আজ নিয়মিত ট্রেন চলাচলের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে খুলছে যমুনা রেল সেতু। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সকালে সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ এম মাসুদুর রহমান।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, সেতুটি উদ্বোধনের ফলে রেলপথের মাধ্যমে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ঢাকা ও অন্যান্য অংশের সাথে সংযুক্ত হবে।
বিজ্ঞাপন
প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ এম মাসুদুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় শুরু হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং এ জন্য সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। উদ্বোধনের পর উভয় দিক থেকে সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচল করবে।
৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারের এ সেতু ব্যবহার করে গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এদিন রাজশাহী থেকে সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে যমুনা রেল সেতু পার হয়ে ঢাকায় পৌঁছায়।
পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর সময় একটি ট্রেন ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে সেতুটি অতিক্রম করে। দেশের দীর্ঘতম এই রেল সেতুর উপর দিয়ে দৈনিক ৮৮টি ট্রেন দ্রুতগতিতে চলাচল করতে পারবে। সেতুটি ৫০টি পিলার এবং ৪৯টি স্প্যানের ওপর নির্মিত।
মাসুদুর রহমান বলেন, অত্যাধুনিক ইস্পাত প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্মিত এ সেতুর স্থায়িত্ব ১০০ বছর। এই কাঠামোটি বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রমাণ।
বিজ্ঞাপন
সেতুটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হবে সকাল ১০টায় পূর্ব ইব্রাহিমাবাদ স্টেশনে। এতে অংশ নেবেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব এম ফাহিমুল ইসলাম, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক এম আফজাল হোসেন, ঢাকায় নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি এবং জাপানের বৈদেশিক উন্নয়ন সংস্থা জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক মহাপরিচালক ইতো তেরুয়ুকি।
অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে, উদ্বোধনী ট্রেনের অতিথি ও সংশ্লিষ্টরা সকাল ১১টা ২০ মিনিটে পূর্ব ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন থেকে সেতু পার হয়ে সিরাজগঞ্জের পশ্চিম প্রান্তে সায়েদাবাদ রেলওয়ে স্টেশনে যাবেন। আর দুপুর ১২টায় ফিরে আসবেন পূর্ব প্রান্তে ইব্রাহিমাবাদ স্টেশনে।
১৯৯৮ সালে যমুনা বহুমুখী সেতু উদ্বোধনের পর থেকে প্রায় ৩৮টি ট্রেন প্রতিদিন তুলনামূলকভাবে ধীর গতিতে যাতায়াত করছে। এটি ঢাকাসহ বাংলাদেশের মূল অংশকে উত্তর, উত্তর-পশ্চিম, দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সাথে সংযুক্ত করেছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, যমুনা রেল সেতু পার হতে ট্রেনের আগের তুলনায় কম সময় লাগবে। এতে উভয় দিকে সময় সাশ্রয় হবে।
রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, ২০২০ সালে যমুনা নদীর ওপর একটি ডেডিকেটেড রেল সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। একই বছরের ২৯ নভেম্বর সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা। এর ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ ঋণ হিসেবে দিয়েছে জাইকা। আর বাকি অর্থ দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। জাপানের ওটিজি এবং আইএইচআই যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণ করেছে। সূত্র: বাসস
/এফএ