রমজানে দীর্ঘসময় পানাহার থেকে বিরত থাকে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। প্রায় ১৩ ঘণ্টা না খেয়ে থাকার পর ক্লান্তি লাগাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই ক্লান্তি যেন বহুগুণ বেড়ে যায় ইফতার পেটে যাওয়ার পর। সারাদিন অভুক্ত থাকার পর পেটে খাবার গেলে চাঙ্গা লাগার কথা। কিন্তু ইফতারের পর ক্লান্ত লাগে কেন? চলুন এই প্রশ্নের উত্তর জানা যাক-
আরও পড়ুন- ইফতারে কী খাবেন, কী খাবেন না
দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকার পর যখন আমরা খাই, সেই খাবারকে বিভক্ত করে লিভারের কাছে পৌঁছে দিতে অন্ত্রের অনেক বেশি রক্তের প্রয়োজন হয়। তাই রক্তের ওপর বেশি চাপ পড়ে। ফলে সেসময় রক্তচাপ কমে গিয়ে শরীর ক্লান্ত বোধ করে এবং ঘুম পায়।

অনেক সময় টানা না খেয়ে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই বডি গ্লুকোজ রিজার্ভ ও সঞ্চিত শক্তি ভান্ডার ফুরিয়ে আসে। ফলে শেষ বেলায় বডি শুধু বিএমআর মেইন্টেইন করার এনার্জি রাখে। ঠিক তখন আমরা যখন ইফতার করি তখন আমরা শক্তি উৎপাদনের জন্য বেশি করে প্রোটিন জাতীয় খাবার খাই।
আরও পড়ুন- ইফতারে যা খেলে দ্রুত শক্তি মেলে
খাবার খাওয়ার পর তা এনার্জি তে রূপান্তরিত হতে গেলে শরীরের নিজস্ব কিছু এনার্জি খরচ হয়। যেমন- ১০০ কিলোক্যালরি এনার্জি বানাতে কার্বোহাইড্রেটে ৭ কিলোক্যালোরি, ফ্যাটে ১২ কিলোক্যালরি এবং প্রোটিনে ৩০ কিলোক্যালরি শরীরের এনার্জি লস হয়।

শরীরের প্রি-এক্সিসটিং এনার্জি থেকে এটি খরচ হয়। অর্থাৎ আগে থেকে সঞ্চয় করা শক্তি খরচ করে শরীর খাবারকে শক্তিতে রূপান্তর করে। একে ‘স্পেসিফিক ডাইনামিক অ্যাকশন’ বলে। নেগেটিভ ব্যালেন্স অব এনার্জি অ্যাসিমিলেশন পর্যন্ত এটি চলতে থাকবে। অর্থাৎ খাবার হজম না হওয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।
অন্যদিকে অতিরিক্ত খাদ্য পাকস্থলী তে চলে আসলে আমাদের শরীরের স্প্ল্যাংনিক সার্কুলেশন অনেক বেড়ে যায়। ফলে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমে যায়। তাই ঘুম ঘুম ভাবও হয়।

ইফতারের পর ক্লান্তি এড়াতে একসঙ্গে অনেক খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে সময় নিয়ে খান। পানি, খেজুর, ফল, পানীয়, দই-চিড়া ইত্যাদি দিয়ে ইফতার সারতে পারেন। এরপর নামাজ পড়ে অন্যকিছু খাবেন। এতে ক্লান্তি কম লাগবে।
এনএম

