মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪, ঢাকা

টানা ৪০ দিন জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০২২, ০৫:৩৮ পিএম

শেয়ার করুন:

টানা ৪০ দিন জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত

একাকি নামাজ পড়ার চেয়ে জামাতে নামাজ আদায় করার গুরুত্ব অনেক বেশি। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, জামাতে নামাজ আদায় করা একাকী নামাজ আদায় করার চেয়ে ২৭ গুণ বেশি সওয়াবের। (বুখারি: ৬৪৫; মুসলিম: ৬৪০)

হাদিস ব্যাখ্যাকাররা বলেন, এই হাদিসে জামাতে নামাজের গুরুত্ব বোঝানোর জন্য ২৭ গুণের কথা বলা হয়েছে; কিন্তু কারো ইখলাস বেশি হলে আল্লাহ তাআলা সওয়াব আরও বাড়িয়ে দিতে পারেন। তাছাড়া জামাতে নামাজ পড়া ওয়াজিব। বিনা ওজরে জামাত ছেড়ে দেওয়া বড় গুনাহ। আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিয়েছেন, আর তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠা করো ও জাকাত দাও এবং রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু করো (সুরা বাকারা: ৪৩)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: যে দুই রাকাত নামাজ দুনিয়ার চেয়ে দামি 

রাসুলুল্লাহ (স.) উম্মতকে জামাতে নামাজ পড়ার আরও একটি ফজিলত বর্ণনা করেছেন। সেটি হলো— টানা ৪০ দিন জামাতে নামাজ পড়লে একইসঙ্গে মুনাফেকি ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে, নবীজির হাদিস অনুযায়ী নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে আমলটি করতে হবে। 

রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে একাধারে ৪০ দিন তাকবিরে উলার (ইমামের প্রথম তাকবির) সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করবে, তাকে দুটি নাজাতের ছাড়পত্র দেওয়া হবে। ১. জাহান্নাম থেকে মুক্তি ২. মুনাফেকি থেকে মুক্তি।’ (তিরমিজি: ২৪১)

আরও পড়ুন: সবচেয়ে বড় চুরি হয় নামাজে


বিজ্ঞাপন


অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যখন ইখলাসের সঙ্গে আল্লাহর মহব্বতে টানা ৪০ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ইমামের প্রথম তাকবির বলার সঙ্গে আদায় করে, সে ব্যক্তি জাহান্নাম থেকে মুক্ত এবং মুনাফেকি থেকেও মুক্ত। (সুবহানাল্লাহ!)

আমাদের পূর্বসূরিরা তাকবিরে উলাকে বেশ গুরুত্ব দিতেন। তাবেয়ি সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব (রহ.) একাধারে ৫০ বছর তাকবিরে উলার সঙ্গে নামাজ আদায় করেছেন। (হিলইয়াতুল আওলিয়া: ৪/২১৫)

বিখ্যাত তাবেয়ি মুজাহিদ (রহ.) বলেন, আমি রাসুল (স.)-এর একজন বদরি সাহাবিকে বলতে শুনেছি, তিনি তার ছেলেকে জিজ্ঞেস করেছেন, তুমি কি আমাদের সঙ্গে নামাজ পেয়েছ? ছেলে বললেন, জি, পেয়েছি। আবার জিজ্ঞেস করলেন, তাকবিরে উলা তথা ইমামের সঙ্গেই তাকবির পেয়েছ? ছেলে বললেন, না। তিনি বললেন, তুমি ১০০ কালো চোখবিশিষ্ট উটের চেয়ে অধিক কল্যাণ হারিয়েছ। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ২০২১)

আরও পড়ুন: নামাজ জামাতে পড়ার তাগিদ কেন?

সুতরাং ইমামের প্রথম তাকবির বলার সঙ্গে তাকবির বলে নামাজ শুরু করলে তাকবিরে উলা পাওয়া যাবে, অন্যথায় নয়। 

হাদিসেبراءة من النار বা ‘জাহান্নাম থেকে মুক্তি’ অর্থ জাহান্নাম থেকে নিষ্কৃতি লাভ করবে। براءة من النفاق বা ‘নিফাক থেকে মুক্তি’ প্রসঙ্গে আল্লামা তিবি বলেছেন, ওই লোক তার সালাতের বদৌলতে দুনিয়াতে মুনাফিকের মতো আমল করা থেকে নিরাপদ থাকবে এবং একনিষ্ঠ মুখলিসের মতো আমল করার তাওফিক লাভ করবে। আর আখেরাতে সে মুনাফেকের জন্য বরাদ্দ শাস্তি থেকে নিরাপদে থাকবে। সে মুনাফেক ছিল না, সেই সাক্ষ্য দেওয়া হবে। (তুহফাতুল আহওয়াযী: ২/৪০)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, ফরজ নামাজ তাকবিরে উলা বা প্রথম তাকবিরে সঙ্গে পড়ার চেষ্টা করা। হাদিসে বর্ণিত ফজিলত লাভের জন্য অন্তত ৪০ দিন টানা পড়া। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুন্দর আমলটি পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর