মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

যাত্রীদের চাপ নেই কল্যাণপুর ও গাবতলিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০১:১৩ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত সোমবার (২৪ মার্চ) থেকে শুরু হয়েছে, ট্রেনের ঈদযাত্রার টিকিট বিক্রি। সেই হিসেবে অনেকে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে ইতোমধ্যে। ফলে, বাড়ি ফেরা যাত্রীদের কিছুটা ভিড় দেখা গেছে রাজধানীর রেলস্টেশনগুলোতে। তবে, এই সময়ে রাজধানীর কল্যাণপুর ও গাবতলি বাসস্ট্যান্ডে অনেকটা ফাঁকা দেখা গেছে। চাপ নেই যাত্রীদের। সাধারণত ঈদের সময় এই দুটি স্ট্যান্ডে যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় থাকে, কিন্তু এবছর অনলাইনে টিকিট বিক্রি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের উপস্থিতি অনেকটাই কম।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কল্যাণপুর এবং গাবতলির প্রায় সব বাস কাউন্টারই ফাঁকা ছিল। কল্যাণপুরের এসআর পরিবহনের সেলস অফিসার মো. ঢাকা মেইলকে জানান, ‘অনলাইনে টিকিট বিক্রির কারণে কাউন্টারগুলোর সামনে যাত্রীদের উপস্থিতি অনেকটাই কমেছে। তবে, যাত্রীরা এখনও নিজেদের যাত্রা নিশ্চিত করছেন এবং বাড়ি ফিরছেন।’ তিনি আরও জানান, আজকাল বেশিরভাগ যাত্রীই অনলাইনে টিকিট কেটে সোজা বাসে উঠছেন, তাই কাউন্টারে আসতে হচ্ছে না।


বিজ্ঞাপন


কল্যাণপুরের শ্যামলী এনআর পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার কিশোর কুমার জানান, ‘ঈদের ছুটির দীর্ঘ সময়ের কারণে যাত্রীরা ধাপে ধাপে বাড়ি ফিরছেন, তাই এখন কাউন্টারগুলোতে তেমন চাপ নেই। তবে আগামী বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) থেকে যাত্রীদের চাপ বৃদ্ধি পাবে এবং তখন পরিস্থিতি অনেকটা পরিবর্তিত হবে।’

ঈদ উপলক্ষে টিকিটের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, ‘টিকিটের দাম সরকার নির্ধারিত রেখেছে, তবে মালিক পক্ষ কিছু ছাড় দিতে পারলেও যাত্রীদের কাছে টিকিটের দাম ৩০-৫০ টাকা বাড়ানো মনে হতে পারে।’

রংপুরগামী যাত্রী নকিব রহমান বলেন, ‘আমি ১০ দিন আগেই অনলাইনে টিকিট কেটেছি, তাই কাউন্টারে আসতে হয়নি। ফলে সময়, টাকা এবং পরিশ্রম বাঁচিয়েছে। রাস্তায় তেমন জ্যাম না থাকলে, আশা করি সহজেই বাড়ি পৌঁছাতে পারব।’

গাবতলির এক বাস ড্রাইভার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘আমাদের জন্য কিছু বাস সংরক্ষিত থাকে, যেগুলোর টিকিট অনলাইনে পাওয়া যায় না। এ ধরনের বাসের টিকিট ব্লাক মার্কেটে বা অফলাইনে বিক্রি হয় এবং এর দামও কিছুটা বেশি থাকে।’


বিজ্ঞাপন


এছাড়া, গাবতলির শ্যামলী এসপি বাসের যাত্রী সুমাইয়া বলেন, ‘এই বাসের সার্ভিস খুবই খারাপ। আমরা মিনি বাসে চড়ে এখানে এসেছি এবং বাসের হেলপারও ছিল না। বাসে ওঠার সময় যাত্রীদের নিজেদের মালামাল তুলতে হয়েছে। এমনকি বাস থেকে নামানোর সময়ও সাহায্য পাওয়া যায়নি। টিকিটের দাম তো বেশি নেয়া হয়, কিন্তু সেবা পাওয়া যায় না।’

এদিকে, ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করা বাসগুলোর ভাড়া কিছুটা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের জন্য বর্তমানে বাস ভাড়া হলো—

ঢাকা টু বগুড়া: নন এসি বাসের ভাড়া ৫৫০ টাকা, ইকোনমি এসি ১২০০ টাকা, বিজনেস ক্লাস এসি ১৪০০ টাকা, হুদাই ১৭০০ টাকা।

ঢাকা টু নওগাঁ: নন এসি বাসের ভাড়া ৬৮০ টাকা, ইকোনমি এসি ১৩০০ টাকা, হুদাই ২০০০ টাকা।

ঢাকা টু হিলি: নন এসি বাসের ভাড়া ৭৫০ টাকা, ইকোনমি এসি ১৫০০ টাকা, হুদাই ২০০০ টাকা।

ঢাকা টু গাইবান্ধা: নন এসি বাসের ভাড়া ৭৫০ টাকা, বিজনেস ক্লাস এসি ১৬০০ টাকা।

ঢাকা টু রংপুর: নন এসি বাসের ভাড়া ৮৬০ টাকা, ইকোনমি এসি ১৬০০ টাকা, হুদাই ২৪০০ টাকা।

তবে, এবারের ঈদযাত্রার মধ্যে কল্যাণপুর ও গাবতলির বাস স্ট্যান্ডে যাত্রীদের উপস্থিতি কম হলেও, অনলাইনে টিকিট বিক্রির কারণে যাত্রীরা কম সময় ও ব্যয় করে তাদের যাত্রা নিশ্চিত করছেন। আগামী কয়েকদিনে, বিশেষ করে বৃহস্পতিবার থেকে যাত্রীদের চাপ আরও বাড়বে এবং সেই অনুযায়ী বাস পরিবহন ব্যবস্থাও আরও ব্যস্ত হয়ে পড়বে।

এমএইচএইচ/এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন


News Hub