্ডারস্ট্যান্ডিং জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে মসজিদের সংখ্যাও বাড়ছে। দেশজুড়ে এখন প্রায় ৩০০০ মসজিদ আছে। যেসব অঙ্গরাজ্যে মসজিদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, সেগুলো হলো: নিউইয়র্ক- ৩৪৩, ক্যালিফোর্নিয়া- ৩০৪, টেক্সাস- ২২৪, ফ্লোরিডা- ১৫৭,
নিউজার্সি- ১৪১।

তথ্যসূত্র: এবিসি, বিবিসি, উইকিপিডিয়া, ইন্টারনেট

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর