সারাবছর সংরক্ষণ করে খাওয়া গেলেও তৈরি হয় শুধু শীতকালেই। কনকনে ঠান্ডায় গ্রাম ও শহুরের মা-বৌয়েরা এখন ব্যাপক ব্যস্ত সময় পার করছেন সুস্বাদু, গুণে-মানে সেরা কুমড়া বড়ি তৈরিতে। পারিবারিকভাবে চাহিদা থাকায় চলছে ঘরে ঘরে কুমড়া বড়ি তৈরির উৎসব। দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষণ করে খাওয়া যায় আর তরকারিতে স্বাদ বাড়ায় বলেই এর চাহিদা ব্যাপক। এক্ষেত্রে ঝিনাইদহ জেলা আরও একটু এগিয়ে। কারণ এখানে বাণিজ্যিকভাবে কারখানায় তৈরি হচ্ছে এ বড়ি।
![]()
বিজ্ঞাপন
ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ এলাকার শিক্ষিত যুবক ওয়াহিদ হাসান। ঢাকা কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে লেখাপড়া শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে ব্যবসায়ের পাশাপাশি করেছেন কুমড়া বড়ি তৈরির কারখানা।

উদ্যোক্তা ওয়াহিদ হাসান প্রথমেই বলেন, স্বাস্থ্যসম্মত ও সুস্বাদু এ বড়ি পৌঁছে যাচ্ছে দেশের প্রায় সব বিভাগে। এর চাহিদা ব্যাপক। আমরা অনলাইনেই বেশি বিক্রি করে থাকি। দুঃস্থ প্রায় ৩০ জন নারী-পুরুষেরও কর্মসংস্থান হয়েছে এ অজপাড়াগাঁয়ে।
![]()
বিজ্ঞাপন
![]()
এখানে কর্মরত ইয়াসমিন বেগম জানান, বড়ি তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয় কালো মাসকালাই ডাল ও চালকুমড়া। ডাল ও কুমড়ার মিশ্রণে মেশিনে পেস্ট তৈরি করে প্রতিদিন সকালে নেটের ওপর ছোট ছোট করে বড়ি তৈরি করা হচ্ছে এ বড়ি।

আরেক কর্মচারী মাজেদা বেগম জানান, সকাল থেকে সর্বোচ্চ ৩ সাড়ে ৩ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। তার জন্য ১০০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে পেয়ে থাকেন তারা। সংসারে এ বাড়তি আয় সত্যিই খুবই উপকারে আসে তাদের। তাছাড়া নিজেরা কাজ করেন এও তো বিরাট এক আনন্দের ব্যাপার।

মালিক ওয়াহিদ হাসান আরও বলেন জানান, প্রায় ৯ বছর হলো তিনি এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। স্থানীয় বাজারেও এর চাহিদা ভালো। আগামী ৩ মাস চলবে বড়ি তৈরির কাজ। প্রতিদিন ১০ মন বড়ি তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। যা থেকে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা লাভ হয়। প্রতি কেজি কুমড়া বড়ি বিক্রি হয় ৩০০ টাকা কেজি দরে। বড়ি তৈরি করে রোদে শুকিয়ে প্যাকেট করে ঢাকা, খুলনা, চিটাগং, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।
![]()
কুমড়ার বড়ির স্বাস্থ্যগত গুণের কথা জানিয়ে শৈলকূপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান বলেন, পণ্য ভালো হওয়ায় গাড়াগঞ্জের বড়ির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে বড়ি তৈরির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
![]()
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা নূর এ নবী জানান, পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ কুমড়া বড়ি। এতে রয়েছে প্রচুর ক্যালরি, আমিষ, শর্করা যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সর্বনিম্ন ৪ শতাংশ হারে কৃষি লোনের ব্যবস্থা আছে। এক্ষেত্রে কোনো উদ্যোক্তা যদি নিয়ম মেনে কৃষি লোন নিয়ে তাদের ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় সেক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ তাদের পাশে থাকবে।
![]()
প্রতিনিধি/এসএস

