শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ঢাকা

আল্লাহ যেভাবে বান্দার ডাকে সাড়া দেন

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০২:৩৭ পিএম

শেয়ার করুন:

আল্লাহ যেভাবে বান্দার ডাকে সাড়া দেন

আল্লাহ তাআলা চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী প্রভু। তার জীবন্ত সত্তার একটি প্রমাণ হলো- তিনি নিজ বান্দাদের দোয়া শুনেন এবং সাড়া দেন। যেভাবে কোরআনে তিনি ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। (সুরা মুমিন: ৬০)

আল্লাহ তাআলার একটি গুণবাচক নাম মুজিব বা সাড়া দানকারী। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে এই গুণের বিবরণ এসেছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক নিকটবর্তী ও সাড়া দানকারী।’ (সুরা হুদ: ৬১)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: মানুষকে ক্ষমা করলে আল্লাহ যে পুরস্কার দেবেন

আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম তাবারি (রহ.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক নিকটবর্তী তাদের যারা একনিষ্ঠ হয়ে তাঁর ইবাদত করে এবং তাঁর কাছে তাওবায় আগ্রহী হয়। এমন বান্দা ডাকলে আল্লাহ তাঁর ডাকে সাড়া দেন।’ (তাফসিরে তাবারি: ১২/৪৫৪)

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আমার বান্দারা যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞেস করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহবান করে আমি তার আহবানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা বাকারা: ১৮৬)

আল্লাহ বান্দার ডাকে সাড়া দেন। হয়ত বান্দা তা বুঝতে পারে না। ফলে ধৈর্য হারিয়ে ফেলে। আবু হুরায়রা (রা.)-এর থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘বান্দার দোয়া সর্বদা কবুল হয়, যদি না সে অন্যায় কাজ অথবা আত্মীয়তার সম্পর্কচ্ছেদ করার জন্য দোয়া করে এবং (দোয়ায়) তাড়াহুড়া না করে। জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল (স.), তাড়াহুড়া করা কী? 


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: দোয়া কবুল হওয়ার জন্য কেমন একনিষ্ঠতা জরুরি

তিনি বললেন, সে বলতে থাকে, আমি তো দোয়া করেছি, আমি দোয়া তো করেছি; কিন্তু আমি দেখতে পেলাম না যে তিনি আমার দোয়া কবুল করেছেন। তখন সে ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং দোয়া করা ছেড়ে দেয়।’ (সহিহ মুসলিম: ৬৮২৯)

বান্দা যখন আল্লাহকে ডাকে, তখন আল্লাহও বান্দার দিকে অগ্রসর হন। হাদিসে এসেছে, আল্লাহর অনুগ্রহ প্রবল হওয়ায় তিনি বান্দার প্রতি বেশি অগ্রসর হন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘আমি সে রকমই, যে রকম বান্দা আমার প্রতি ধারণা রাখে। আমি বান্দার সঙ্গে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে। যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে; আমিও তাকে নিজে স্মরণ করি। আর যদি সে জন-সমাবেশে আমাকে স্মরণ করে, তবে আমিও তাদের চেয়ে উত্তম সমাবেশে তাকে স্মরণ করি। যদি সে আমার দিকে এক বিঘত এগিয়ে আসে, তবে আমি তার দিকে এক হাত এগিয়ে যাই, যদি সে আমার দিকে এক হাত অগ্রসর হয়; আমি তার দিকে দুহাত এগিয়ে যাই। আর সে যদি আমার দিকে হেঁটে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।’ (সহিহ বুখারি: ৭৪০৫)

সুতরাং মুমিনের দায়িত্ব হলো—আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করা। ছোট-বড় সব প্রয়োজনে আল্লাহর শরণাপন্না হওয়া। ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে না তিনি তাঁর ওপর রাগান্বিত হন’ (সুনানে তিরমিজি: ৩৩৭৩)। আল্লাহ তাআলা আমাদের সব বিষয়ে তাঁর শরণাপন্ন হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর