রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

বন্যার পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জনের বিধান

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০৩:০৫ পিএম

শেয়ার করুন:

বন্যার পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জনের বিধান

আল্লাহ তাআলা নিজে পবিত্র। বান্দাদেরও তিনি পবিত্র রাখতে চান। মানবের পূতপবিত্র জীবনযাপন তিনি পছন্দ করেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে নবী পরিবার! আল্লাহ তো শুধু চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদের সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে।’ (সুরা আহজাব: ৩৩)। আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘বরং তিনি তোমাদের পবিত্র করতে চান।’ (সুরা মায়েদা: ৬)

বন্যাকবলিত এলাকায় পানির গুণাগুণের ওপর ভিত্তি করে পবিত্রতা অর্জনের মাসয়ালা নির্ধারণ করেছে ইসলামি শরিয়ত। নিচে সহজভাবে তুলে ধরা হলো।


বিজ্ঞাপন


বন্যাকবলিত এলাকায় পবিত্রতা অর্জনের পদ্ধতি
প্রাকৃতিক বন্যা সাধারণত বৃষ্টি ও নদীর পানি থেকে হয়ে থাকে। এই দুই উৎসের পানি যেহেতু পবিত্র, তাই এ পানি থেকে নাপাকি দূরীকরণ ও পবিত্রতা অর্জন করা জায়েজ। (বাদায়েউস সানায়ে: ১/১৫)

মাটি বা অন্যকোনো পবিত্র বস্তু মিশ্রিত হয়ে যদি পানিকে অতিরিক্ত ঘোলা করে দেয়, যার দরুণ স্বাদ, রং, ঘ্রাণ– পানির এই তিনটি গুণের কোনো একটিতে পরিবর্তন আসে, অথবা পানির স্বাভাবিক তরলতা ও প্রবহমানতা নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে সেই পানি খোদ পাক থাকবে বটে, কিন্তু তা দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা জায়েজ হবে না। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/২১)

আরও পড়ুন: রাস্তার ময়লা পানি কাপড়ে লাগলে নামাজ পড়া যাবে?

স্রোতের পানিতে যদিও নাপাকির সংমিশ্রণ থাকে, কিন্তু পানির রং, ঘ্রাণ বা স্বাদে কোনো পরিবর্তন না আসলে তা দিয়ে পবিত্রতা হাসিল করা জায়েজ। কিন্তু যদি অতি পরিমাণ নাপাক বস্তু মিশ্রিত হয়ে পানির গুণ বা স্বাভাবিকতা নষ্ট করে দেয় তাহলে তা নাপাক হয়ে যাবে। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ১/১৬-১৭)


বিজ্ঞাপন


বন্যার পানি যখন পবিত্রতা অর্জনের অনুপযোগী হয়ে যাবে এবং পবিত্রতা অর্জনের জন্য পবিত্র পানির ব্যবস্থাও না হবে, তখন তায়াম্মুমের মাসয়ালা চলে আসবে। অর্থাৎ সে তখন মাটি, পাথর, চুনা বা দেয়াল ইত্যাদি থেকে তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করে নিবে।

তবে যদি তায়াম্মুম করার মতোও কিছু না থাকে তাহলে সে পবিত্রতা অর্জন ছাড়াই নামাজি ব্যক্তির সাদৃশ্য গ্রহণ করে নামাজ আদায় করবে এবং পরবর্তীতে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসে সেই নামাজ কাজা আদায় করে নিবে।

আরও পড়ুন: বন্যাকবলিত এলাকায় নামাজ পড়ার পদ্ধতি

বন্যার পানি যেহেতু বিভিন্ন রোগ-জীবাণু বহন করে থাকে, যা স্বাস্থ্যে জন্য ক্ষতিকর, তাই একেবারে নিরুপায় অবস্থা ছাড়া বন্যার পানি পান করা জায়েজ হবে না। কেননা শরিয়তে অন্যের ক্ষতি সাধন যেমন নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে, তেমনি ‘ইচ্ছাকৃত’ নিজের ক্ষতি করাও নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা নিজ হাতে নিজেদের ধ্বংসের মধ্যে ঠেলে দিয়ো না।’ (সুরা বাকারা: ১৯৫)

যদি বন্যার পানি নাপাক হয় এবং তাতে কেউ আবদ্ধ হয়ে পড়ে এবং সেখান থেকে বের হওয়ার কোন উপায়ও না থাকে, তাহলে নাপাকির মধ্যেই সে নামাজ পড়ে নিবে। পরবর্তীতে তা আর কাজা করতে হবে না। (তাতারখানিয়া: ২/৬৭৮)

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর