বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

‘স্বর্ণের খোঁজ মেলা’ সেই ইটভাটা এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে

জেলা প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও
প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২৪, ০৩:১৫ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img
ছবি: ঢাকা মেইল

‘মাটি খুঁড়লে পাওয়া যাচ্ছে স্বর্ণ’-এমন সংবাদে বেশ কয়েক দিন ধরে ঠাকুরগাঁওয়ে যে ইটভাটাটিতে মানুষের বিপুল সমাগম ছিল, সেখানে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করার পর এটি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইটভাটাটি এখন জনশূন্য। সেখানে বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা।

রোববার (২৬ মে) সকাল ১০টার দিকে রানীশংকৈল উপজেলার কাতিহার এলাকায় আরবিবি ইটভাটায় গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।


বিজ্ঞাপন


ওই ইটভাটায় স্তুপ করা পাহাড় সমান মাটির ঢিপিগুলোতে গতকাল শনিবার রাত ১০টায়ও ছিল হাজারো মানুষের ঢল। স্বর্ণের খোঁজে কেউ কোদাল, কেউ বাশিলা, কেউ বা খুন্তিসহ মাটি খননের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মাটি খুঁড়তে ব্যস্ত ছিলেন। তা এখন প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন্ধ করা হয়েছে।

শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেখানে আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় ইটভাটা ও তার আশপাশ এলাকায় ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করেন। এরপর থেকে সেখানে ১৪৪ ধারা কার্যকর করতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয় এবং সকাল থেকেই ভাটায় অবস্থান নেয় পুলিশ। বর্তমানে সেখানে এক-দুজন করে আসতে থাকলেও পুলিশের অবস্থান এবং ১৪৪ ধারার কারণে লোকজন ফিরে যাচ্ছে।

পীরগঞ্জ সেনুয়া এলাকার তসলিম বলেন, কয়েক দিন আগে এখানে দেখতে এসেছিলাম। তখন একসাথে হাজারও মানুষকে মাটি খুঁড়তে দেখেছিলাম। আজকে এসে দেখি কোনো মানুষ নেই এবং কেউ মাটি খুঁড়ছে না।

রানীশংকৈল পৌর শহর থেকে আসা সারোয়ার হোসেন শামীম বলেন, আমি কয়েক দিন থেকে শুনেছি এখানে মাটি খুঁড়লেই নাকি সোনা পাচ্ছে মানুষ। তাই আমিসহ কয়েকজন মিলে আজকে আসি। এসে দেখি এবং জানতে পারি এখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আর কাউকে মাটি খনন করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাই আমরাও আর সোনার খোঁজে মাটি খুঁড়তে পারলাম না।


বিজ্ঞাপন


স্থানীয় লুৎফর রহমান বলেন, কয়েক দিন ধরে এখানে ৮-১০ হাজার মানুষের সমাগম হতো। তাতে খুব বিশৃঙ্খলা ও মারমুখী পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এখন ১৪৪ ধারা জারি করাতে আর কেউ আসতে পারছে না। আগের থেকে এখন ভালো হয়েছে এবং পরিস্থিতি শান্ত আছে।

নাদিম হোসেন নামে আরেকজন বলেন, আমি আজকের পরিবেশ দেখতে আসলাম। সোনা খোঁজার জন্য আগে এখানে মাটি খনন করতে দেওয়া হতো। এতে অনেক মানুষের সমাগম হতো এবং দ্বন্দ্ব বিবাদে জড়িয়ে যেত মানুষ। তাতে ভাটার কার্যক্রমও ব্যাহত হতো। মাটি খোঁড়া এখন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই ভাটাটি আবার তার আগের রূপ ফিরে পেয়েছে।

Thakur2

আরবিবি ভাটার ম্যানেজার মো. আসাদুজ্জামান লিটন ঢাকা মেইলকে বলেন, ১৪৪ ধারা জারি করার পর এ ব্যাপারে  ব্যাপক প্রচার করা হয়েছে। তাই রাতেই এখান থেকে মানুষ চলে যায়। এখন আগের থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। তারপরেও এখনো অনেকে না জানার কারণে এখানে আসছেন, কিন্তু আমরা তাদের আর ঢুকতে দিচ্ছি না।

তিনি আরও বলেন, স্বর্ণের খোঁজে মাটি খনন করার ফলে অনেক কিছু মাটি সড়কে চলে যায়। সেইগুলো রাস্তা থেকে তুলে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

রাণীশংকৈল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রকিবুল হাসান ঢাকা মেইলকে বলেন, সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে নজরদারি করা হচ্ছে।

প্রতিনিধি/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন