বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

বিধবা ভাতার টাকা তুলছেন মহিলা লীগ নেত্রী

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৯ মে ২০২৩, ০৭:২১ এএম

শেয়ার করুন:

loading/img
ছবি : সংগৃহীত

ময়মনসিংহের নান্দাইল চন্ডিপাশা ইউনিয়ন আওয়ামী মহিলা লীগের লীগের সাধারণ সম্পাদক রিনা পন্ডিত দেবনাথের বিরুদ্ধে দুই নারী ভাতাভোগীর ভাতার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যে দুটি নাম্বারে তিনি টাকা উত্তোলন করছেন তার একটি নেত্রীর নিজ নামে এবং আরেকটি তার এক স্বজনের নামে নিবন্ধিত রয়েছে। দুই বছর ধরে ওই নেত্রীর মোবাইল ব্যাংকিংয়ে এ টাকা যায়। 

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুরে নান্দাইল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ইনসান আলী সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পান। 


বিজ্ঞাপন


জানা গেছে, রিনা পণ্ডিত দেবনাথ চণ্ডীপাশা ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ২০২১ সালে চণ্ডীপাশা ইউনিয়নে নেত্রীর নিজ গ্রাম খামারগাঁওয়ের বিধবা নারী মোছা. নুরুন্নাহার আক্তার (৩৩) নামে ভোটার আইডি দিয়ে বিধবা ভাতা কার্ড করেছেন। এতে নেত্রী তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার প্রদান করেন। ফলে দুই বছর যাবত নেত্রীর ওই নাম্বারে টাকা যাচ্ছে।

অপরদিকে একই গ্রামের বয়স্ক নারী মোছা. রাশিদা বেগমের (৬৬) নামে ভোটার আইডি দিয়ে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে নিজের ব্যবহৃত আরেকটি মোবাইল নাম্বার প্রদান করেছেন। ২০২১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এক বছরের টাকা উত্তোলন করে ওই রাশিদা বেগমকে মৃত দেখিয়ে আরেকজনের নামে বয়স্ক ভাতার জন্য পুনরায় আবেদন করেন ওই মহিলা নেত্রী।

উপকারভোগীরা টাকা উত্তোলনের বিষয়টি জানতেন না। পরবর্তীতে বিষয়টি জানতে পেরে উপকারভোগীরা ভাতার টাকা ফেরত চাইলে বিষয়টি নেত্রী ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ওই দুটি নাম্বারের টাকা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন নান্দাইল উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের মাঠকর্মী মাহাবুব মিয়া।

তিনি বলেন, আমরা তো ভেবেছি এ দুটি উপকারভোগীদের নম্বর। ২০২১ থেকে ওই দুটি নম্বরে টাকা যাচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


এ বিষয়ে উপকারভোগী নুরুন্নাহার আক্তার বলেন, আগে নেত্রী জানাইলো কার্ড হয়নি। ইদানীং শুনছি আমার কার্ড আরও দুই বছর আগে হইছে, টাকা যাচ্ছে নেত্রীর মোবাইল ফোনে। আমার ভাতার টাকা ফেরত চাইলেও তিনি দেন না।

রাশিদার ছেলে সুমন মিয়া বলেন, আমার মায়ের বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য তার (রিনা) কাছে গিয়েছিলাম কিন্তু হয়নি। পরে সমাজসেবা অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি মায়ের নামে ভাতার কার্ড হয়েছে। তবে মোবাইল নম্বর মায়ের নয়। এটা নেত্রী রিনার নম্বর।

এ বিষয়ে রিনা পন্ডিত দেবনাথের ব্যবহার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

নান্দাইল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ইনসান আলী বলেন, সরেজমিনে তদন্ত করে কার্ডের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সত্যতা পেয়েছি। ভাতাভোগীদের বলেছি, নম্বর পরিবর্তনের আবেদন করার জন্য। তারা আবেদন করলে তাদের মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরে টাকা দেওয়া হবে।

তবে নেত্রীর নম্বরে যে টাকা গেছে সেটি উদ্ধারের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, অভিযোগ দিলে উদ্ধার করে দেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/এইচই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন