রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তায় কাজ করছে সেনাবাহিনী: সেনাসদর

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১০ পিএম

শেয়ার করুন:

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তায় কাজ করছে সেনাবাহিনী: সেনাসদর
সংবাদ সম্মেলনে সেনা কর্মকর্তা। ছবি: সংগৃহীত

প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর সারাদেশে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেছে সরকার। এর অংশ হিসেবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বা কেপিআইতে হামলা-নাশকতা প্রতিরোধ এবং নিরাপত্তা বিষয়ে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনী কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সেনাসদরের কর্নেল-স্টাফ কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে সেনাসদর আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন। ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায় মোতায়েন করা সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।


বিজ্ঞাপন


সচিবালয়ে আগুন ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তার বিষয়ে ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, তদন্ত করে সচিবালয়ের আগুনের বিষয়ে বলা যাবে। তবে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার (কেপিআই) নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই সেনাবাহিনীর দায়িত্বভুক্ত। সেনাবাহিনী মোতায়েনের পর থেকেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতিটি হুমকি পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সেনাবাহিনী কত দিন মাঠে দায়িত্ব পালন করবে, সেটা সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয় উল্লেখ করে কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তে সেনাবাহিনী শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে। সুতরাং সরকারের সিদ্ধান্তেই সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করা হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় চাপ নেওয়ার জন্যই সেনাবাহিনী প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তবে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বিতভাবে সেনাবাহিনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।

কক্সবাজার এলাকায় নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে কি না–এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সার্বভৌমত্বের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ঝুঁকি এই মুহূর্তে নেই। সেনাবাহিনী সবসময় ওই এলাকায় সতর্ক অবস্থায় কাজ করছে। যদি কখনও ঝুঁকি আসে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে সেনাবাহিনী প্রস্তুত। তা ছাড়া রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে বিজিবি, কোস্টগার্ডসহ অন্যান্য বাহিনী কাজ করছে।

বান্দরবানে ত্রিপুরাদের ওপর হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তিনি বলেন, এটা জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের জেরে হয়েছে। অন্য কোনো কারণ ছিল না।


বিজ্ঞাপন


Fire-Gov
সচিবালয়ে আগুনে ক্ষতি হয় পাঁচ মন্ত্রণালয়ের। ছবি: সংগৃহীত

সেনা কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে (গাজীপুর, আশুলিয়া, সাভার) ৬৭টি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে ১৩ বার মূল সড়ক অবরোধ নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ভূমিকা রেখেছে এবং কারখানাগুলোকে চালু রাখার জন্য মালিকপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, শিল্পাঞ্চল পুলিশ, বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ফলে বর্তমানে দেশের দুই হাজার ৯৩টি গার্মেন্ট কারখানার মধ্যে একটি ছাড়া সবই চালু রয়েছে।

তিনি জানান, শিল্পাঞ্চল ছাড়াও সেনা সদস্যরা বিগত এক মাসে ৪৫টি বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। যার মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত ঘটনা ছিল পাঁচটি, সরকারি সংস্থা বা অফিস সংক্রান্ত তিনটি, রাজনৈতিক কোন্দল সাতটি এবং অন্যান্য ঘটনা ছিল ৩০টি। এ ছাড়া ১৯ ডিসেম্বর কেরানীগঞ্জে রূপালী ব্যাংকে ডাকাতি চেষ্টার ঘটনায় সেনা সদস্যরা পুলিশকে প্রত্যক্ষ সহায়তা প্রদান করে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের সুচিকিৎসায় সেনাবাহিনী মোট তিন হাজার ৫৮৯ জনকে সেবা দিয়েছে। বর্তমানে ৩৬ জন এখনো চিকিৎসাধীন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন অসুস্থ হয়ে রংপুর সিএমএইচে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ১০ ডিসেম্বর তাঁকে ঢাকা সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। তিনি বর্তমানে ঢাকা সিএমএইচের এইচডিইউতে চিকিৎসাধীন।

জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর