দরিদ্র, অসহায়, অসুস্থ ও বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো একজন প্রকৃত মুমিনের মৌলিক বৈশিষ্ট্য। কোরআন ও হাদিসে এসব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর গুরুত্ব, ফজিলত এবং দায়িত্ব সম্পর্কে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।
১. মুমিন জাতি একটি দেহ: বিপদে পাশে দাঁড়ানো ঈমানের পরিচয়
‘মুমিনদের উদাহরণ একটি দেহের ন্যায়।’ (সহিহ মুসলিম: ৬৪৮০)
রাসুল (স.)-এর বর্ণনায় মুমিন জাতির ঐক্য, সহানুভূতি ও সহমর্মিতার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হয়েছে। একজন মুমিন বিপদে পড়লে অন্যদেরও তা অনুভব করা উচিত।
২. অসহায়দের সাহায্য করা ‘উত্তম কর্জ’
‘কে আছে যে আল্লাহকে উত্তম কর্জ দিবে?’ (বাকারা: ২৪৫)
বিজ্ঞাপন
আল্লাহ তাআলা গরিবদের সাহায্যকে নিজেকে কর্জ দেওয়া হিসেবে গণ্য করেছেন, যার প্রতিদান বহুগুণে ফেরত দেওয়ার ওয়াদা করেছেন।
আরও পড়ুন: দারিদ্র্য নিয়ে দুশ্চিন্তা যে কারণে নিষেধ
৩. দানশীলতার ফজিলত ও প্রতিদান
‘দানশীল নারী-পুরুষদের জন্য রয়েছে সম্মানজনক প্রতিদান।’ (হাদিদ: ১৮)
কোরআনের বিভিন্ন স্থানে দান ও সদকার গুরুত্ব এবং দানকারীদের জান্নাতের সুসংবাদ ঘোষণা করা হয়েছে।
৪. মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানো মানেই আল্লাহর সাহায্য লাভ
‘যে তার ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করে, আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করবেন।’ (আবু দাউদ: ৪৮৯৩)
এই হাদিসে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, মানুষের উপকার করলে আল্লাহ নিজেই আমাদের উপকার করবেন।
আরও পড়ুন: আল্লাহ ‘সফল’ ঘোষণা করেছেন যাদের
৫. দান-সদকা কেয়ামতের ভয় থেকে রক্ষা করে
‘তাদের কোনো ভয় নেই, কোনো চিন্তাও নেই।’ (বাকারা: ২৭৪)
আল্লাহর পথে ব্যয় করা হলে কেয়ামতের ভয়-চিন্তা থেকে মুক্তির নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।
৬. দান গোপনে করাই শ্রেষ্ঠ
‘তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান করো, তবে তা ভালো; গোপনে করো, তবে তা আরও উত্তম।’ (বাকারা: ২৭১)
ইখলাসপূর্ণ গোপন দানই সর্বোত্তম, যা আল্লাহর কাছে বেশি মূল্যবান।
৭. কাপড় দান করলে জান্নাতের সবুজ পোশাক
‘আল্লাহ তাকে জান্নাতের সবুজ কাপড় পরাবেন।’ (তিরমিজি: ২৪৪৯)
এই হাদিসের মাধ্যমে আমাদের পোশাক দানকেও বিশেষভাবে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।
আসুন, কোরআন ও হাদিসের এই নির্দেশনাগুলো আমাদের জীবনে বাস্তবায়ন করি। গরিব, অসুস্থ, অসহায় ও বিপদে থাকা মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করি এবং জান্নাতের পথ সুগম করি।

