বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

জুমাবারের যে আমলে সপ্তাহের সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৫ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

জুমাবার মুসলমানদের কাছে একটি কাঙ্ক্ষিত দিন। এই দিনকে সাপ্তাহিক ঈদ বলা হয়েছে হাদিসে। জুমাকেন্দ্রিক প্রত্যেক আমল মুমিনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জুমার দিনের কিছু আদব বা শিষ্টাচারের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে হাদিসে। যেমন পুত-পবিত্র হওয়া, আগেভাগে মসজিদে আসা, মসজিদে বসার ক্ষেত্রে মুসল্লিদের টপকে সামনে না আগানো, অনর্থক কথা না বলা, খুতবা শোনা ইত্যাদি। এসব আদব রক্ষাকারীদের জন্য রয়েছে বিশেষ ঘোষণা। হাদিস অনুযায়ী তারা ক্ষমা ও অফুরন্ত সওয়াব লাভের যোগ্য।

জুমার খুতবা শোনা শুধু সওয়াবের কাজ নয়, ওয়াজিবও। তাই খুতবার সময় কোনো কথা বলা যাবে না। এমনকি কাউকে চুপ থাকতে বলাও নিষেধ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘জুমার দিন যখন তোমার পাশের মুসল্লিকে চুপ থাকো বলবে, অথচ ইমাম খুতবা দিচ্ছেন, তা হলে তুমি একটি অনর্থক কথা বললে।’ (বুখারি: ৯৩৪, মুসলিম: ৮৫১)


বিজ্ঞাপন


আউস ইবনে আউস (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (স.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন উত্তমরূপে গোসল করবে। এরপর ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে আসবে, আসার সময় হেঁটে আসবে, কোনো বাহনে চড়বে না, ইমামের কাছাকাছি বসবে, এরপর দুটি খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং (খুতবার সময়) কোনো অনর্থক কাজকর্ম করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে একবছর নফল রোজা ও একবছর নফল নামাজের সওয়াব পাবে।’ (আবু দাউদ: ৩৪৫)

আরও পড়ুন: জুমার দিন বিকেলে যা করতেন মুসলিম মনীষীরা

জুমার দিন যাদেরকে বিশেষভাবে ক্ষমা করা হয়, তাদের ব্যাপারে নবীজি (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, সাধ্যমতো পবিত্র হলো, তেল ব্যবহার করল, ঘর থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করল, অতঃপর মসজিদে এলো, সেখানে দুজন মুসল্লির মধ্যে ফাঁক করে সামনে এগিয়ে যায় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ নামাজ পড়ল, অতঃপর ইমাম কথা শুরু করলে চুপ থাকল; তাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করবেন।’ (সহিহ বুখারি: ৮৮৩)

এখানে গুনাহ বলতে সগিরা গুনাহ উদ্দেশ্য। কবিরা গুনাহের জন্য তাওবা করতে হবে। খালেস তাওবায় কবিরা গুনাহ মাফ হয়ে যায়। এমনকি কখনও গুনাহগুলো নেকিতে পরিবর্তিত হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘যে তাওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গুনাহসমূহ নেকি দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন।’ (সুরা ফুরকান: ৭০)


বিজ্ঞাপন


জুমার দিন আগেভাগে মসজিদে আসারও ফজিলত রয়েছে। নবী (স.) বলেছেন, ‘জুমার দিন ফেরেশতারা মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে প্রথম থেকে পর্যায়ক্রমে আগন্তুকদের নাম লিখতে থাকে। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি উট সদকা করে। তারপর যে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি গাভী সদকা করে। তারপর আগমনকারী মুরগি সদকাকারীর মতো। তারপর আগমনকারী একটি ডিম সদকাকারীর মতো। এরপর যখন ইমাম খুতবা দিতে বের হন, তখন ফেরেশতারা তাদের দফতর বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ  দিয়ে খুতবা শুনতে থাকেন।’ (বুখারি: ৮৮২)

আরও পড়ুন: জুমার দিনে পাঁচটি ভুল যেন না হয়

প্রথম কাতারের সওয়াব সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যদি লোকেরা জানত যে আজান ও প্রথম কাতারে সালাত আদায়ে কী নেকি আছে, তাহলে তারা পরস্পর প্রতিযোগিতা করত। অনুরূপভাবে যদি তারা জানত এশা ও ফজরের সালাতে কী নেকি রয়েছে, তবে তারা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও ওই দুই সালাতে আসত।’ (বুখারি: ৬১৫)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমার দিনের প্রতিটি আদবের প্রতি সচেতন হওয়ার এবং জুমার দিনের পরিপূর্ণ ফজিলত অর্জনে সুন্নাহ সমর্থিত আমলগুলো যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন