images

বিনোদন

শাকিবের ছেড়ে দেওয়া ‘কবি’ কি ‘গলার কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে কল্লোলের

বিনোদন প্রতিবেদক

২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৪ পিএম

কবি সত্যের বাহক। তাই স্বাভাবিকভাবেই তার পথ কণ্টকাকীর্ণ। এবার ‘কবি’র সঙ্গ পেয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক হাসিবুর রেজা কল্লোলের যেন একই দশা! তবে এই ‘কবি’ কোনো ব্যক্তি না, সিনেমা। 

সুপারস্টার শাকিব খানকে নিয়ে ‘কবি’ সিনেমাটি বানাতে চেয়েছিলেন কল্লোল। কিং খানেরও আগ্রহের খামতি ছিল না। অভিনয়ের পাশাপাশি দিয়েছিলেন প্রযোজনার ঘোষণাও। এ গল্পের শুরু ২০১৯ সালে। কিন্তু কবির লাইট ক্যামেরা সে সময় জ্বলে ওঠেনি। 

এরপর ২০২২ সালের মাঝামাঝি। কিং খান তখন যুক্তরাষ্ট্রে। দেশে বসে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘কবি’র একটি পোস্টার প্রকাশ করেন কল্লোল। সে সময় ছবির কাজ আটকে থাকার কারণ ঢাকা মেইলকে জানিয়ে নির্মাতা বলেছিলেন, ‘সিনেমাটির কাজ আরও আগে হওয়ার কথা ছিল। শাকিবও ঘোষণা দিয়েছিলেন ২০১৯ সালে। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। এখন শাকিব দেশে ফিরলে চূড়ান্ত আলোচনা হবে। তখন বিস্তারিত জানাতে পারব। তবে কাজ অবশ্যই হবে।’

486258948_3739588679520334_8957550837354126163_n

কিন্তু প্রায় বছর খানেক কাটিয়ে দেশে ফিরলেও ‘কবি’ হিসেবে আর দেখা যায়নি শাকিবকে। এতে বাড়তে থাকে কল্লোলের হতাশা। যা ফুটে উঠে তার সোশ্যাল হ্যান্ডেলে। ২০২২ সালের অক্টোবরের একদিন। কল্লোল ফেসবুকে লিখেছিলেন, “একজন নির্মাতার জন্য সবচেয়ে কষ্টের বিষয় কী জানেন? দর্শকের তুমুল আগ্রহ এবং প্রত্যাশা সত্ত্বেও একটি চলচ্চিত্রের কাজ শুরু করতে না পারা। ‘কবি’ নিয়ে সবার মধ্যে যে আগ্রহ, আমি আপ্লুত-সম্মানিত। এই চলচ্চিত্রের জন্য চারটি গানের কাজও শেষ হয়েছে। প্রি-প্রোডাকশনও শেষ।”

ওই পোস্টে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। লিখেছিলেন, ‘প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের কী ভূমিকা? কেন শুটিং ফ্লোরে যেতে পারছি না? সব জানাব, কয়েকটা দিন সময় চেয়ে নিলাম।’

এ ব্যাপারে কল্লোলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগযোগ করে ‘কবি’র প্রসঙ্গ তুলতেই ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে ফোন কেটে দিয়েছিলেন। 
তবে বেশিদিন নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। নভেম্বরের শেষের দিকে তার এক ফেসবুক পোস্টের মন্তব্যের ঘরে এক উৎসুক নেটিজেন জানতে চেয়েছিলেন, ‘আপনার কবি মুভি কি আর হবে না?’ ওই প্রশ্নের উত্তরে কল্লোল লিখেছিলেন, ‘না।’ মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে আগের মতোই মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন সত্ত্বার নির্মাতা। 

491925460_3778446032301265_8171862599145605568_n

এদিকে শাকিবকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এনে দিয়েছিল কল্লোলের ‘সত্ত্বা’ সিনেমাটি। গল্প ও চরিত্রেও ছিল ভিন্নতা। তাই কবি নিয়ে শাকিবিয়ানদের উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। যা আপ্লূত করেছিল নির্মাতাকে। ২০২২ সালের শেষের দিকে ঘটেছিল তার বহিঃপ্রকাশ।

সামাজিক মাধ্যমে তিনি লিখেছিলেন, “মানুষের অবারিত ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ-আপ্লুত। সবার প্রশ্ন, দেশের শ্রেষ্ঠ নায়ক শাকিব খানের সঙ্গে ‘কবি’ চলচ্চিত্রের আপডেট কি? উত্তর জানাবো নতুন বছরের প্রথম দিন।”

কিন্তু নতুন বছরের (২০২৩) প্রথম দিন আর জানাননি কিছু। বরং পরে জানা গিয়েছিল, ‘কবি’তে শাকিবের অনীহা থাকায় শরিফুল রাজকে সুপারস্টারের স্থলাভিষিক্ত করেন তিনি। এ নিয়েও লুকোচুরি কম করেননি কল্লোল। মুঠোফোনে উল্টো প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেছিলেন, ‘‘আমি কি কোথাও এ ধরনের কথা বলেছি যে ‘কবি’ সিনেমায় শাকিবের জায়গায় রাজকে নিচ্ছি? আর এ ধরনের কোনো ব্যাপার এখনও হয়নি। যদি হয় তবে জানতে পারবেন।’’

raz_20240607_153218296

শেষমেশ অবশ্য গুঞ্জন-ই সত্য হয়। ২০২৩-এর শেষে শরিফুল রাজ ও ইধিকা পালকে নিয়ে ‘কবি’র লাইট ক্যামেরা চালু করেন কল্লোল। রাজের লুকও আগুন ধরায় সামাজিক মাধ্যমে। তারপরও কবির মুক্তি নিয়ে ছিল না কোনো তথ্য।

শেষ পর্যন্ত চলতি বছরের জুলাইয়ের শেষ দিন মুখ খোলেন কল্লোল। জানান, ‘কবি’র পেছনে শনির দশা কাটেনি। রাজ-ইধিকাকে নিয়ে শুটিং শেষ হলেও প্রযোজকের অনীহায় বন্দি আছে ‘কবি’। দেখছে না আলোর মুখ। 

পোস্ট প্রোডাকশনের কাজও বাকি উল্লেখ করে বলেছিলেন, ‘ছবিটা আমি শেষ করেছি। এখন প্রযোজকের দিক থেকে কিছু জটিলতা আছে। এজন্য ছবিটা শেষ হয়নি। ডাবিংয়ের কাজ প্রায় শেষ। ভারতের অংশের কিছুটা বাকি রয়েছে। বাংলাদেশ পার্টের ডাবিং শেষ।’

এরপর কেটে গেছে প্রায় পাঁচ মাস। সম্প্রতি কল্লোল তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘হতাশ’। সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন, ছবিটির শুটিং শুরুর দিনের ছবি। কিন্তু হতাশার কারণ জানতে চাইলে আগের মতোই রাখলেন মুখে কুলুপ এঁটে। ঢাকা মেইলকে শুধু বললেন, ‘এ প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাইছি না।’

566279958_834596429086810_1934623227511426060_n

কল্লোল কিছু বলতে না চাইলেও এটা স্পষ্ট যে ছবিটি গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে তার। কেননা শুরুর কয়েক বছর শাকিবের অপেক্ষায় থেকে ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। রাজ-ইধিকাকে নিয়ে শুটিংয়ের দিন থেকেও বছর দুয়েক কাটলেও দেখেনি আলোর মুখ। এমতাবস্থায় ‘কবি’ কল্লোলের গলার কাঁটা ছাড়া আর কী! 

আরআর