বগুড়া শিবগঞ্জে নারী আনসার সদস্য আশা দেবী মোহন্ত পরকিয়ায় জড়িয়ে খুন হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার প্রেমিক নতুন বিয়ে করায় মনোমালিন্য দেখা দেয় আশা দেবীর সঙ্গে। এর জেরেই আশার বাড়িতে গিয়ে তাকে খুন করে পালিয়ে যায় প্রেমিক। পুলিশ ওই ঘটনায় নয়ন ইসলাম (৩০) নামে তার প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে।
নয়ন শিবগঞ্জ পৌর এলাকার বানাইল পশ্চিমপাড়ার রমজান আলীর ছেলে। ইতোমধ্যে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছে সে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তীর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশ সুপার জানান, আশা দেবী ও নয়ন প্রতিবেশি। আশার স্বামী ভজন মোহন্ত দিনভর মুদী দোকানে ব্যস্ত থাকায় আশা দেবীর সঙ্গে নয়নের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং তা ঘনিষ্ঠতায় রূপ নেয়। তিন মাস আগে নয়ন পরকিয়া সম্পর্ক ত্যাগ করে নতুন বিয়ে করে এবং আশার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এনিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ও দ্বন্দ তৈরি হয়। নয়নের শঙ্কা আশা বিষয়টি প্রকাশ করলে তার সংসার ভেঙে যাবে। একারণে সে আশাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, আনসার সদস্য হিসেবে আশা এবারের দুর্গা পূজায় বাড়ির অদূরে বানাইল উত্তরপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত ২৩ অক্টোবর নবমীর রাতে মন্দির থেকে পোশাক পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে বাড়ি যান আশা। রাত ১০টার দিকে তিনি যখন বাড়ি ফিরছিলেন সে সময় মাঝরাস্তায় নয়নের সঙ্গে তার সাক্ষাত হয়। আশা সেখান থেকে বাড়ির পথে রওনা দিলে নয়নও তার পিছু নেয়। আশা দেবী বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। ওই সময় আশা দেবীর বাড়িতে আর কেউ ছিল না। নয়ন তখন ওই বাড়ির পেছনের ইটের প্রাচীর টপকে ভেতরে ঢোকে। নয়নকে বাড়িতে ঢুকতে দেখে আশা দেবী ক্ষিপ্ত হন। এসময় নয়ন পেছন থেকে মোবাইল ফোনের চার্জারের ক্যাবল দিয়ে আশা দেবীর দুই হাত পেঁছিয়ে ধরে। তারপর ওড়না দিয়ে আশা দেবীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা। আশার মরদেহ সোফার পাশে ফেলে রেখে নয়ন আবারও প্রাচীর টপকে পালিয়ে যায়।
পুলিশ সুপার সুদীপ চক্রবর্ত্তী বলেন, লাশ উদ্ধারের পর ঘটনার অনুসন্ধানের নামে পুলিশ। এক পর্যায়ে ঘটনার সঙ্গে নয়নের সম্পৃক্ততা পেলে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বুধবার রাতে নয়নকে গ্রেফতার করা হয়। পরে বুধবার বিকেলে নয়ন আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। আদালত থেকে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিজ্ঞাপন
প্রতিনিধি/ এজে