images

স্পোর্টস / ক্রিকেট

যে কারণে পরিকল্পিতভাবে দলের দশ ব্যাটারকেই ‘রিটায়ার্ড আউট’ করেছেন কোচ

স্পোর্টস ডেস্ক

১১ মে ২০২৫, ০২:২১ পিএম

ক্রিকেটে বলে কিছুই অসম্ভব নয়। আর সেটা আরও একবার প্রমাণ করল সংযুক্ত আরব আমিরাতের নারী দল। থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ২০২৬ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এশিয়া বাছাইপর্বে কাতারের বিপক্ষে এমন কাণ্ড করল আমিরাত, যা এর আগে কখনোই দেখা যায়নি।

ব্যাংককে চলছিল বৃষ্টি বৃষ্টি ভাব। এমন পরিস্থিতিতে মাত্র ১৬ ওভারেই স্কোরবোর্ডে আমিরাত তুলে ফেলেছে ১৯২ রান, কোনো উইকেট না হারিয়ে! কিন্তু এক চোখে তখনও আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলেন কোচ আহমেদ রাজা, বৃষ্টি এসে যেন ম্যাচটাই না ভেস্তে যায়।

আরও পড়ুন- ২০ মিনিটের জন্য মিসাইল হামলা থেকে বেচে ফিরি: রিশাদ

আরও পড়ুন- ‘কুত্তে কি দম তেদি কি তেদি রেহতি হ্যায়’—পাকিস্তানকে নিয়ে শেবাগ

জয়টা দরকার ছিল, খুব দরকার। কারণ শুধু গ্রুপের শীর্ষ দলই পরের রাউন্ডে যাবে। আর কাতার র‍্যাঙ্কিংয়ে আমিরাতের থেকে ৩২ ধাপ নিচে। তাই এ ম্যাচ জিততেই হতো। টেস্ট ক্রিকেট হলে দারুণ এই অবস্থানে পৌঁছে ইনিংস ঘোষণাই করে দিত আমিরাত। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে তো ইনিংস ঘোষণার নিয়ম নেই। তাই ভিন্ন পথ নিল তারা। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, অধিনায়ক ঈশা ওজা (১১৩) আর থীর্থা সাতীশ (৭৪) ‘রিটায়ার্ড আউট’ হয়ে গেলেন। এরপর একে একে বাকিরাও ক্রিজে এসে কেউই বল না খেলে 'রিটায়ার্ড আউট' হলেন!

সবাই মিলে এমন নাটকীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ায় স্কোরকার্ডে দেখা গেল ১৯২ রানে অলআউট আমিরাত, অথচ কেউ আউটই হয়নি! ১০ জন ব্যাটার রিটায়ার্ড আউট, কোনো বোলারের ভাগ্যে উইকেট নেই! তবে এখানেই থেমে থাকেনি আমিরাত। বোলিংয়ে নেমে মাত্র ১১.১ ওভারে কাতারকে গুটিয়ে দেয় ২৯ রানে। ১৬৩ রানের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।

আরও পড়ুন-পাকিস্তানের করা ক্ষতির জবাব দিতে ভারতের পাশে ইংল্যান্ড

আরও পড়ুন- ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পৌঁছে গেছে আমিরাতেও

এই অদ্ভুত পরিকল্পনার পেছনের কাহিনি জানিয়েছেন কোচ আহমেদ রাজা। “ইনিংস চলাকালেই শুনছিলাম বজ্রপাতের শব্দ। হালকা বৃষ্টিও শুরু হয়েছিল। তখনই আমি আম্পায়ারদের কাছে গিয়ে জানতে চাইলাম, আমরা কি ইনিংস ডিক্লেয়ার করতে পারি? কিন্তু হোয়াইট বল ক্রিকেটে তো সেটা সম্ভব না,” বলেন রাজা। তিনি বলেন, “তখন আমি ম্যাচ রেফারিকে অনুরোধ করি যে আমি কি পুরো দলকেই ‘রিটায়ার্ড আউট’ করে দিতে পারি?” তাঁর এই পরিকল্পনার কারণ একটাই, যেভাবেই হোক, ম্যাচটা যেন পুরোটা খেলা যায়। কারণ আবহাওয়া যেকোনো সময় খেলা ভেস্তে দিতে পারত।

আমিরাতের কোচ আরও বলেন, “বোলিং ইনিংস শুরুতেই হালকা বৃষ্টি হচ্ছিল, আর আমরা ঝড়বৃষ্টির আশঙ্কায় ছিলাম। হাতে খুব একটা সময় ছিল না। তাই এমন সিদ্ধান্ত নিই। ফলটা যাতে নিশ্চিত হয়, সেটাই চেয়েছি। এই সিদ্ধান্ত দিয়ে আমরা কাউকে অসম্মান করতে চাইনি। সব কিছু নিয়ম মেনেই হয়েছে, ম্যাচ রেফারির সাথেও আগে থেকেই কথা বলা ছিল।” দলের দুই ওপেনারের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “এই ব্যতিক্রমী ঘটনাগুলোর ভেতর দিয়ে যেন আমাদের অধিনায়কের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি, ১৯২ রানের ওপেনিং জুটি আর বোলারদের পারফরম্যান্স ঢাকা না পড়ে।”

এই জয়ের ফলে সুপার থ্রিতে পৌঁছাতে অনেকটাই এগিয়ে গেছে আমিরাত। সেখানে ভালো করলে তারা পৌঁছে যাবে গ্লোবাল কোয়ালিফায়ারে, যেখান থেকে চারটি দল খেলবে ২০২৬ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, ইংল্যান্ডে। অদ্ভুত এক ম্যাচ, কিন্তু তাতেই লুকিয়ে আছে হিসেব-নিকেশ, বাস্তবতা আর কৌশলের অনন্য মিশেল!