ঝালকাঠির রাজাপুরে বিশখালী নদীর গত কয়েক বছরের ভাঙনে মঠবাড়ি ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবনের একাংশ নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে পুরো ভবনটি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বিদ্যালয়ের তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭০ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় এবং ১৯৮৫ এমপিওভুক্ত হয়। ২০১৪ সালে বিদ্যালয়ের ৪টি কক্ষ ভেঙে নদীতে ভেঙে গেছে। বর্তমানে বিশখালী নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে বাদুড়তলা লঞ্চ টার্মিনাল ও এর আশপাশ এলাকার সড়ক, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাদুড়তলা বাজারের অধিকাংশ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে শতাধিক বসতবাড়ি, একাধিক বিদ্যালয় ও বাদুড়তলা জামে মসজিদসহ বেশ কিছু স্থাপনা। ইতোমধ্যে নদীগর্ভে ৩০০ একর ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। কৃষকরা নতুন করে ফসলি জমি হারানোর ভয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
বিজ্ঞাপন
পুখরীজানা গ্রামের বাসিন্দা সাইদুল শরীফ, রফিকুল ইসলাম, মাহাবুব মৃধা জানান, দীর্ঘদিন ধরে নদী ভাঙনের কারণে আমাদের বসতবাড়ি, গাছপালা, ফসলি জমি সব হারিয়েছি। এখন আবার যদি নদী ভাঙতে থাকে তাহলে আর কোথাও যাওয়ার জায়গা থাকবে না। এছাড়া আমাদের এলাকার বিদ্যালয়ের একটি অংশ ভেঙে গেছে। ভাঙন রোধ করা না হলে পুরো ভবনটি ভেঙে বিলীন হয়ে যাবে।
কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ক্লাসটি নদীর মধ্যে চলে যাওয়ায় আমরা এখন অন্য রুমে ক্লাস করছি। কখন আমাদের পুরো বিদ্যালয়টি নদীর মধ্যে চলে যায় সেই ভয়ে আছি।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, আমরা যখন ক্লাস করাই, সবাই চিন্তার মধ্যে থাকি, কখন জানি পুরো বিদ্যালয়টি ভেঙে নদীতে চলে যায়। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের একাংশ ভেঙে গেছে। আমাদের একটাই দাবি বিদ্যালয়টি রক্ষার জন্য নদী ভাঙন রোধে ভালো ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সুনিল চন্দ্র সেন বলেন, বিদ্যালয়টি স্থানান্তর হওয়া প্রয়োজন। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে আমাদের কাছে তথ্য উপাত্ত পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি, বিদ্যালয়ের কমিটি অন্য একটি জমি দেখেছেন এবং সেখানে বিদ্যালয়টি স্থানান্তর হবে। তারপরও আমাদের বিভাগীয় মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের নজরে আনবো যাতে দ্রুত এর সমাধান হয়।
ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ.কে.এম নিলয় পাশা বলেন, নদী ভাঙ্গল কবলিত ওই স্থান আমাদের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা পরিদর্শন করেছেন। আমরা একটা সার্ভে করবো। এরপর জরুরি ভিত্তিতে কাজ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/টিবি

