শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

‘বেগম রোকেয়ার দেখানো স্বপ্ন বর্তমান সমাজে প্রতিফলিত হচ্ছে’

জেলা প্রতিনিধি, রংপুর
প্রকাশিত: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০২ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img
রোকেয়া দিবস উপলক্ষে বক্তব্য দিচ্ছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম বলেছেন, বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার দেখানো স্বপ্ন বর্তমান সমাজে প্রতিফলিত হচ্ছে। বেগম রোকেয়া ছিলেন বাংলার নারী সমাজের উন্নয়ন ও শিক্ষা আন্দোলনের অগ্রদূত। 

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দে বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র অডিটোরিয়ামে বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


মহাপরিচালক আরও বলেন, এক সময় নারীদের ঘরবন্দি জীবন তাদের বাইরের জগতের জ্ঞানার্জন থেকে বঞ্চিত করেছিল। নারীরা নিজেদের সচেতন করার সুযোগও পায়নি। বেগম রোকেয়ার সমাজ সংস্কারমূলক কার্যক্রম নারীদের সচেতন করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তিনি নারীশিক্ষা, সামাজিক অধিকার এবং নারীর ক্ষমতায়নের পক্ষে শক্তিশালী কণ্ঠস্বর ছিলেন।

বেগম রোকেয়ার লেখনী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নারীদের সচেতন করতে ও সমাজে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বেগম রোকেয়ার রচনাসমূহ কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে। বেগম রোকেয়ার দেখানো পথ অনুসরণ করে বর্তমান সমাজের অনেক নারীই সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখতে সক্ষম হচ্ছেন। তিনি নারীদের বেগম রোকেয়ার আর্দশে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানান।

নারী জাগরণের অগ্রদূত মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যু দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় সকালে বেগম রোকেয়ার জন্মভিটা পায়রাবন্দে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও পায়রা উড়িয়ে দিয়ে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করা হয়। এসময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম ফয়সাল, রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ চন্দ্র বর্মণসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে বেগম রোকেয়ার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। রোকেয়া দিবস উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও পায়রাবন্দ সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে আলোচনা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, নাটক-নাটিকা, শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ তিন দিনব্যাপী রোকেয়া মেলার আয়োজন করা হয়েছে। 

অন্যদিকে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে রোকেয়া দিবস পালিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক মাঠে আয়োজিত রোকেয়া দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান, টিএমএসএস’র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত নারী উদ্যোক্তা অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম এবং শিক্ষা ও প্রশাসন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এ এইচ এম মাঈনউদ্দিন তিতাস প্রমুখ। এসময় রোকেয়া দিবস-২০২৪ উপলক্ষে প্রকাশিত ‘রোকেয়া পাঠ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হারুন-অর রশিদ ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক ইফ্ফাত আরা বাঁধন এর যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গুলশান আরা। প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশ নেন ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান ও বাংলা বিভাগের প্রভাষক খাইরুল ইসলাম। 


বিজ্ঞাপন


অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এনামউল্যা, বেরোবি’র সিন্ডিকেট সদস্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের অধ্যাপক (অব.) ড. শামসুল আলম সরকার এবং রেনেসাঁ হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।
 
এর আগে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিবসটির আনুষ্ঠানিকতা। এরপর মহিয়সী নারী বেগম রোকেয়ার অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণসহ বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করা হয়। এছাড়া বাদ যোহর কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

আরকেজে/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন