শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

অন্তহীন সমস্যায় জর্জরিত ঢামেক শিক্ষার্থীদের সঙ্গী ‘মৃত্যুঝুঁকি’

সাখাওয়াত হোসাইন
প্রকাশিত: ২৭ জুন ২০২৫, ১০:০২ পিএম

শেয়ার করুন:

DMC
দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করেন ঢামেক শিক্ষার্থীরা। ছবি: ঢাকা মেইল
  • গণরুমে থাকেন ৭০-৮০ জন শিক্ষার্থী
  • ছাত্রাবাসে মিলছে না ন্যূনতম সুবিধাও
  • পলেস্তারা খসে পড়ে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি
  • শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অচলাবস্থার সৃষ্টি

দেশের শীর্ষ মেডিকেল কলেজগুলো একটি ঢাকা মেডিকেল। এটি শুধু মেডিকেল কলেজ নয়, দেশের চিকিৎসা শিক্ষার আতুরঘরও। এই মেডিকেল থেকে বের হয়েছেন নামকরা সব চিকিৎসকরা। এখান থেকে কেউ কেউ হয়েছেন রাষ্ট্রের অন্যতম নীতিনির্ধারকও। আবার বিদেশের মাটিতেও দেশের নাম উজ্জ্বল করছেন এই মেডিকেলের অনেক শিক্ষার্থী। বিদেশি শিক্ষার্থীরাও এই মেডিকেলের পাঠদানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এখানে চান্স পাওয়া অনেকের জন্য স্বপ্নের মতো।


বিজ্ঞাপন


তবে এত নামডাক থাকার পরও এই ঢাকা মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের সমস্যার যেন কোনো অন্ত নেই। দেশের সেরা মেধাবী শিক্ষার্থীরা এখানে এসে অনেকটা মানবেতর জীবনযাপন করেন। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে ন্যূনতম যে সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার সেটাও অনেকে পায় না। এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা আবাসন সংকট। সেই সংকট দিন দিন শুধু বেড়েই চলেছে। বারবার সরকার পরিবর্তন হয়েছে, এখানকার আবাসন সংকট নিরসনে কেউই আন্তরিকভাবে সচেষ্ট হয়নি। অনেকটা অতিষ্ঠ হয়ে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন। এতে দেশসেরা মেডিকেল কলেজটিতে দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা।

অবহেলিত শিক্ষার্থীরা, ছাত্রাবাসের করুণ অবস্থা

প্রতিনিয়ত মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে ছাত্রাবাসে থাকেন এই মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা। নানা বুঁকি আর দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে ক্লাস করতে হয় তাদের। একাডেমিক বিল্ডিং ও মেডিকেলের দুটি ছাত্রাবাস কোনোটার অবস্থাই ভালো নয়। মাঝে মাঝেই খসে পড়ে পলেস্তারা। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা- এমন শঙ্কা নিয়েই এখানে পড়াশোনা করছেন শিক্ষার্থীরা।  


বিজ্ঞাপন


DMC5
বৃষ্টি হলেই জমে পানি, খসে পড়ে পলেস্তারা। ছবি: ঢাকা মেইল

জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেলে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে দুটি হল- ডা. আব্দুল আলীম হল ও ডা. ফজলে রাব্বি হল। ডা. আলীম হলে রয়েছে তিনটি বিল্ডিং, আর ফজলে রাব্বি হলে রয়েছে একটি মেইন বিল্ডিং আর তিনটি ব্লক। সেইসঙ্গে এমবিবিএসের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে একাডেমিক বিল্ডিং। মেডিকেলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের থাকতে হয় গণরুমে। মেয়েদের পাঁচটি গণরুমে ২০-৪০ জন করে একসঙ্গে থাকতে হয়। আর ছেলেদের একটি গণরুমে থাকেন ৭০-৮০ জন শিক্ষার্থী। একাডেমিক বিল্ডিংয়ের অবস্থাও করুণ। সম্প্রতি এনাটমি বিভাগের শিক্ষকদের ওয়াশরুমের পলেস্তোরা খসে পড়েছে, ভাগ্যক্রমে সে সময় কেউ ছিলেন না ওয়াশরুমে। না হয় ঘটত দুর্ঘটনা।

আরও পড়ুন

আহতদের কাছে ‘জিম্মি’ চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, আতঙ্কে চিকিৎসক-নার্সরা

কোভিড হাসপাতালটি ঘুরে মিলল অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার নানা চিত্র

সরেজমিন ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থাতে রয়েছে ডা. ফজলে রাব্বি হলের মেইল বিল্ডিং ও ডা. আলীম হল। ডা. ফজলে রাব্বি হলে প্রতিনিয়ত খসে পড়ছে পলেস্তারা, কখনো কখনো পলেস্তারা ভেঙে বেডে ও পড়ার টেবিলে পড়ে। সবচেয়ে বেশি নাজুক ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে রয়েছে চতুর্থ তলার ৩৬টি রুম। এর মধ্যে ১০টি এমন পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে, যেখানে সিট বরাদ্দ দেওয়ার মতো সাহস পায়নি মেডিকেল কলেজ প্রশাসন। আর ২৬টি রুমে ১৭২ জন শিক্ষার্থীকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। চার তলা বিশিষ্ট মেইন বিল্ডিংয়ের প্রতিটি ফ্লোরের চার ব্লকে রয়েছে ৩৬টি করে রুম। এরমধ্যে সবচেয়ে করুণ পরিস্থিতি চতুর্থ তলার। রাতেও ভালো করে ঘুমাতে পারেন না চতুর্থ তলার শিক্ষার্থীরা, সেখানে থাকে তীব্র গরম। সেইসঙ্গে চতুর্থ তলার প্রতিটি রুমই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। মাঝে মধ্যেই খসে পড়ে সিমেন্ট আর পলেস্তারা। মাঝে মাঝে পানির লাইনে থাকে লিকেজ, আসে ময়লা পানি। ওয়াশরুমগুলোর অবস্থাও খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, মাঝে মাঝে শিক্ষার্থীদের গায়ে পড়ে বালু, খসে পড়ে পলেস্তারা।

মেয়েদের ডা. আলীম ছাত্রীনিবাসের  অবস্থাও খারাপ। প্রায় সময় ভেঙে পড়ে পলেস্তারা, দেখা যায় রড। ভেঙে পড়ে রুমের ফ্যানও। বিল্ডিংগুলোর বিভিন্ন জায়গায় ধরেছে ফাটল। ভঙ্গুর ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে দেয়াল। কোনো কোনো পিলারের অবস্থা এমন করুণ যে, রড দেখা যায়, নেই রড-সিমেন্টের আস্তরণ। প্রায়ই ছাদ আর বিম থেকে খসে পড়া ইটের টুকরো, ভবনের জরাজীর্ণ কাঠামো আর ফাটলধরা ছাদ ঢাকা মেডিকেলের ছাত্রীদের ওপর পড়ে। যা যেকোনো সময় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। বৃষ্টি হলে পানি দিয়ে ভিজে থাকে রুমের দেয়াল এবং পুরো বিল্ডিংয়ে রয়েছে বৈদ্যুতিক ঝুঁকি। সেইসঙ্গে ছাত্রাবাস ও মেডিকেলের ড্রেনেজ সিস্টেমের পরিস্থিতিও করুণ। বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানিতে ভরে যায় মেডিকেল ও ছাত্রীনিবাস প্রাঙ্গণ, মনে হবে- এ যেন কোনো নদী! বৃষ্টির সময় শিক্ষার্থীদের কষ্ট বেড়ে যায় কয়েক গুণ। ছাত্রীনিবাস ও একাডেমিক বিল্ডিংয়ের রাস্তায় জমা হয় পচা ময়লা পানি। সেইসঙ্গে বাড়ে বৃষ্টি পরবর্তী মশার উপদ্রব।

DMC2
নানা সময় খসে পড়া পলেস্তারা। ছবি: ঢাকা মেইল

কষ্টে কাটে শিক্ষার্থীদের দিন

প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের থাকতে হয় গণরুমে। ছেলেদের একটি গণরুমে থাকতে হয় ৭০-৮০ শিক্ষার্থীকে। আর মেয়েদের গণরুমে রুমভেদে একসঙ্গে থাকেন ২০-৪০ জন পর্যন্ত। থাকে না কোনো টেবিল বা জামা-কাপড় রাখার বিশেষ ব্যবস্থা। গণরুমে হাঁটাচলা করতেও কষ্ট হয় শিক্ষার্থীদের। মাঝে মাঝে মোবাইল ফোন ও জুতা চুরির ঘটনা ঘটে। কোনো রকম কষ্টে পার করতে হয় প্রথম বর্ষের দিনগুলো। এরপর দ্বিতীয় বর্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের রুমে সিট দেওয়া হয়। সেখানেও থাকতে হয় কষ্ট করে। দুজনের রুমে থাকেন তিনজন, তিনজনের রুমে চারজন।

নামে প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘প্রতিদিন কাটে ভয়ে আর কষ্টে। না জানি কোন সময় বিল্ডিং ভেঙে পড়ে! বিল্ডিংগুলো ৫০-৬০ বছর আগের। একেকটা গণরুমে প্রচণ্ড দম বন্ধকর অবস্থায় থাকতে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের। কোথাও যাওয়ার উপায়ও থাকেন না। অনেকেরই ঢাকায় কেউ থাকে না, বাধ্য হয়ে থাকতে হয় গণরুমে। অন্যদিকে থাকে পড়াশোনার চাপ। আর গণরুমে নেই নিরাপত্তা। গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র প্রায়ই হারিয়ে যায়।’

এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘ভবনের অবস্থা এতটাই করুণ যে, প্রায়ই দরজা জানালা ভেঙে পড়ে। বেশ কিছু রুম আছে যেখানে চারটা ইটের দেয়াল পর্যন্ত নেই, এক বা একাধিক দেয়াল তৈরি করা হয়েছে হার্ডবোর্ড দিয়ে। সেগুলোও আবার ভাঙাচোরা দশা। তা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা এখানে থাকতে বাধ্য হন। আমরা বারবার জানিয়েছি, তবু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

আরও পড়ুন

নতুন সিদ্ধান্তে ধুঁকতে থাকা রেলওয়ের ১০ হাসপাতালে আস্থা ফিরবে কি?

বাংলাদেশে এসে সার্জারি শিখছেন মালয়েশিয়ান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক!

জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেলের শিক্ষার্থী হালিমাতুস সাদিয়া ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘গণরুমে একসঙ্গে অনেক শিক্ষার্থীকে থাকতে হয়। সেইসঙ্গে দুজনের রুমে তিনজনকে থাকতে হয়। মাঝে মধ্যে দেয়াল খসে পড়ে, ফ্যানও খুলে পড়ে। বিল্ডিংয়ের পিলারগুলোর অবস্থাও নড়েবড়ে। মাঝেমধ্যে প্লাস্টার খসে পড়ে।’

এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘অবকাঠামো নতুন করে নির্মাণ এবং শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা না করলে এই কষ্ট আর দূর হবে না।’

DMC3
ছাত্রাবাসের পরিবেশ ভয়াবহ। ছবি: ঢাকা মেইল

ঢাকা মেডিকেলের শিক্ষার্থী তৌহিদুল আবেদিন তানভীর ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমরা সবাই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে রয়েছি। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমাদের হাতে বিকল্প অপশনও নাই, সবকিছু বিবেচনা করে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে থাকতে হচ্ছে। বিল্ডিংগুলো অনেক পুরনো, যার কারণে ভয়টাও বেশি। আর ছোটখাটো কোনো ভূমিকম্প হলেই বড় ধরনের মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’

আবাসন সংকট চরমে

বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজে আবাসন সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। যার কারণে রুমের মধ্যে গাদাগাদি করে থাকতে হয় শিক্ষার্থীদের। এতে ব্যাঘাত ঘটে পড়াশোনায়ও। এই মেডিকেলের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায় থেকে উঠে আসা, ঢাকায় থাকার জায়গা না থাকায় পড়াশোনার ছাত্রাবাসই তাদের ভরসা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, আবাসন সংকট এতটাই প্রকট যে, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই তাদের বাধ্য হয়ে থাকতে হচ্ছে। মাঝে মধ্যে রুমের পলেস্তারা খসে পড়ায় ব্যাঘাত ঘটে পড়াশোনায়ও।

আরও পড়ুন

সুফল মিলছে না দেড় হাজার কোটি টাকার বিশ্বমানের হাসপাতালটির

কেন বিদেশমুখী বাংলাদেশি রোগীরা?

ঢাকা মেডিকেলের এক নারী শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করে ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘হলের স্থান সংকট এতটাই বেশি যে, ক্যান্টিনের ঠিক উপরে একটি গণরুমে চুলোর গনগনে আঁচে শিক্ষার্থীরা থাকেন। তাদের প্রায় সিদ্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। তা সত্ত্বেও গণরুমটি হলের অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। হলের নেই কোনো  রিডিং রুম। জায়গার অভাবে টিভি রুমকে রিডিং রুমে রূপান্তর করা হয়েছে, তাও সেখানে শখানেক শিক্ষার্থীও একসাথে বসার ব্যবস্থা নেই। অথচ হলের থাকেন কয়েকশ শিক্ষার্থী। হলের অভ্যন্তরে ক্যান্টিনের অবস্থাও ভালো নয়, পঞ্চাশজন সেখানে একসাথে বসতে পারবেন কি না যথেষ্ট সন্দেহ আছে।’

আবাসনের দাবিতে আন্দোলন, অচলাবস্থা

গত ২৮ মে থেকে নিরাপদ আবাসন ও নতুন হল নির্মাণের দাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেন ঢাকা মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা। এরপর তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আন্দোলনে যোগ দেন প্রথম বর্ষের নতুন শিক্ষার্থীরা। গত ১৭ জুন নতুন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টশন থাকলেও তারা তা বর্জন করেন। পরে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ ওরিয়েন্টশন বর্জনের বিষয়টিকে ঢাকা মেডিকেলের ‘কালো অধ্যায়’ হিসেবে অবহিত করে। পরে মেডিকেল বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশনা দেওয়া হয়। অবশ্য সেই নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করেন শিক্ষার্থীরা।

DMC4
ছাত্রাবাসে আবাসন সংকট চরমে। ছবি: ঢাকা মেইল

এর মধ্যেও কোনো ধরনের সাড়া না পাওয়ায় গত ২১ জুন থেকে মেডিকেল ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। ২২ জুন তারা কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিটিং করেন এবং আলটিমেটাম দেন। সেইসঙ্গে ২৩ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারীর সঙ্গে মিটিং করেন শিক্ষার্থীরা। পরে আবার ২৪ জুন মেডিকেলে শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষার্থীরা, তবে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ার আন্দোলনে অটল থাকার ঘোষণা দেন তারা।

এবিষয়ে তৌহিদুল আবেদিন তানভীর বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারীর সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী আমরা শিক্ষকদের সঙ্গে মিটিং করেছি। আমাদের আন্দোলন এখনো বহাল রয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু বিষয় সমাধান আসছে। আমাদের কয়েকটা বিল্ডিং আছে, যেগুলো আগে খালি ছিল না, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ছিলেন, তাদের ইন্টার্ন বিল্ডিংয়ে পাঠানোর পরে সেসব সিট ফাঁকা হয়েছে। সেখানে চার তলার শিক্ষার্থীরা শিফট হচ্ছেন। আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিল নতুন জুনিয়র ব্যাচ। তাদেরও সিট দেওয়া হোক, তারা আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের জন্য বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা করতে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগবে। আর প্রশাসন দুই থেকে তিন মাস কী করবে, সেই উত্তর দিতে পারছে না। আমাদের সঙ্গে কোনো পরিকল্পনাও শেয়ার করেনি। আর প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সিটের ব্যবস্থা হওয়া ছাড়া আমরা ক্লাস করতে পারি না।

জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেলের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারবে মন্ত্রণালয় ও সরকার। আমরাও কাজ করে যাচ্ছি সংকট নিরসনে। শিক্ষার্থীরা মন্ত্রণালয় গিয়েছে। তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা হোক এবং নতুন বিল্ডিং করা হোক। যেটা দীর্ঘ মেয়াদের জন্য ভালো হবে। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা ভালো আবাসনে থাকুক এবং সুন্দরভাবে পড়াশোনা করুক। তাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হোক।’

অধ্যক্ষ বলেন, ‘এখন মেডিকেল কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য মেডিকেলে ক্লাস হচ্ছে নিয়মিত। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আছি, আমরা তাদের ভালো চাই। শিক্ষার্থীরা দ্রুত ক্লাসে ফিরে আসুক।’

এসএইচ/জেবি

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর