রোববার, ১৬ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

সংসদে যান, সেখানেই হবে মূল সংস্কার: ফারুক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৩:৪৩ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

বাংলাদেশ নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের উদ্দেশে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক বলেছেন, আপনি গণপরিষদ, উপজেলা এসব বাদ দেন। নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাই করার জন্য গ্রামে গঞ্জে যান এবং নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলে প্রার্থী দেন। সংসদে যান, সেখানেই হবে মূল সংস্কার। ভোটকেন্দ্রের সংস্কার করেন। আর যারা ভোট নিবে তারা যেন হাসিনার মতো রাতে ভোট না করে সেই ব্যবস্থা করেন।

শনিবার (১৫ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সামাজিক পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত ‘স্থিতিশীল রাষ্ট্র বিনির্মাণে জাতীয় নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আপনারা তো আমার দলের নেতা তারেক রহমানের মতোই সংগ্রামের নেতা। এই নোবেল বিজয়ীকে সরকারে বসিয়ে দিয়ে একটি নির্বাচনের প্রতীক্ষা করছেন, তখনই মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের মতো আরেকটা ষড়যন্ত্র মনে হয় শুরু হওয়ার পথে।

তিনি আরও বলেন, এই আন্দোলনকে হাজার হাজার মানুষ সহায়তা করেছে শুধুমাত্র একটি কারণে। সেটি হলো নির্বাচন। শেখ হাসিনা যে নির্বাচন শব্দটি বাংলাদেশ থেকে মুছে দিয়েছে, সেই নির্বাচনের জন্য জীবন দিয়েছে খোকন মুগ্ধরা। এখন নির্বাচন সামনে রেখে আপনারা নতুন দল করে আবার বলেন গণপরিষদ। 

বিএনপির চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, গণপরিষদ, উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, জেলা পরিষদ এই কথাগুলো আসছে কেনো জানেন? আমার সন্দেহ হচ্ছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন আমরা নাকি ওনার পাশে বসলে ওনার বুকের সাহস অনেক বেড়ে যায়। আবার আমরা যখন ওনার কাছ থেকে চলে আসি, তখন নাকি উনি সাহস হারিয়ে ফেলেন। এ কথাগুলো সম্পর্কে জনগণ আমাদের বলে, আরেকটা ষড়যন্ত্র মোটাদাগে প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশে। এই ষড়যন্ত্র পাকাপোক্ত করে দেশে সাইদ-মুগ্ধের রক্তে অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করার পরিকল্পনা চলছে।
   
তিনি আরও বলেন, আমার নেতা তারেক রহমানের আশা এবং দেশের ৮০ ভাগ লোক চায় নিজের ভোট নিজে দিবে। ’৯১-এর মতো একটা ভোট করবো। আমরা রাজনৈতিক দলগুলো হাসিনার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে ১৬ বছরের মধ্যে ৯ বছর যারা জেল খেটেছি, গুলি খেয়ে হাসপাতালে ছিল, গুম-খুন হয়েছে, তাদের ইচ্ছা এই নোবেল বিজয়ীর হাতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন।

ফারুক বলেন, ৫ আগস্টের আগে যেসব ব্যবসায়ীয়া শেখ হাসিনার গুনগান গেয়েছে তারা এখন কোথায়। জনগণ জানতে চায়। শুধু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগে হবে না, সমস্যার সমাধান হবে একমাত্র জনপ্রতিনিধির সরকারের মাধ্যমে। সমস্যার সমাধান হবে দিনের ভোট দিনে হলে। ১৬ বছর ধরে হাসিনার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আন্দোলন করে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে  
বিজয় এনেছি, তাদের রক্তের শপথ করে বলতে চাই; বিলম্ব না করে নির্বাচন দেন। বিলম্ব করলে আপনার থেকে এই সমর্থন মানুষ প্রত্যাহার করে নিবে। 


বিজ্ঞাপন


আলোচনা সভায় সরকারের উদ্দেশে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ বলেন, সংস্কার সংস্কার বলে নির্বাচন বন্ধ করে দেবেন না। সমস্ত ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে নির্বাচন দিতেই হবে। যে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল কোটা সংস্কার, আর তারেক রহমানের দাবি ছিল যতক্ষণ পর্যন্ত স্বৈরাচার হাসিনার পতন না হবে ততক্ষণ আন্দোলন চলবে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা পুলিশের সঙ্গে আপস-ফর্মুলায় চলে গিয়েছিল। কিন্তু তারেক রহমান আপস-ফর্মুলা মানেননি। তার নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

আলোচনা সভায় সামাজিক পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার চেয়ারম্যান লায়ন এইচ এম ইব্রাহিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও দৈনিক ভোরের ডাকের চিফ রিপোর্টার সুজন দে’র  সঞ্চালনায় আলোচনা সভায়  হিন্দু মহাজোটের সহ-সভাপতি তরুণ কুমার ঘোষ, অ্যাডভোকেট আবু সুফিয়ান, এসএম জহিরুল ইসলাম, সামির হোসেন সোহাগ, রেজাউল করিম ভূঁইয়াসহ সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

এমই/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন