রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

আস্তাগফিরুল্লাহ: ছোট্ট একটি শব্দের এত বড় ফজিলত! 

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ মে ২০২৫, ০১:২৮ পিএম

শেয়ার করুন:

আস্তাগফিরুল্লাহ: ছোট্ট একটি শব্দের এত ফজিলত! 

ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনার রয়েছে অসংখ্য উপকার। শুধু পাপ মোচনের জন্যই নয়, বরং যাবতীয় কল্যাণ, সফলতা, সংকট নিরসন এবং জীবিকার সহজতা লাভের মহান মাধ্যম এই ইস্তেগফার। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের বেশি বেশি ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনার নির্দেশ দিয়েছেন। 

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে— ‘আর আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা বাকারা: ১৯৯) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে— ‘আর তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও।’ (সুরা হুদ: ৩)


বিজ্ঞাপন


ছোট্ট শব্দ ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ পড়ার কিছু বিস্ময়কর ফজিলত নিচে তুলে ধরা হলো—

১. আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন

আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি বান্দাকে ভালোবাসেন। সব নবী-রাসুল ইস্তেগফার করতেন। এমনকি প্রিয়নবী (স.) নিষ্পাপ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ বার তাওবা ও ইস্তেগফার করতেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (স.) বলেছেন— ‘আল্লাহর শপথ! আমি প্রতিদিন আল্লাহর কাছে ৭০ বারেরও বেশি ইস্তেগফার ও তাওবা করে থাকি।’ (সহিহ বুখারি: ৬৩০৭)

২. গুনাহ মাফ হয়

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর কেউ কোনো মন্দ কাজ করে অথবা নিজের প্রতি জুলুম করে পরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে, আল্লাহকে সে ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু পাবে।’ (সুরা নিসা: ১১০)

আরও পড়ুন: তাওবা কবুলের জন্য যে দোয়াগুলো পড়বেন

৩. দুশ্চিন্ত, বিপদ-আপদ দূর হয়

রাসুল (স.) বলেছেন— ‘যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার করবে, আল্লাহ তাকে সব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেবেন, সব সংকীর্ণতা থেকে উদ্ধার করবেন এবং এমনভাবে জীবিকার ব্যবস্থা করবেন যা তার কল্পনারও বাইরে।’
(সুনানে নাসায়ি: ৩৮১৯)

৪. নাজাত লাভের অনন্য উপায়

ইস্তেগফার মানুষকে আল্লাহর আজাব থেকে রক্ষা করে। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে— ‘আল্লাহ এমন নন যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে অথচ তিনি তাদের শাস্তি দেবেন।’ (সুরা আনফাল: ৩৩)

৫. সংকট থেকে মুক্তি, রিজিকে বরকত 

হাদিসে এসেছে— ‘যে বেশি বেশি ইস্তেগফার করবে, আল্লাহ তার সব সংকট দূর করে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করবেন।’ (মুস্তাদরাকে হাকেম: ৭৬৭৭)

আরও পড়ুন: উত্তম রিজিকের জন্য কোরআন-হাদিসে বর্ণিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু দোয়া

৬. দুনিয়ার সফলতা লাভ

হুদ (আ.) তাঁর সম্প্রদায়কে বলেছিলেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও, তারপর তার দিকে ফিরে আসো। তিনি তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, তোমাদের শক্তি বাড়িয়ে দেবেন এবং তোমরা যেন অপরাধী হয়ে মুখ ফিরিয়ে না নাও।’ (সুরা হুদ: ৫২)

৭. আখেরাতের সফলতা লাভ

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা বলে, ‘হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি; আমাদের গুনাহ মাফ করে দিন এবং আগুনের আজাব থেকে রক্ষা করুন।’ তারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, অনুগত, ব্যয়কারী ও শেষ রাতে ক্ষমাপ্রার্থী।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৫-১৭)

আরও পড়ুন: আল্লাহর শেখানো যে দোয়া পড়ে আদম (আ.) ক্ষমা পেয়েছেন

৮. রাতের শেষ ভাগে ইস্তেগফার ও দোয়া কবুলের বিশেষ সময়

রাসুল (স.) বলেছেন— ‘প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহ পৃথিবীর নিকটবর্তী আকাশে অবতরণ করে বলেন, ‘কে আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দেবো। কে আমার কাছে চাইবে? আমি তাকে তা দেবো। কে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করব।’ (সহিহ বুখারি: ১১৪৫)

ইস্তেগফার শুধু একটি শব্দ নয়, বরং বান্দা ও রবের মাঝে সম্পর্ক জাগিয়ে তোলার চাবিকাঠি। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তাওবা ও ইস্তেগফার করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর