দেলাওয়ার হোসাইন দোলন
২৩ নভেম্বর ২০২৩, ০১:২১ পিএম
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেতে চান ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের অন্তত ১০ জন কাউন্সিলর। দল সমর্থন দিলে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন তারা। নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে ইতোমধ্যে পদত্যাগের সিদ্ধান্তও নিয়েছেন কেউ কেউ। তবে দলের সমর্থন না পেলে স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থী হতেও ইচ্ছুক কয়েকজন।
মনোনয়নপ্রত্যাশী এসব কাউন্সিলর মনে করেন, মাঠের রাজনীতিতে তাদের শক্ত অবস্থান রয়েছে। দলের হয়ে বারবার জনগণের ভোটে কাউন্সিলর হয়েছেন তারা। সেবার পরিধি বাড়ানোসহ জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সংসদ সদস্য হওয়া এখন জনদাবিতে পরিণত হয়েছে। ফলে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল তাদেরই চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবে।
খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৯ আসন। এই আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) দুই নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনিসুর রহমান। তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।
ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, একাধিকবার জনগণের ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছি। জনগণ ভালোবেসে যোগ্য মনে করে সেবা করার সুযোগ দিয়েছে। সংসদ সদস্য হলে সেবার বিস্তৃতি আরও বাড়াতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন
আনিসুর রহমান জানান, কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে এলাকায় রাস্তা-ঘাট, মাঠ ও পার্ক করেছি। মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। জাতীয় পর্যায়ে সেবা করার সময় এসেছে। দল সমর্থন দিলে নির্বাচনে অংশ নেবে।
ধানমণ্ডি-নিউমার্কেট-কলাবাগান-হাজারীবাগ নিয়ে আসন গঠিত ঢাকা-১০। এই আসন থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম বাবলা। ২০২০ সালে ঢাকা-১০ আসনের উপ-নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন এই কাউন্সিলর। কিন্তু দল থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন না দেওয়ায় সরে দাঁড়ান তিনি। এর আগে ধানমণ্ডি থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঢাকা-১০ আসনের মনোনয়নপত্র নিয়েছেন তিনি।
রফিকুল ইসলাম বাবলা বলেন, দীর্ঘদিন রাজনীতি করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছি। জনসমর্থন বিবেচনায় নিয়ে আশাকরি প্রধানমন্ত্রী আমাকে এই আসনে সমর্থন দেবেন।
পুরান ঢাকার লালবাগ, চকবাজার, কোতোয়ালি, বংশাল থানা এলাকা নিয়ে ঢাকা-৭ আসন। এই আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর বিন আব্দাল আজিজ। তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদস্য।
যদিও একই আসনে প্রার্থী হয়েছেন দখলসহ বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে সমালোচিত ডিএসসিসি ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিকও। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও মনোনয়ন ফরম তুলেছিলেন। কিন্তু সে সময় তাকে এই আসন থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
অপর দিকে ঢাকা-৭ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইরফান সেলিম। যদিও একই আসন থেকে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য হাজী সেলিম ও তার বড় ছেলে সোলায়মান সেলিম।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন শাহবাগ, পল্টন, রমনা ও শাহজাহানপুর নিয়ে গঠিত ঢাকা-৮ আসন থেকে। এছাড়া ঢাকা-৬ আসন থেকেও মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির এই সদস্য।
ঢাকা-৮ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন ডিএসসিসির ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতন ও ডিএসসিসির সংরক্ষিত ৫ নম্বর আসনের কাউন্সিলর (ওর্য়াড নম্বর- ১৩, ১৯ ও ২০) রোকসানা ইসলাম চামেলী।
ঢাকা-৪ আসনটি দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৭, ৫১, ৫২, ৫৩ ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন শ্যামপুর থানার শ্যামপুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এই আসন থেকে ফরম সংগ্রহ করেছেন ডিএসসিসির ৫৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকাশ কুমার ভৌমিক ও ৫১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী হাবিবুর রহমান।
সাভার উপজেলার কাউন্দিয়া ইউনিয়ন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৭, ৮, ৯, ১০, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৪ আসন। এই আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেওয়ান আব্দুল মান্নান।
আলাপকালে বলেন, এলাকার জনগণের ভালোবাসায় দুবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছি। এ সময় মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি।
এছাড়াও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশের আরও কয়েকজন কাউন্সিলর মনোনয়নপত্র জামা দিয়েছেন। যাদের অনেকেই দলের মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হয়েও নির্বাচনে অংশ নিতে চান। যদিও দল থেকে চূড়ান্ত মনোয়ন ঘোষণার আগে সরাসরি বলতে নারাজ তারা।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কাউন্সিলর ঢাকা মেইলকে বলেন, দলীয় মনোনয় সংগ্রহ এক প্রকার উৎসব। পাবো কি পাবো না তা বিবেচ্য নয়। উৎসবে অংশ নিয়েছি।
ডিএইচডি/এইউ