বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

পাহাড়ি ঢলে স্বপ্ন ডুবছে কৃষকের

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩ এপ্রিল ২০২২, ০৮:১৬ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলার ইটনার শত শত একর জমির বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। এতে ভেঙে যাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। অথৈ পানির ভেতরে নদীর চর এলাকায় ডুবে থাকা কাঁচা-পাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন কৃষকরা। অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধিতে হাওরের বাঁধে দেখা দিয়েছে ফাটল। তাই ফসল রক্ষা বাঁধ মেরামতের জন্য মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে নিজেদের উদ্যোগে বাঁধ মেরামত শুরু করেছেন স্থানীয়রা।

রোববার (৩ এপ্রিল) ইটনার জিওলের হাওরে দেখা গেছে, কৃষকরা নিজেদের উদ্যোগে বাঁধ মেরামত করছেন। পানি বৃদ্ধির কারণে কৃষকের ধান ঘরে তোলার আগেই পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় হাওর এলাকার কৃষকের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ লক্ষ্য করা গেছে। চোখের সামনে শত শত বিঘার ফসল পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। তবে সেই ফসলের কিছুটা হলেও ঘরে তুলতে নৌকা নিয়ে আধাপাকা ধান কাটার চেষ্টা করছেন কেউ কেউ।


বিজ্ঞাপন


কিশোরগঞ্জ কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব খাসি পাহাড় জেলার চেরাপুঞ্জি শহরে অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে। এতে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় সেই পানি প্রবল বেগে সুনামগঞ্জে ঢুকছে। এরপর তা নদী দিয়ে কিশোরগঞ্জের ইটনা হাওরে প্রবেশ করছে।

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ইটনা উপজেলার হাওরের প্রায় ২০০ একর জমির বোরো ধান পানিতে নষ্ট হয়েছে। তবে এখনও বিস্তীর্ণ হাওরে পানি প্রবেশ না করলেও পানিতে তলিয়ে গেছে নদীর পাড়ের চরাঞ্চলের ফসলগুলো।

স্থানীয় কৃষক শামসুল ইসলাম জানান, তিনি ৪৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে জমিতে ধান লাগিয়েছেন। এখন উজানের পানিতে সেই জমিগুলো তলিয়ে গেছে। তলিয়ে যাওয়া ধান কেটে ঘরে তুলবেন সেই পরিস্থিতিও নেই। কারণ ধানগুলো পাকেনি৷ এরপরও তিনি কাঁচা ধান কাটার চেষ্টা করছেন বলেও জানান। 

রমজান নামে এক কৃষক জানান, এখনও ধান কাটার মতো অবস্থা হয়নি তার। হঠাৎ করে পানি আসায় ধান তালিয়ে গেছে। তাই সকাল থেকে শ্রমিক নিয়ে কাঁচা ধানই কাটার চেষ্টা করছেন।


বিজ্ঞাপন


ইটনা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান শফিকুল ইসলাম সোহাগের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় ফসল রক্ষা বাঁধে কিছুটা ফাটল দেখা দিয়েছে। তাই এলাকার লোকজন নিয়ে তিনি বাঁধ মেরামতের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, ইটনা উপজেলায় আনুমানিক ২০০ একর জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। সেই ধান চাষিরা কাটছেন। ধানগুলোর প্রায় ৮০ ভাগ পেকে গেছে। ইটনাসহ কিশোরগঞ্জে তিনটি হাওর উপজেলায় এবার ১ লাখ ৪ হাজার মেট্রিক টন বোরো ধান আবাদ হয়েছে।

এএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর