images

রাজনীতি

ঢাকা-১১: নিজের জায়গায় ছেলেকে বসাতে চান রহমতুল্লাহ

কাজী রফিক

০৮ মে ২০২৩, ১১:০৪ এএম

আর মাত্র আট মাস পর ২০২৪ সালের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে চলতি বছরের নভেম্বরে। তবে এরইমধ্যে ভোটের হাওয়া বইতে শুরু করেছে দেশজুড়ে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে চায়। দলটি ইতিমধ্যে তাদের নির্বাচনী প্রচারণাও শুরু করেছে। ঈদের আগে দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের নিজ নিজ এলাকায় উন্নয়ন প্রচারের তাগিদ দিয়েছেন। সে হিসেবে কাজও করেছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। অপরদিকে সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনের মাঠে আছে বিএনপি। ভোটের মাঠে শেষ পর্যন্ত বিএনপির অবস্থান কি হবে তা সময়ই বলে দেবে।

নির্বাচন সম্পর্কিত আরও খবর: ঢাকা-১০: শেখ পরিবারের ‘অপেক্ষায়’

দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ২০টি ঢাকায়। এরমধ্যে ঢাকা-১১ জাতীয় সংসদের ১৮৪নং আসন। রাজধানীর বাড্ডা থানা, ভাটারা, বেরাইদ, ভাটারা ও সাঁতারকুল এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২১, ২২ ও ২৩নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ আসন।

আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহ। তিনি দেশের অন্যতম একজন গবাদি পশুর চামড়া ব্যবসায়ী।

১৯৮৬ সালের তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্মিলিত বিরোধী দলের হয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন ঢাকা-৫ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এ কে এম রহমতুল্লাহ। ১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পুনরায় তৎকালীন ঢাকা-৫ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

পড়ুন: ঢাকা-৯: লড়াই হতে পারে সাবের-আফরোজার

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ঢাকা-১০ আসন থেকে প্রথম সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঢাকা-১১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল তিনি ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন।

দীর্ঘ সময় ধরে ঢাকা-১১ আসনটির সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি।

এ সংসদ সদস্যের দাবি, ঢাকা-১১ আসনের প্রয়োজন এমন সবকিছুই তার হাত ধরে হয়েছে। সড়ক অবকাঠামো থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন তিনি করেছেন।

অপরদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের আরেকটি পক্ষের দাবি, এ কে এম রহমতুল্লাহ ঢাকা-১১ আসনের জন্য তেমন কিছুই করেননি। দৃশ্যমান ও টেকসই কোনো উন্নয়ন তার হাত ধরে হয়নি। তাদের দাবি, এ কে এম রহমতুল্লাহ সংসদীয় আসনের উন্নয়নের চাইতে নিজের ব্যবসার প্রতি বেশি মনোযোগী।

ঢাকা-৬: ফিরোজ রশীদেই ভরসা, মাথা তুলতে চান আ.লীগ-বিএনপির অনেকে

এরমধ্যেই ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপকালে এ কে এম রহমতুল্লাহ জানিয়েছেন, তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশ নিচ্ছেন না। তার জায়গায় নির্বাচনের মাঠে নামাবেন তার ছেলেকে।

জানা গেছে, এ কে এম রহমতুল্লাহর ছেলে হেদায়েত উল্লাহ রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত নন।

ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, আমার বয়স হয়েছে। আমি আর নির্বাচন করব না। আমার ছেলে করবে। সে ফ্রান্সে আছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই দেশে আসবে।

সংসদ সদস্য তার জায়গায় ছেলেকে দাঁড় করাতে চাইলেও এর পক্ষে নন অনেকেই। তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দাবি, রহমতুল্লাহর ছেলের চাইতে আসনটিতে আরও অনেক যোগ্য প্রার্থী আছেন। হেদায়েত উল্লাহকে মনোনয়ন দেয়া হলে এর বিরুদ্ধাচারণের সম্ভাবনাও রয়েছে।

আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের দাবিদার ধরা হয় মোজাম্মেল হককে৷ তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত।

ভোটের হাওয়া সম্পর্কিত আরও খবর: ঢাকা-৩: নৌকার একচ্ছত্র আধিপত্যের মধ্যেও ‘আশা জাগাচ্ছে’ বিএনপি

ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপকালে মোজাম্মেল হক বলেন, এই ছয়-সাতবারে তিনি মানুষকে কিছুই দিয়ে যান নাই। শুধু তার গরুর চামড়ার ব্যবসা কিভাবে লাভ হবে, কিভাবে আয় বেশি হবে, তার সে মানসিকতা কাজ করে। রহমতুল্লাহকে ‘ঢাকা-১১ আসনের গলার কাটা’ বলেও অভিহিত করেছেন তিনি।

আলোচনা আছে আসনটি থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইতে পারেন মোজাম্মেল হক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ক্যান্ডিডেট না, তবে আবার ক্যান্ডিডেট আছিও। যদি পয়সাপাতি বিষয়টাতে প্রাধান্য দেয় তাহলে আমি সেখানে নাই। পয়সাপাতি ছাড়া যদি কোন কন্ট্রিবিউশন থাকে তাহলে আমি সেটাই করব৷

নির্বাচিত হলে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদক এবং অবিচার তার কাছ থেকে কেউ পাবে না বলে জানান মোজাম্মেল হক বীর প্রতীক।

এদিকে দুটি নামজাদা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ব্যবসায়ীদেরও এ আসনের প্রতি নজর আছে।

২০১৮ সালের নির্বাচনে ঢাকা-১১ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন শামীম আরা বেগম। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ কাইয়ুমের স্ত্রী তিনি। এবারের নির্বাচনে যদি বিএনপি অংশ নেয় তবে ঢাকা-১১ আসন থেকে ধানের শীষের প্রার্থী হতে পারেন শামীম আরা।

কারই