বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে ফসলি জমি নষ্ট করে এবং কোনো ক্ষতিপূরণ না দিয়ে নদী তীর সংরক্ষণের কাজ করার অভিযোগ উঠেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে প্রকল্পে জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা ধরা না থাকায় দেওয়া যাচ্ছে না।
সারিয়াকান্দি উপজেলার ভেলবাড়ি ইউনিয়নে বাঙালি নদীর তীর সংরক্ষণ কাজে এই অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসী।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে বাঙালি নদী গতিপথ পরিবর্তন শুরু করে ভেলাবাড়ি গ্রামের দক্ষিণ পুর্বদিকে অগ্রসর হতে থাকে। বাঙালি নদী ছোট হলেও প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙ্গন দেখা দেয়।
গ্রামবাসী জানায়, গত কয়েক বছর আগেও নদী এক কিলোমিটার দূরে ছিল। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড বগুড়া-চন্দনবাইশা সড়কে বাঙালি নদীর উপর নির্মিত জোরগাছা সেতু রক্ষার জন্য নদীর মাঝে পাইলিং করে বেশ কিছু বড় বড় খুটি পুতে দেয়। এতে করেই গতি পথ পরিবর্তন শুরু বাঙালি নদী। ফলে বাঙালি নদী ভেলাবাড়ি গ্রামের কাছে বাঁকা হয়ে লোকালয়ে এগিয়ে আসতে থাকে কয়েক বছর ধরে। নদীর গতিপথ পরির্তন করে বাঁকা হওয়ায় জোরগাছা সেতু উত্তরে বড় একটি চর জেগে ওঠে। চর খনন করে নদীর পানি প্রবাহ আগের অবস্থায় ফিরে নিয়ে যাওয়ার জন্য গ্রামবাসী দাবি করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। তারা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদনও করেছেন। কিন্তু গ্রামবাসীর কথায় কান দিচ্ছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড। তারা নদী বাঁকা হয়ে যেদিকে গেছে সেখানেই ফসলি জমিতে বাঁধ নির্মাণ করে তীর সংরক্ষণ কাজ শুরু করেছে।
ভেলবাড়ি গ্রামের কাসেম, দবির উদ্দিন মন্ডলসহ অনেকেই বলেছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী তীর সংরক্ষণের নামে বাঙালি নদীকে লোকালয়ে নিয়ে আসছে।
তারা বলেন, চর খনন করে নদীর গতিপথ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে গেলে একদিকে তাদের ফসলি জমি রক্ষা পেত অন্য দিকে নদী লোকালয় থেকে আবার এক কিলোমিটার দূরে সরে যেত।
বিজ্ঞাপন
গ্রামের বাসিন্দা লিখন আহমেদ জানান, আবাদি জমি রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রশাসনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। কিন্তু সেই আবেদনের বিষয়ে কেউ কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর সঙ্গে দেখা করে এলাকাটি সরেজমিন পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানোর পরেও কোনো কাজ হয়নি।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, চর সংলগ্ন বাঁধ নির্মাণ করলে নদী তীর স্থায়ী হবে না। ওই এলাকার ফসলি জমি এবং বসতি রক্ষার স্বার্থেই শক্ত মাটির পাশ দিয়ে তীর রক্ষার কাজ করা হচ্ছে। ফসলি জমির ভেতর দিয়ে কাজ করলেও কোনো ক্ষতিপূরণ না দেওয়া বিষয়ে তিনি বলেন, ১৭ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি অনেক আগে গ্রহণ করা হয়েছে। সে সময় আমি বগুড়ার দায়িত্বে ছিলাম না। যখন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, তখন ক্ষতিপূরণের কোনো অর্থ ধরা হয়নি। একারণে জমির ক্ষতি হলেও আমরা ক্ষতিপূরণ দিতে পারছি না।
প্রতিনিধি/এসএস