টানা প্রায় ১৬ মাস ধরে ইউনিয়ন পরিষদের মাসিক সভায় অনুপস্থিত সদস্য। এর ফলে জন্মসনদ, মৃত্যুসনদ, উত্তরাধিকারী সনদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে চরম বিপাকে পড়েছেন মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।
একটি হত্যা মামলার আসামি হওয়ার পর ইউপি সদস্য সাবুল আহমদ প্রায় দেড় বছর ধরে পলাতক রয়েছেন। এতে এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন কাজও হচ্ছে ব্যাহত।
বিজ্ঞাপন
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে লাপাত্তা থাকায় দ্রুত ওই ইউপি সদস্যকে (সাবুল আহমদ) অপসারণ করে ওই ওয়ার্ডে নতুন সদস্য নির্বাচনের ব্যবস্থা নিতে ভুক্তভোগীরা দাবি জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, টানা ১৩ মাসের বেশি সময় ইউনিয়ন পরিষদের মাসিক সভায় কোনো ইউপি সদস্য অনুপস্থিত থাকলে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষ) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩৪ এর ৪(ক) এর পরিপন্থী হওয়ায় তাকে নিজ পদ থেকে অপসারণের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে প্রায় ১৬ মাস ধরে পরিষদের মাসিক সভায় অনুপস্থিত সত্ত্বেও সাবুল আহমদকে অপসারণ করা হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, ২০২২ সালের ৮ এপ্রিল কেছরীগুল জামে মসজিদে ইমাম নিয়ে শরফ উদ্দিন নবাব ও গ্রামের মুরব্বি জামাল উদ্দিনের ঝগড়া-বিবাদের একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনার জেরে আসরের নামাজের পর সাবেক ইউপি সদস্য শরফ উদ্দিন নবাব, তার ভাই ইউপি সদস্য সাবুল আহমদ (পলাতক), আবু হোসেন, সাইফুল ইসলাম, দুলাল হোসেন, ইমন আহমদ, সালমান আহমদ প্রমুখ কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে রুবেল আহমদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এই খুনের ঘটনায় নিহতের ছোটভাই ফয়ছল আহমদ ইউপি সদস্য সাবুল আহমদকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের নামে থানায় হত্যা মামলা করেন। ঘটনার দিন থেকেই ইউপি সদস্য সাবুল আহমদ পলাতক রয়েছেন বলে জানা যায়।
বড়লেখা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছালেহ আহমদ জুয়েল ঢাকা মেইলকে জানান, এই ওয়ার্ডটি ইউনিয়নের সর্ববৃহৎ ওয়ার্ড। সরকার ঘোষিত সব কর্মসূচি এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় উপকারভোগীদের তালিকা যাচাই-বাছাই, নাগরিক সেবা নিশ্চতকরণে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের নির্ধারিত দায়িত্ব আছে। উনার অনুপস্থিতির কারণে নাগরিক সনদ প্রদানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সঠিক কি না, উত্তরাধিকার সনদে বর্ণিত সকল উত্তরাধিকারের তালিকা সঠিক কি না তা শনাক্তকরণে সমস্যা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তাছাড়া গ্রাম আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা এবং এলাকার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তিনি না থাকার কারণে দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এতে ওয়ার্ডের জনগণ ভোগান্তির শিকার ও নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পত্র পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুনজিত কুমার চন্দ ঢাকা মেইলকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন পরিষদের সরকারি দায়িত্বে অনুপস্থিত ইউপি সদস্য সাবুল আহমদকে স্বীয় পদ থেকে অপসারণের জন্য সর্বশেষ গত ১২ জুলাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন।
প্রতিনিধি/জেবি