শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

৩৬ শতাংশ মানুষ নিজ দেশ ছেড়ে বিদেশে যেতে চান

ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:৫৮ পিএম

শেয়ার করুন:

৩৬ শতাংশ মানুষ নিজ দেশ ছেড়ে বিদেশে যেতে চান

বিশ্বের সব মানুষই উন্নত জীবনযাপনের প্রত্যাশা করেন। তাই নিজ দেশে ছেড়ে পাড়ি জমাতে চান অন্য দেশে। বিশ্ব জনমত জরিপ সংস্থা গ্যালাপ ইন্টারন্যাশনালের এক জরিপে বলা হয়, বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ মানুষ উন্নত জীবনমানের খোঁজে নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যেতে আগ্রহী। ৩৬ শতাংশ মানুষ দেশত্যাগ করতে চান। পৃথিবীর ৫৭টি দেশে জরিপ পরিচালনা করে এই তথ্য জানায় সংস্থাটি।

অভিবাসনের কারণ


বিজ্ঞাপন


গ্যালাপ ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট কাঞ্চো স্টয়চেভের মতে, বিভিন্ন কারণে মানুষ স্থানান্তরিত হয়। একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় অভিবাসন স্বাভাবিক এবং ইতিবাচক বলে মনে করেন তারা।

স্টয়চেভ বলেন, ‘আমাদের জরিপে দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী গড়ে প্রায় এক তৃতীয়াংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ দেশ ছাড়তে চায়। বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে এটি সম্ভবত স্বাভাবিক।’

আরও পড়ুন: অভিবাসী কারা?

প্রতিষ্ঠানটির আগের গবেষণার সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, মানুষের মধ্যে দেশত্যাগের প্রবণতা কিছুটা বেড়েছে। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানটি। তাদের মতে, বিশ্বের অনেক দেশের দরিদ্র ব্যক্তিরা, বিশেষ করে তথাকথিত উন্নয়নশীল বিশ্বের দরিদ্র জনগোষ্ঠী দেশ ছাড়তে মরিয়া। ওই দেশগুলোর বিত্তবানেরাও নিজে দেশকে দক্ষতা বিকাশে যথেষ্ট বলে মনে করেন না।


বিজ্ঞাপন


গ্যালাপ প্রেসিডেন্ট এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘নিম্ন আয়ের দেশের মানুষ অভিবাসন প্রত্যাশী। কারণ, তারা জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন চায়। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে সে বর্তমানে খারাপ আছে বলেই শুধু উন্নত জীবনের আশা করছে। প্রকৃতপক্ষে মানুষ তুলনা করতে পছন্দ করে।’

immigrant

ইউরোপে অভিবাসন ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ

গ্যালাপের জরিপে দেখা গেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর চেয়ে বাইরের দেশের মানুষ অভিবাসনে আগ্রহ বেশি। দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দরিদ্রতম দেশগুলোর একটি মলদোভা। ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে সবচেয়ে বেশি হুমকিতে রয়েছে দেশটি। কিন্তু গ্যালপের জরিপ বলছে, দেশটির মোট জনসংখ্যার ২৩ শতাংশ দেশ ছাড়তে চায়। অন্যদিকে, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার ৪৮ শতাংশ এবং উত্তর মেসিডোনিয়ার ৪২ শতাংশ মানুষ দেশ ছাড়তে আগ্রহী।

আরও পড়ুন: যেসব দেশে বিনা খরচে পড়তে যাওয়া যায়

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পর থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রাশিয়ার অভিবাসীদের দেখা যাচ্ছে। তারা জানান, তারা যুদ্ধ চান না। গণতান্ত্রিক, উন্মুক্ত সমাজ প্রত্যাশা করেন। কিন্তু গ্যালপের জরিপ বলছে, ১৫ শতাংশ রাশিয়ান নাগরিক অভিবাসনে আগ্রহী।

immigrantএশিয়ার অভিবাসন

ইউরোপের অধিকাংশ দেশের তুলনায় অর্থনৈতিকভাবে তেমন শক্তিশালী নয় এশিয়ার দেশগুলো। তাই এশিয়া থেকে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চায় অনেক অভিবাসন প্রত্যাশীরা। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্য প্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশ। কিন্তু ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে ভারত ও ভিয়েতনামে মতো দেশেও অভিবাসন প্রত্যাশী মানুষের সংখ্যা কম বলে উঠে এসেছে গ্যালপের জরিপে।

আরও পড়ুন: চমৎকার কর্মক্ষেত্রের সেরা ২০ দেশ

প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট স্টয়চেভ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘গত এক দশকে এই দুটি দেশ ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। একটি সফল দল ছেড়ে যাওয়ার ইচ্ছা কখনও খুব বেশি হয় না।’

immigrantবাংলাদেশের অভিবাসন

স্বল্পোন্নত দেশের তকমা ছেড়ে আজ উন্নয়নশীল বাংলাদেশ। বাড়ছে জীবনযাত্রার মানও। তবুও বাংলাদেশি তরুণদের মাঝে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। এই বিষয়ে ১৭ থেকে ২৮ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়। জরিপে অংশ নেওয়াদের মধ্যে ৭৫ শতাংশই জানান, তারা দেশের বাইরে চলে যেতে ইচ্ছুক। এদের মধ্যে ৮২ শতাংশ শিক্ষার্থী স্থায়ীভাবেই চলে যেতে চান।

আরও পড়ুন: বিদেশে চাকরি পাওয়ার উপায়

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আশ্রয়প্রার্থীবিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে ২০ হাজার মানুষ ইউরোপের দেশগুলোয় যাওয়ার আবেদন করেছেন।

বর্তমানে অন্যান্য উন্নয়নশীল ও নিম্ন আয়ের অধিকাংশ দেশের অভিবাসন প্রত্যাশীদের চিত্র প্রায় একইরকম। উন্নত জীবনযাত্রা, নিরাপত্তা, বিভিন্ন সঙ্কট ইত্যাদি অভিবাসন প্রত্যাশীদের প্রধান কারণ।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে ও ইন্টারনেট

এমএইচটি/এজেড

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর