যেদিন থেকে শুরু হয়েছিল লা লিগার এই মৌসুম, সেদিন সমুদ্রের ধারে মারবেলায় ছুটি কাটাচ্ছিলেন ওয়োজচেক শেজনি, হাতে সিগারেট, হাতে অফুরান অবসর–ফুটবল তখন তার অতীত। আর ঠিক ৯ মাস পর, সেই শেজনি মাঠে, আরসিডিই স্টেডিয়ামে, পুরোনো-নতুন সতীর্থদের সঙ্গে উদযাপন করছেন আরেকটি শিরোপা। ৩৫ বছর বয়সী এই পোলিশ গোলকিপারকে বোঝানো হয়েছিল ফিরে আসতে, শেষবারের মতো জার্সি পরতে। এবং সেই ‘শেষ কাজ’টা রূপ নিল এক রূপকথায়, যা শেষ হয় বার্সেলোনার ঘরোয়া ট্রেবল জয়ের মাধ্যমে।
এই দলে শেজনির সঙ্গী ছিলেন এক নতুন প্রজন্মের ঝলমলে সব তারকা, যাদের একজন শেজনির চেয়েও ১৭ বছর ৩ মাস ছোট। ক্যারিয়ারের একদম শুরুতে থাকা সেই কিশোর এখনই অনেকের চোখে বিশ্বের সেরা হয়ে ওঠার পথে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন- মুস্তাফিজকে দলে নেওয়ায় আইপিএলের ম্যাচ বয়কটের দাবি!
আরও পড়ুন-দুঃসংবাদ পেলেন সাকিব আল হাসান
বার্সা জানত জিতলেই শিরোপা নিশ্চিত, হারলে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কা। এমন রাতে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এসপানিয়লের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে দুইবার গোল রুখে দেন শেজনি। ম্যাচের গতি তখনও শ্বাসরুদ্ধকর। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আলো জ্বালালেন লামিনে ইয়ামাল। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই এই উইঙ্গার যেন অলৌকিক কিছু করে বসেন প্রায়ই। আর এবারও করলেন, ৫৩ মিনিটে বাঁ পায়ের শটে বল পাঠালেন পোস্টের একেবারে ওপরের কোণে। এক মৌসুমে তার আর বার্সার শ্রেষ্ঠ সময়ের এক নিখুঁত সমাপ্তি।
ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে, অতিরিক্ত সময়ের ৯৫ মিনিটে, ফারমিন লোপেজ যোগ করেন দ্বিতীয় গোলটি। বার্সার শিরোপা তখন নিশ্চিত। আর ফুটবলবিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত মুখ ইয়ামাল, মুখভর্তি ব্রেসেস আর খেলায় অগাধ আত্মবিশ্বাস।
বিজ্ঞাপন
| আরও পড়ুন- |
| ডু অর ডাই ম্যাচ খেলতে পিএসএল যাচ্ছেন সাকিব! |
| ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার পর ফিরছে আইপিএল, প্লে-অফের সমীকরণ |
| যৌন কেলেঙ্কারির জালে রিয়াল তারকা |
| বার্সার শিরোপা উৎসবের অপেক্ষা বাড়ল রিয়াল |
চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বাদ পড়ার পর ইয়ামাল বলেছিলেন, ‘চ্যাম্পিয়নস লিগ তো প্রতি বছরই আসবে, কিন্তু এবার আমাদের লিগ জিততেই হবে।’ সেই সময় থেকেই তিনি ছিলেন মিশনে। এল ক্লাসিকোতেও এক গোল করে বার্সাকে ফেরান ম্যাচে, শেষ পর্যন্ত ৪-৩ জয় এনে দেয় দলকে। আর মাত্র এক জয়ের দূরত্বে ছিল শিরোপা। চার দিন পর সেই জয়ের কাজটাও সেরে ফেললেন ইয়ামাল, পুরোনোদের সঙ্গে নবাগতদের নিয়েই।
বার্সা জিততেই পারত লিগের অন্য দুই ম্যাচেও। কিন্তু ডার্বিতে, এসপানিয়লের বিপক্ষে জিতে শিরোপা নিশ্চিত করাটাই সবচেয়ে স্পেশাল। যদিও এসপানিয়ল কোচ মানোলো গঞ্জালেস বলেছেন, ‘আমরা লড়েছি টিকে থাকার জন্য’, কিন্তু সমর্থকদের কাছে ডার্বির গুরুত্ব ছিল আলাদা। তারা শুধু অবনমন এড়াতে নয়, বার্সাকে হারিয়ে শিরোপা উৎসব থামিয়ে দিতে চেয়েছিল।
কিন্তু দিনটা যে ছিল ইয়ামালদেরই। একদম শুরুতে সমুদ্রে বসে থাকা গোলকিপার, আর ক্যারিয়ার শুরু করা কিশোর, দুজন মিলে যেন লিখে ফেললেন বার্সার এবারের শিরোপার গল্প।

