শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

সড়কে বাঁশের সাঁকো, শিক্ষার্থী-রোগীসহ সবার ভোগান্তি চরমে

অলিউল্লাহ্ ইমরান, বরগুনা
প্রকাশিত: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৬ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

বরগুনায় সংস্কারের অভাবে বর্ষা মৌসুমে দুটি কাঁচা সড়ক দীর্ঘদিন পর্যন্ত ফসলি জমির সঙ্গে মিশে হাঁটু সমান কাদায় পরিণত হয়েছে। চলার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার উপায়-অন্ত না পেয়ে বাধ্য হয়ে সড়কের ওপরে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছে এলাকাবাসী।

এই বৃষ্টির মৌসুমে এখানকার দুই গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। মিলছে না কোনো প্রতিকার!


বিজ্ঞাপন


সরেজমিন শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে অবহেলিত রাস্তার তথ্য পেয়ে আমতলী সদর ইউনিয়নের নাচনাপাড়া ও উত্তর নাচনাপাড়া গ্রামে গিয়ে দুটি কাঁচা সড়কে প্রতিনিয়ত পথচারীদের এমন চরম ভোগান্তি পোহানোর চিত্র দেখা যায়।

আরও পড়ুন

বরগুনায় ১৯ মাসের কাজ শেষ হয়নি ৫ বছরেও, ঠিকাদার লাপাত্তা

জানা গেছে, বরগুনার আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাচনাপাড়া গ্রামের চানমিয়া প্যাদার বাড়ি থেকে জুলেখার বাড়ি পর্যন্ত ২০১২ সালে ২ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক নির্মাণ করা হয়। সড়কটি নির্মাণের পর থেকেই সংস্কার না করায় ধীরে ধীরে কাঁচা রাস্তার মাটি ফসলি জমির মাটির সঙ্গে মিশে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে সড়কের ওপর পানি জমে হাঁটু পর্যন্ত কাদা জমে যায়। অপর দিকে এই সড়কের বিপরীতে উত্তর নাচনাপাড়া গ্রামের রাজিব সিকদার স্টোর থেকে লতিফ কাজির বাড়ি পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার কাঁচা সড়কটিরও একই অবস্থা। এই কাদার রাস্তা পারি দিয়েই প্রতিদিন নাচনাপাড়া, উত্তর নাচনাপাড়া ও চিলা গ্রামের ৪০০ থেকে ৫০০ লোক জেলা ও উপজেলা শহরে জরুরি কাজের জন্য এই সড়কের ব্যবহার করে থাকে।

thumbnail_Amtali_Picture-2_(Utter_Nesnapar_Kasa_Rasta)-1_September


বিজ্ঞাপন


প্রতিনিয়ত এই সড়কের কাদা পেরিয়ে রোগী ও ছোট ছোট ছেলে-মেয়েসহ বিভিন্ন বয়সের শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণি পেশাজীবী মানুষ কষ্ট করে চলাচল করে থাকে। প্রায় সময়ই পানি এবং কাদায় পড়ে শিক্ষার্থীদের জামা-কাপড়, বই-খাতা নষ্ট হয়ে যায়। অন্য দিকে কাদার পরিমাণ বেশি থাকায় বৃদ্ধ নারী এবং পুরুষরা এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে ভয় পায়। তাই নিরুপায় হয়ে এলাকাবাসীর চাঁদার টাকায় পানি-কাদা রাস্তার ওপরে বাঁশ এবং সুপারি গাছ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে রিকশা নিয়ে চলাচল করতে হয়।

আরও পড়ুন

নদীর ভাঙনের কবলে বিদ্যালয়, ঝুঁকিতে শতাধিক বসতবাড়ি

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. লোটাস বলেন, আমার স্কুলেই যেতে ইচ্ছে করছে না! দুই একদিন ছাড়া প্রায় সময়ই জামা-কাপড়ে কাদা মেখে যায়! আছাড় খেয়ে বই-খাতা পানিতে ভিজে যায়!

স্থানীয় বাসিন্দা (বৃদ্ধা) বরুজান বিবি বলেন, দাদু ভাই তোমরা কাদা পানি ভেঙে আইছো মোগো খোঁজ খবর নিতে! এই কাদা-পানির মধ্যে তো জীবনের অনেক সময় পার করছি। তবে এখন এককালে ভোগান্তির চরম দশায় পৌঁছে গেছে।

suff

নাচনাপাড়া এলাকার রফিক মিয়া বলেন, বহু বছর ধরেই সবাই আসে যায় কিন্তু কাজের কাজ কিছুই নেই! নিজেদের চাঁদার টাকায় সাকো দিয়ে চলি। তাও শিশু ও মুরুব্বিরা চলতে পারে না। এটাও আমাদের এলাকার মানুষের কি সুন্দর জীবন-যাপন! কারে বলবো আমাদের এই সিদ্ধাতের কথা, প্রতিকার মিলবে কি কখনও! অন্তত এই সরকারের আমলে কি রাস্তার পূর্ণতা ফিরে পাবে? রাস্তাটি হলে কয়েকটি গ্রামের মানুষের ভোগান্তি দূর হবে।

আরও পড়ুন

নিঝুম দ্বীপে কমছে হরিণের সংখ্যা

উত্তর নাচনাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রিপন মিয়া বলেন, বর্ষা আসলেই আমাদের চিন্তার কোনো শেষ থাকে না! দিনের পর দিন চিন্তা ও হতাশার মধ্যে কাটাতে হয় আমাদের। চলার কোনো উপায় মিলাতে না পেরে সর্বশেষ গ্রামবাসী সবাই মিলে রাস্তার ওপরে বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে জরুরি কাজে ঘরের বাইরে বের হচ্ছি।

নাচনাপাড়া গ্রামের ইউপি সদস্য মো. বেল্লাল মাতুব্বর বলেন, এই সড়কটি সংস্কারের জন্য উপজেলা এলজিইডির কাছে একটি প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। আশা করি শুকনো মৌসুমে কাজ শুরু হবে।

বরগুনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান খান বলেন, আমি আমতলী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে কথা বলে রাস্তা দুটির খোঁজ-খবর নিয়েছি। সড়কটি সংস্কারের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলেই সড়কের কাজ শুরু করা হবে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর