শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

মরক্কোয় মুসলিম জনসংখ্যা কত?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:১৭ এএম

শেয়ার করুন:

মরক্কোয় মুসলিম জনসংখ্যা কত?

শক্তিশালী পর্তুগালকে ১-০ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে মরক্কো। চলতি বিশ্বকাপে মরক্কোর রূপকথা ফুটবলপ্রেমীদের মন্ত্রমুগ্ধ করে চলেছে। এটি মন ছুঁয়ে গেছে আরব বিশ্বের। একমাত্র মুসলিম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যাওয়ায় মরক্কোকে নিয়ে খুশি মুসলিম বিশ্বও।

মরক্কো উত্তর আফ্রিকার একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। এর রাজধানীর নাম রাবাত। দেশটি আটলান্টিক মহাসাগরের তীরবর্তী এবং উত্তরে ভূমধ্যসাগরের জিব্রাল্টার প্রণালী পর্যন্ত বিস্তৃত। মরোক্কোর পূর্বে আলজেরিয়া, উত্তরে ভূমধ্যসাগর ও স্পেন এবং পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর অবস্থিত। দেশটির দক্ষিণ দিকের সীমানাটি বিতর্কিত। 


বিজ্ঞাপন


মরোক্কো পশ্চিম সাহারার মালিকানা দাবি করে এবং ১৯৭৫ সাল থেকে দেশটি পশ্চিম সাহারার অধিকাংশ এলাকা নিজের দখলে রেখেছে। মরক্কো একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের দেশ। এটি একমাত্র আফ্রিকীয় দেশ, যা আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য নয়। তবে দেশটি আরব লীগ, আরব মাঘরেব ইউনিয়ন, ওআইসি, গ্রুপ অফ ৭৭ ইত্যাদি জোটের সদস্য এবং ন্যাটোর মিত্র দেশ।

মরক্কো ফরাসি উপনিবেশ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে ১৯৫৬ সালে। বাদশা দ্বিতীয় হাসান সিংহাসনে বসেন ১৯৬১ সালে এবং ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত শাসনকার্য চালান। ১৯৯৯ সালে বাদশা ষষ্ঠ মুহাম্মদ ক্ষমতায় আসীন হন। তিনি তার আধুনিক চিন্তাধারার জন্য পরিচিত। ২০১০ সালের আরব বসন্ত দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জনগণের চাপের মুখে একটি নতুন সংবিধানের সূচনা হয় যাতে সংসদ ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বাড়ানো হয়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সাদ ইদ্দিন এলওসমানি ২০১৭ সালে বাদশাকর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত হন এবং ৬ দলীয় কোয়ালিশন সরকার গঠন করেন। এর আগে তার পূর্বসূরী আবদেলিলাহ বেনকিরান সরকার গঠনে ব্যর্থ হন।

মরোক্কো আটলান্টিক মহাসাগর তীরবর্তী একটি দেশ যার উত্তরে ভূমধ্যসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগর সংযোগকারী জিব্রাল্টার প্রণালী অবস্থিত। এর উত্তরে স্পেনের জলসীমা, পূর্বে আলজেরিয়া এবং দক্ষিণে পশ্চিম সাহারা অবস্থিত। পশ্চিম সাহারা মরোক্কো ও মৌরিতানিয়ার একটি অমিমাংসিত সিমান্ত অঞ্চল যার পুরোটাই মরোক্কোর দখলে।

মরোক্কোর জনসংখ্যা ৩ কোটি ৭৪ লাখের বেশি। এর মধ্যে ৯৯ শতাংশ মানুষ সুন্নি মুসলিম। খুব সামান্য কিছু মানুষ শিয়া। জনসংখ্যার ১ শতাংশেরও কম গঠিত গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে খ্রিস্টান, ইহুদি এবং বাহাই ধর্মের মানুষ রয়েছে।


বিজ্ঞাপন


morocco muslim

মরক্কোর অর্থনীতিকে একটি অপেক্ষাকৃত উদার অর্থনীতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা যোগান ও চাহিদার আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। ১৯৯৩ সাল থেকে দেশটি কিছু অর্থনৈতিক খাতকে বেসরকারিকরণের নীতি অনুসরণ করেছে। মরক্কো আফ্রিকার অর্থনীতির প্রধান শক্তি হয়ে উঠেছে। জিডিপি (পিপিপি) অনুসারে এটি আফ্রিকার পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি । ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের জীবন মানের সূচকে দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে মরক্কোকে প্রথম আফ্রিকীয় দেশ হিসেবে স্থান দেওয়া হয়েছে।

পর্যটন মরক্কোর অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। মরোক্কোতে আসা বেশিরভাগ পর্যটক সাধারাণত ইউরোপীয় এবং সমস্ত পর্যটকের প্রায় ২০% ফরাসী নাগরিক। বেশিরভাগ ইউরোপীয় মরক্কোয় এপ্রিল থেকে আগস্টের মধ্যে ভ্রমণ করে। মরক্কোতে তুলনামূলকভাবে বেশি সংখ্যক পর্যটক আসা তার অবস্থানে কারণে হয়েছে; মরক্কো ইউরোপ মহাদেশের কাছাকাছি অবস্থিত এবং দেশটির দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত রয়েছে।

ফ্রান্স-ইংল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে শেষ হয়েছে কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াই। এবার তিনদিন বিরতি রেখে মাঠে গড়াবে সেমিফাইনালের ম্যাচ। যার প্রথমটিতে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা ও ক্রোয়েশিয়া। ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় মাঠে নামবে এই দুই দল। এর পরদিনই দ্বিতীয় সেমিফাইনালে লড়বে ফ্রান্স ও মরক্কো। ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় প্রথমবারের মতো শেষ চারে উঠা আফ্রিকার দলটির বিপক্ষে নামবে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স।

বিশ্বের বিখ্যাত মুসলিম পর্যটক ইবনে বতুতার জন্ম মরক্কোতে। তিনি সারা জীবন এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছেন। পৃথিবী ভ্রমণের জন্যই তিনি মূলত বিখ্যাত হয়ে আছেন। একুশ বছর বয়স থেকে শুরু করে জীবনের পরবর্তী ৩০ বছরে তিনি প্রায় ৭৫ হাজার মাইল (১ লাখ ২১ হাজার কিমি) পথ পরিভ্রমণ করেছেন। তিনিই একমাত্র পরিব্রাজক যিনি তার সময়কার সমগ্র মুসলিম বিশ্ব ভ্রমণ করেছেন এবং তৎকালীন সুলতানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। 

বর্তমান পশ্চিম আফ্রিকা থেকে শুরু করে মিশর, সৌদি আরব, সিরিয়া, ইরান, ইরাক, কাজাকিস্তান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং চীন ভ্রমণ করেছিলেন ইবনে বতুতা।

সূত্র: টিআরটি, ফিফা, উইকিপিডিয়া

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর