গরু কিংবা মানুষ নয়, ঘানি টানছে মোটরসাইকেল। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। মানুষ ছাড়াই অনবরত ঘোরাচ্ছে ঘানি। এতে সরিষা থেকে তেল তৈরিতে কমেছে ঝক্কির পাশাপাশি ব্যয়ও। বেড়েছে উৎপাদন আর মুনাফা।
মোটরসাইকেল দিয়ে এমন ঘানি টানার দৃশ্য চোখে পড়বে দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার ১ নম্বর নাফানগর ইউনিয়নের ছোট সুলতানপুর গ্রামের বিষ্ণুপদ রায়ের বাড়িতে। বংশপরম্পরায় ঘানি থেকে সরিষার তেল উৎপাদন ও বিক্রি করা তাদের ব্যবসা। সেই ব্যবসায় নতুনত্ব এনেছেন বিষ্ণু পদ রায়। ব্যবসার আরও প্রসার ঘটিয়ে আর্থিক লাভের মুখ দেখতে চান তিনি।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টিনের চাল দেওয়া একটি খোলা ঘরের মাঝখানে একটি মোটা কাঠের ডোম স্থাপন করা হয়েছে। ওই ডোমের ওপর একটি গোল ডালা বসানো। এর ওপর আছে ঢেঁকি আকৃতির কাঠের ‘জাঁতা’ মোটরসাইকেলের সঙ্গে জাঁতাটি বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তেল উৎপাদনের জন্য কাঠের ডালাটিতে দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় পরিমাণ শর্ষে। এরপর চাবি দিয়ে চালু করা হয় মোটরসাইকেলটি। সেটি ঘুরছে আর জাঁতার চাপে ডালায় থাকা শর্ষেগুলো ভেঙে নিচ দিয়ে তেল হয়ে বের হচ্ছে। এসব তেল ছাঁকনির সাহায্যে পরিশোধন করে একটি ডেকচিতে রাখা হয়। পরে বোতলে ভরে তা ভোক্তার কাছে বিক্রি করা হয়।
ঘানি মালিক বিষ্ণু পদ রায় ঢাকা মেইলকে বলেন, আমি ৩০ বছর থেকে ঘানিতে তেল উৎপাদন করছি। এর আগে আমার বাবা তার আগে আমার দাদাও ঘানিতে তেল উৎপাদন করতেন। আগে আমি গরু দিয়ে ঘানিতে তেল উৎপাদন করতাম। বর্তমান আমি মোটরসাইকেল দিয়ে ঘানিতে তেল উৎপাদন করছি। গরু দিয়ে করলে সময় বেশি লাগে। এ ছাড়া একজন মানুষ সব সময় লেগে থাকতে হতো। এ কারণে মোটরসাইকেল দিয়ে ঘানিতে তেল উৎপাদন করছি।
বিজ্ঞাপন
মোটরসাইকেল দিয়ে ঘানি টানানোর চিন্তা কীভাবে মাথায় এল জানতে চাইলে বিষ্ণু পদ রায় ঢাকা মেইলকে বলেন, আমি ফেসবুকে দেখে এ ধরনের তেলের ঘানি তৈরি করতে উৎসাহী হই। আমার এই মোটরসাইকেলে মোটার লাগিয়ে তৈরি করতে ৪৫ হাজার টাকা খবর হয়েছে। বর্তমানে এই গাড়ি দিয়ে আমি বাজারেও যেতে পারি।
প্রতিনিধি/এসএস