সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

ভারতগামী রোগী নেমেছে অর্ধেকে, দেশের স্বাস্থ্যখাত কতটা প্রস্তুত?

মাহফুজ উল্লাহ হিমু
প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:০৩ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

উন্নত প্রযুক্তি ও বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশি রোগীদের অন্যতম গন্তব্যস্থল ভারত। উন্নতমানের সেবা, তুলনামূলক কম খরচ এবং চিকিৎসাপ্রাপ্তির সহজলভ্যতার কারণে প্রতি বছর লাখ লাখ রোগী প্রতিবেশী দেশটিতে পাড়ি জমায়। বিশেষ করে ক্যানসার, হৃদরোগ ও কিডনিসহ জটিল রোগের চিকিৎসায় ভারতগামী রোগীর সংখ্যা বেশি। তবে গত ৫ আগস্টের পর থেকে ভিসা জটিলতা ও কড়াকড়ির কারণে ভারতে যাওয়ার রোগীর সংখ্যা ব্যাপক হারে কমে গেছে।

বিভিন্ন সূত্রের তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে তিন লাখ চার হাজার ৬৭ জন বাংলাদেশি রোগী ভারতে চিকিৎসা নিতে মেডিকেল ভিসা পেয়েছিলেন। কিন্তু ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই সংখ্যা ৪৭ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে চার লাখ ৪৯ হাজার ৫৭০-এ দাঁড়ায়। তবে এ চিত্রের আমূল পরিবর্তন হয় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর। ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে মেডিকেলসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসাপ্রাপ্তিতে জটিলতা দেখা দেয়। এতে ভারতে রোগীর চিকিৎসা যাত্রায় বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। ভারতে বাংলাদেশি রোগী নেমেছে অর্ধেকে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত তার সক্ষমতা প্রমাণ ও রোগীদের বিদেশযাত্রা বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন অংশীজনেরা। যদিও রোগীদের জন্য বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত কতটা প্রস্তুত তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন।


বিজ্ঞাপন


ভারতে চিকিৎসা যাত্রায় কতটা প্রভাব পড়েছে?

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের তথ্যমতে, বাংলাদেশি ভ্রমণকারীদের প্রধান গন্তব্য হলো ভারত। যা মোট বিদেশগামীর প্রায় ৪১ শতাংশ। এর মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগই চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। এসব যাত্রীর বড় একটি অংশ যান সড়কপথে ও ট্রেনে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যায় যশোরের বেনাপোল বন্দর হয়ে। গত বছর এই পথে নয় লাখ ৫৬ হাজার বাংলাদেশি ভারতে গেছেন। এর মধ্যে চিকিৎসার জন্যই গেছেন সাড়ে সাত লাখের বেশি।

Health2


বিজ্ঞাপন


তবে সাম্প্রতিক সময়ে কলকাতা, চেন্নাই এবং বেঙ্গালুরুর মতো প্রধান শহরগুলোতে বাংলাদেশি চিকিৎসা পর্যটকদের সংখ্যা কমে গিয়েছে৷ ভারতের প্রধান হাসপাতালগুলোতে বাংলাদেশি রোগীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমার কথা জানিয়েছে তথ্য-বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান কেয়ারএজ রেটিং৷ কিছু প্রতিবেদন অনুসারে, এ সংখ্যা ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে৷

দেশের স্বাস্থ্য খাতের সক্ষমতা কতটুকু?

ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি রোগীরা মূলত ক্যানসার, হৃদরোগ, কিডনি রোগের মতো জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য যান। একটি দেশ থেকে রোগী বাইরে যাওয়া দেশটির স্বাস্থ্যখাতে সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। আর এই সক্ষমতা নির্ভর করে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী সংখ্যা, আধুনিক প্রযুক্তি, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও আর্থিক খরচের ওপর।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে নিবন্ধিত চিকিৎসকের সংখ্যা প্রায় এক লাখ ৩৪ হাজার ৫৬৮ জন। তবে, এদের মধ্যে প্রায় ৩৬ হাজার  চিকিৎসক নিবন্ধন নবায়ন করননি। অর্থাৎ সক্রিয়ভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী চিকিৎসকের সংখ্যা আনুমানিক ৯৮ হাজার ৫৬৮ জন।  তবে এর মধ্যে কতজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন তা নির্ণয় করা অত্যন্ত কঠিন।

বিভিন্ন সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১০০টির বেশি কার্ডিয়াক সেন্টার রয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান হলো ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ও ইউনাইটেড হাসপাতাল। হৃদরোগ চিকিৎসায় বছরে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার এনজিওপ্লাস্টি এবং বাইপাস সার্জারি করা হয়। তবে তা রাজধানীয় ঢাকাকেন্দ্রিক। এদিকে প্রতি ১০ লাখ মানুষের জন্য ৫-৭ জন কার্ডিয়াক সার্জন রয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসারসহ বিভিন্ন সংস্থার তথ্যমতে, দেশে প্রতি বছর প্রায় দুই লাখ মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়। তবে বিশালসংখ্যক রোগীর বিপরীতে দেশে শনাক্তকরণ, চিকিৎসার সুযোগ রয়েছে নামেমাত্র। এতসংখ্যক রোগীর জন্য জন্য দেশের হাসপাতালগুলোতে শয্যার সংখ্যা দুই হাজারের কম। আর সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ক্যানসারের জন্য বিশেষায়িত চিকিৎসক আছেন ৩০০ জনের মতো।

আরও পড়ুন

কেন বিদেশমুখী বাংলাদেশি রোগীরা?

বাংলাদেশি রোগী কমেছে ৭০ শতাংশ, কলকাতার হাসপাতাল ব্যবসায় ধাক্কা

একই অবস্থা কিডনি রোগ চিকিৎসাতেও। বাংলাদেশে প্রায় দুই কোটি মানুষ কোনো না কোনো কিডনি সমস্যায় ভুগছেন এবং প্রতি বছর ৩৫ হাজার রোগী চূড়ান্ত পর্যায়ের কিডনি রোগে আক্রান্ত হন। বর্তমানে দেশে ১৫০টির বেশি ডায়ালাইসিস সেন্টারে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১৫ হাজার রোগী সেবা নিলেও সেবাগুলোর অধিকাংশই ঢাকাকেন্দ্রিক। ডায়ালাইসিসের মাসিক গড় ব্যয় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। বছরে প্রায় ৩০০-৪০০টি কিডনি প্রতিস্থাপন হয়, যেখানে খরচ ৪-৫ লাখ টাকা। আর দেশে ৩৫০ জন নেফ্রোলজিস্ট (কিডনি বিশেষজ্ঞ) থাকলেও, গ্রামীণ এলাকায় সেবা সীমিত। এছাড়া প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে ডোনারের অভাব, আইনগত সীমাবদ্ধতা এবং সেবা কেন্দ্রের স্বল্পতা এই খাতে প্রধান চ্যালেঞ্জ।

বর্তমান বাস্তবতায় ১০ ভাগ ক্যানসার রোগীর আধুনিক চিকিৎসা সম্ভব

বিদেশে চিকিৎসা, ভারতীয় ভিসা জটিলতা ও ক্যানসার চিকিৎসা নিয়ে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেন গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক ক্যানসার হাসপাতালের প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যাপক ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর এক লাখ ৬৭ হাজার মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হন। এই বিপুলসংখ্যক রোগীর ডায়াগনোসিস বা চিকিৎসা করার সক্ষমতা আমাদের নেই। ফলে এর তিন ভাগের এক ভাগও ডায়াগনোসিস হয় না। এর জন্য মানুষের সচেতনতার অভাব ও স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় নিতে না পারা দায়ী।

Health4

আস্থার সংকটের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, গত ২০ থেকে ৩০ বছরে এই খাতে যতটা আধুনিকায়ন হয়েছে এতে দেশে শতকরা ১০ ভাগ মানুষকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার সুযোগ কম। এখানে রোগীদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। বেসরকারি সেক্টরে বেশ কিছু আধুনিক হাসপাতাল হয়েছে। সেখানে উচ্চবিত্ত মানুষদের মধ্যে যারা বিদেশ চিকিৎসা নিতে যেত তাদের একটা অংশ চিকিৎসা নিচ্ছে। আরেকটা বড় অংশ দেশের বাইরে যায়। কারণ আমরা আস্থার পরিবশে তৈরি করতে পারিনি। এর দায় শুধু চিকিৎসকদের নয়, সামগ্রিকভাবে সিস্টেমের।

এই চিকিৎসক বলেন, আমাদের পর্যাপ্তসংখ্যক চিকিৎসক নেই। তবে আগের থেকে বেড়েছে এবং তা চলমান আছে। আগে শুধু ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ছিল। এখন সাব-স্পেশালিটিতে বিশেষজ্ঞ বাড়ছে। বর্তমানে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ জন বিশেষজ্ঞ আছে। তবে এর শতকরা ৯০ শতাংশ রাজধানী ঢাকাকেন্দ্রিক। সরকারের পক্ষ থেকে আট বিভাগে আটটি বিশেষায়িত হাসপাতাল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে সেখানে গত সাত বছরেও ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি।

ভারতের ভিসা বন্ধে বড় সুযোগ বাংলাদেশের!

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ ঢাকা মেইলকে বলেন, এটা আমাদের জন্য একটা ভালো সুযোগ। আমাদের ভালো পরিকল্পনা প্রয়োজন। যেন রোগীদের চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে না যাওয়া লাগে। সবচেয়ে বড় বিষয় আমাদের আস্থার সংকট রয়েছে। তা দূর করতে হবে। এজন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের দায়িত্ব রয়েছে। চিকিৎসা ব্যবস্থা শহরকেন্দ্রিক। এটাকে প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দিতে হবে। ঘাটতি জায়গাগুলো ওভার নাইট সমাধান সম্ভব না। সঠিক পরিকল্পনা ও পদক্ষেপের মাধ্যমে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে।

আরও পড়ুন

‘না’ বলেছিল সিঙ্গাপুরের চিকিৎসক, দেশেই অপারেশনে জীবন রক্ষা রায়হানের

চিকিৎসার পরিসর না বাড়ায় হৃদরোগে আক্রান্তদের চাপ বাড়ছে রাজধানীতে

অধ্যাপক হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন ঢাকা মেইলকে বলেন, ভারতের ভিসা জটিলতা স্বাস্থ্যখাতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারে, যদি সরকারসহ সংশ্লিষ্টরা সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসে। যেহেতু রোগীরা ভারতে যেতে পারছে না, এ অবস্থায় তাদের চিকিৎসা দিতে আমাদের ঘাটতির জায়গাগুলো শনাক্ত এবং সমস্যা সমাধান করতে হবে। কিন্তু আমরা তা না করতে পারলে এসব রোগী অন্য জায়গায় চলে যাবে। ফলে ভারতের ভিসা বন্ধের সুযোগটা অন্য কোনো দেশ নিয়ে যাবে। ইতোমধ্যে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ নানা দেশ আমাদের রোগীদের টার্গেট করছে। তারা হেলথ ট্যুরিজমের নানা সুযোগ তৈরি করছে। তারা এদেশে এক শ্রেণির দালাল নিয়োগ করেছে। সেখানে চিকিৎসকসহ নানা পেশার মানুষ রয়েছেন।

Health3

স্বাস্থ্য বিমাসহ স্বল্প মেয়াদি কিছু পদক্ষেপের মাধ্যমেও সরকার এসব রোগীকে দেশেই রাখতে পারবে। একইসঙ্গে বড় বড় শিল্পগ্রুপগুলোকে দেশের স্বাস্থ্যখাতে বিনিয়েগের আহ্বান জানান তিনি।

এ বিষয়ে আইসিডিডিআরবির গবেষক ও জাতীয় স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য ডা. আহমদ এহসানুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে আমরা যখন বড় বিপদের সম্মুখীন হই তখন তা বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করে দেয়। করোনার সময় আমরা যখন বিদেশে যেতে পারছি না তখন জাতীয়ভাবে একটি ঐকমত্যের তৈরি হলো। তখন সবাই তাদের কাজ অনেক গুরুত্বের সাথে করেছে। ডাক্তার, নার্স, সাংবাদিক সবাই মিলে স্বাস্থ্যের বিষয়ে তখন সর্বোচ্চ ফোকাস করা হয়েছে। এই ন্যারেটিভ তৈরির বিষয়টুকু ধারণ করতে পারলে তা কাজে লাগাতে পারি। বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের জন্য একটা বড় সুযোগ।

আরও পড়ুন

সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে অন্তরায় আস্থা ও নিরাপত্তা সংকট!

জলাতঙ্ক: যে রোগে মৃত্যু অনিবার্য

আহমদ এহসানুর রহমান বলেন, যেসব দেশে মেডিকেল ট্যুরিজম রয়েছে, সেসব দেশে মোটা দাগে একটি বিষয় মিল ছিল। আর তা হচ্ছে, ওয়ান স্টপ সার্ভিস, অর্থাৎ আপানার চোখের সমস্যা কিন্তু ডায়াবেটিস কন্ট্রোল হচ্ছে না। বাংলাদেশে ডাক্তার আপানাকে বলে দেবে ডায়াবেটিসের ডাক্তারের কাছে যান, নিয়ন্ত্রণ করে আসেন। কিন্তু ওইসব দেশে আপনার ডায়াবেটিস কন্ট্রোল হচ্ছে না, ওই হাসপাতাল আপনাকে হাত ধরে ডায়াবেটিস চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবে। কন্ট্রোলের পর আবার পুনরায় চোখের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে। এই জায়গাটি আমরা খুব দ্রুত শুরু করতে পারলে বর্তমান সুযোগটা কাজে লাগাতে পারব। এজন্য সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা আজ যাদি ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে পারি, তাহলে আগামী বছর ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা দেশের বাইরে যাওয়া থেকে বাঁচাতে পারব।

এমএইচ/জেবি 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এই ক্যাটাগরির আরও খবর