শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

বিবাহিত নারী মা-বাবার সেবা করবে কীভাবে?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:০৫ পিএম

শেয়ার করুন:

বিবাহিত নারী মা-বাবার সেবা করবে কীভাবে?

ইসলামে মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (স.)-এর আনুগত্যের পরই একজন মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো তার মা-বাবার আনুগত্য। ‘আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘তোমার রব আদেশ দিয়েছেন, তিনি ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করবে না এবং পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উফ’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না। আর তাদের সঙ্গে সম্মানজনক কথা বলো।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ২৩)

উক্ত নির্দেশ ছেলে-মেয়ে উভয়ের প্রতি। কেননা ‘সন্তান’ বলতে ‘ছেলে-মেয়ে’ উভয়কেই বুঝানো হয়। সন্তানের বিয়ের পরও পবিত্র কোরআনের এই হুকুম জারি থাকে।


বিজ্ঞাপন


তবে, মা-বাবার সেবায় মেয়েদের দায়িত্ব আলাদা। কেননা বিয়ের পর নারীদের স্বামীর খেদমতকে প্রাধান্য দিতে হয়। হজরত মুয়াজ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (স.) ইরশাদ করেছেন, যদি আমি যদি কোনো ব্যক্তিকে অন্য কাউকে সেজদা করার আদেশ দিতাম, তাহলে স্ত্রীদের আদেশ দিতাম তাদের স্বামীকে সেজদা দিতে। (কিন্তু সেজদা আল্লাহ ছাড়া কাউকে দেয়া জায়েজ নয়, তাই এ আদেশ দেওয়া হয়নি)’। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৮৭৮৫, সুনানে দারেমি: ১৫০৪, আবু দাউদ: ২১৪০, মুজামে কাবির: ৪৮৬, মুসতাদরাক আলাস সাহিহাইন: ২৭৬৩, সুনানে কুবরা লিলবায়হাকি: ১৪৭০৫)

আরও পড়ুন
মা বাবার হক আদায় হয়—এমন দোয়া আছে কি?
স্ত্রী ও বাবা-মা’র হক আদায়ে ভারসাম্য রক্ষার উপায়

এই হাদিসে স্পষ্ট যে, স্ত্রীর জন্য স্বামীর খেদমত ইসলামে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাছাড়া বিয়ের আগে মেয়েরা মা-বাবার খেদমত যতটা করতে পারে, বিয়ের পরে তেমনটা পারে না। আসলে স্বামীর সংসার বা শ্বশুরবাড়ির ব্যস্ততার কারণে সেই সুযোগ থাকে না। তাই যতটুকু সম্ভব মা-বাবার সেবায় ততটুকু করবে—এটাই ইসলামের শিক্ষা। সুবিধাজনক সময়ে মা-বাবার সঙ্গে সাক্ষাত করবে। স্বামীর বাড়িতে থেকে তাদের সঙ্গে মাঝেমাঝে ফোনে যোগাযোগ করবে। তাদের প্রয়োজনের দিকে খেয়াল রাখবে। তাদের শরিয়তসম্মত আদেশ মেনে চলবে। যথাযথভাবে খেয়াল রাখবে তারা যেন কষ্ট না পায়।

মা-বাবা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে এবং তাদের সেবা করার জন্য মেয়ে ছাড়া অন্যকেউ না থাকলে তখন মেয়ের কর্তব্য হয়ে যায় তাদের খেদমত করা। এমন পরিস্থিতিতে ফিকাহবিদদের মতে, স্বামী স্ত্রীকে কোনোরকম বাধা দিতে পারবে না এবং পারলে সহযোগিতা করবে।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন
স্বামী-স্ত্রী কে কোন পাশে ঘুমানো সুন্নত?
স্ত্রীর উপার্জনে স্বামীর অধিকার কতটুকু? 

মা-বাবা যদি এমন দরিদ্র হয় যে তারা নিজের মালিকানার সম্পদে চলতে অক্ষম এবং অপরদিকে মেয়ে যদি সামর্থ্যবান ও বিত্তবান হয়, তাহলে তার ওপর মা-বাবার ভরণপোষণ ওয়াজিব। এক্ষেত্রে যদি তার সচ্ছল অন্য ভাইবোন থাকে তবে তাদের ওপরেও ভরণপোষণ সমানভাবে ওয়াজিব। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও অভাবগ্রস্ত মা-বাবার খরচ না দিলে গুনাহগার হবে। 

বিয়ের পর মেয়ে মা-বাবার হক আদায় করতে গিয়ে স্বামীর অধিকার যাতে কোনোভাবে খর্ব না হয় সেদিকেও পূর্ণ খেয়াল রাখতে হবে। 

(হিন্দিয়া: ১/৫৬৪; খানিয়া: ১/৪৪৩; আলমুহিতুল বুরহানি: ৪/২৩৬;  আদ্দুররুল মুখতার: ৩/৬০৩; তাতারখানিয়া: ৪/৩০৮; ফাতহুল কাদির: ৪/২০৮; আলবাহরুর রায়েক: ৪/১৯৫; ফতোয়ায়ে দারুল উলুম: ৮/৪১৭)

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর