সবুজ পাতার আড়ালে প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে হলুদ রঙের অসংখ্য কমলা। পাতার ফাঁকে উঁকি দেওয়া কমলার এমন দৃশ্য চোখ জুড়ায় সবার। প্রথম দেখাতে যে কারও মনে হতে পারে এটা বিদেশের কোনো ফলের বাগান। কিন্তু না, বাগানটি করেছেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নুরজাহানপুর এলাকার তরুণ উদ্যোক্তা জাহাঙ্গীর আলম।
এক বিঘা জমিতে দার্জিলিং, চায়না থ্রি জাতের কমলা চাষ করেছেন তিনি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সমতল মাটিতে এ বছর কমলার বাম্পার ফলন এসেছে। বাজারে চায়না কমলার চাহিদা ভালো থাকায় লাভবান হবেন বলে প্রত্যাশা তার।
বিজ্ঞাপন
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘোড়াঘাট উপজেলা নুরজাহানপুর এলাকায় জাহাঙ্গীর আলম প্রায় এক বিঘা জমিজুড়ে কমলার চারা রোপণ করেন। প্রায় তিন বছর আগে দেশের বিভিন্ন স্থান ও দেশের বাইরে থেকে পরীক্ষামূলকভাবে সাত প্রকার চারা এনে রোপণ করেন। সাত প্রকার জাতের মধ্যে দার্জিলিং ও চায়না থ্রি ফলন ভালো হয়েছে বলে জানা যায়। এরপর নিজেই চারা উৎপাদনের মাধ্যমে বাড়িয়েছেন বাগানের পরিসর। রোপণ করা প্রতিটি গাছে ২০-২৫ কেজি কমলা ধরেছে যার বাজার মূল্য প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ফলের বাগানে ঘুরতে আসা আব্দুস সালাম ঢাকা মেইলকে বলেন, পাহাড়ি অঞ্চলের ফল সমতল ভূমিতে হচ্ছে এটা অনেক আনন্দের। আমরা ফল খেয়ে দেখলাম সুমিষ্ট তাই চারা নিতে এসেছি। এই গুলো বসতবাড়ির পতিত জমি এবং বাড়ির ছাদে রোপণ করব।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় তহিদুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, আমার প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর আলম। তার সমতল জমিতে কমলার চাষ করছে। তার বাগানের ফলগুলো দেখতে যেমন ভালো, খেতেও মিষ্টি। আমার বাড়ির পাশে কিছু খালি জমি পড়ে আছে, সেখানে আগামীতে কমলার চাষ করার ইচ্ছা আছে।
তরুণ উদ্যোক্তা জাহাঙ্গীর আলম ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাদের দেশের পতিত অনেক জায়গা রয়েছে। এই সব পতিত জমিতে চারা রোপণ করে সঠিক পরিচর্যা করতে পারলে দেশের বাইরে থেকে আনা কমলার যে গুণগত মান তার থেকে আমাদের দেশের কমলার গুণগত মান সেরা হবে ও লাভবান হতে পারবে এবং বেকারত্ব কমে আসবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রফিকুজ্জামান ঢাকা মেইলকে বলেন, উপজেলায় সাইট্রাস জাতীয় ফসল চাষ দিন দিন বাড়ছে। কারণ হিসেবে বলা যায় এই ফলের রোগবালাই কম। আমরা সব সময় কৃষকদের রোগবালাই সম্পর্কে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। অন্যান্য ফসলের তুলনায় সাইট্রাস ফসলে অনেক লাভ। এই জন্য কৃষকরা এই ফল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
প্রতিনিধি/এসএস