শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

তাকবিরে তাশরিক কখন পড়তে হয়

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ জুন ২০২৫, ০৫:২৮ পিএম

শেয়ার করুন:

তাকবিরে তাশরিক কখন পড়তে হয়

ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্মরণীয় আমল হলো তাকবিরে তাশরিক। জিলহজ মাসের নির্দিষ্ট কিছু দিনে আল্লাহর মহত্ব ঘোষণা করে এই তাকবির পাঠ করা ওয়াজিব করা হয়েছে। এটি কেবল একটি উচ্চারণ নয়, বরং মুসলিম জীবনে ত্যাগ, আনুগত্য ও ঈমানের চেতনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

জিলহজ মাসের ৯ তারিখ ফজরের নামাজের পর থেকে ১৩ তারিখ আছরের নামাজ পর্যন্ত এই দিনগুলোতে মুসলিমদের ওপর এক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো তাকবিরে তাশরিক পাঠ করা।


বিজ্ঞাপন


তাকবিরে তাশরিক কী?

তাকবিরে তাশরিক একটি নির্দিষ্ট জিকির, যা প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর একবার করে পাঠ করা ওয়াজিব। এটি হলো- اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، لَا إِلَٰهَ إِلَّا اللَّهُ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، وَلِلَّهِ الْحَمْدُ উচ্চারণ: ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।’ অর্থ: আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।’

কখন এবং কতদিন পড়তে হয়?

তাকবিরে তাশরিক শুরু হয় ৯ জিলহজ ফজরের নামাজের পর এবং শেষ হয় ১৩ জিলহজ আছরের নামাজের পর। এই সময়ের মধ্যে প্রত্যেক ফরজ নামাজের পরে একবার তাকবির পাঠ করা ওয়াজিব। অর্থাৎ মোট ২৩ ওয়াক্ত নামাজের পরে এই তাকবির পড়তে হয়।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: ঈদের ছুটি অর্থবহ করতে ৭ করণীয়

পুরুষ ও নারীর জন্য ভিন্ন বিধান

পুরুষদের ওপর তাকবির উচ্চ স্বরে বলা ওয়াজিব। নারীরা নিচু স্বরে পড়বে, যাতে অন্তত নিজের কানে শুনতে পারে। (ফিকহে শামি, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ১৭৮)

কারা পড়বে?

ফরজ নামাজ পড়েছেন এমন— জামাতে হোক বা একাকী, ওয়াক্তের মধ্যে হোক বা কাজা, মুকিম হোক বা মুসাফির, শহরের হোক বা গ্রামের— সকল মুসলিম পুরুষ ও নারীর ওপর এ তাকবির একবার করে পড়া ওয়াজিব। (দুররুল মুখতার, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ১৮০)

ভুলে গেলে করণীয়

নামাজ শেষে কেউ যদি ভুলে তাকবির না পড়ে, তবে যতক্ষণ নামাজের বিপরীত কোনো কাজে লিপ্ত হয়নি (যেমন কথা বলা, নামাজের জায়গা থেকে উঠে যাওয়া), ততক্ষণ পর্যন্ত দেরিতে হলেও তাকবির পড়ে নিতে হবে। তবে নামাজের পর এমন কিছু করে ফেললে তাকবির বলার সুযোগ থাকবে না, বরং ওয়াজিব তরকের কারণে আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে। (ফিকহে শামি, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ১৭৯)

আরও পড়ুন: প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ৪০ দোয়া

কোরআন ও হাদিসের প্রমাণ

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে- ‘যেন তারা নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে।’ (সুরা হজ: ২৮) ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘এখানে নির্দিষ্ট দিন বলতে ‘আইয়ামে তাশরিক’ বোঝানো হয়েছে, আর আল্লাহর স্মরণ বলতে তাকবিরে তাশরিক।’ (সহিহ বুখারি, ঈদের অধ্যায়)

রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন- ‘এই দিনগুলোর আমলের তুলনায় কোনো দিনেই আমল শ্রেষ্ঠ নয়।’ সাহাবিগণ জিজ্ঞেস করলেন, জিহাদও না? তিনি বললেন, ‘জিহাদও না; তবে সেই ব্যক্তি ব্যতিক্রম, যে জান ও মাল নিয়ে বের হয়ে কিছুই ফিরিয়ে আনতে পারে না।’ (সহিহ বুখারি: ৯৬৯)

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর