আজান নামাজের ওয়াক্ত ঘোষণা ও জামাতে অংশগ্রহণের আহ্বান। শরিয়তের দৃষ্টিতে আজান শুদ্ধ হওয়ার শর্ত হলো, তা নির্ধারিত ওয়াক্তের পর দেওয়া। ভুলবশত বা অসতর্কতাবশত ওয়াক্ত শুরুর আগেই আজান দেওয়া হলে তা শরিয়তসম্মতভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না। এ অবস্থায় মুয়াজ্জিনের করণীয় নিচে তুলে ধরা হলো।
আজান পুনরাবৃত্তি করা
ওয়াক্তের আগে দেওয়া আজান শরিয়তের দৃষ্টিতে গণ্য হয় না। এটি নামাজের নির্ধারিত সময় ঘোষণার মূল উদ্দেশ্য পূরণ করে না। তাই, ওয়াক্ত শুরু হওয়ার সাথেসাথে পূর্ণাঙ্গভাবে নতুন করে আজান দিতে হবে।
ঘোষণা দেওয়া
ভুলবশত আগে দেওয়া আজানের পর মুয়াজ্জিনকে সঙ্গে সঙ্গে জানাতে হবে যে, আজান ভুলে আগে দেওয়া হয়েছে এবং আসল ওয়াক্তে পুনরায় আজান দেওয়া হবে। এতে মুসল্লিরা বিভ্রান্ত হবে না।
আরও পড়ুন: আজানের আগে নামাজ পড়া যায়?
বিজ্ঞাপন
রমজানে বিশেষ সতর্কতা
রমজানে, বিশেষ করে মাগরিবের আজান যদি সময়ের আগে দেওয়া হয়, মানুষ সূর্যাস্তের আগে ইফতার করতে পারে, ফলে রোজা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই মুয়াজ্জিনকে রমজানে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
ওয়াক্তের আগে নামাজ পড়া
যদি কেউ ভুলে ওয়াক্তের আগে দেওয়া আজান শুনে ফরজ নামাজ পড়ে, তবে ফিকহ অনুযায়ী সেই নামাজ শুদ্ধ হবে না। নামাজটি ওয়াক্তে পুনরায় পড়া জরুরি।
আরও পড়ুন: অনেক আজান শুনলে কোনটার জবাব দেবেন?
ফিকহি উদ্ধৃতি
ইমাম মুহাম্মদ ইবনে হাসান শাইবানি (রহ.)-এর আল-আসল গ্রন্থে উল্লেখ আছে, ‘যদি কেউ ওয়াক্তের আগে আজান দেয়, তা গ্রহণযোগ্য হবে না। ওয়াক্ত শুরু হলে তার উপর আজান পুনরায় দেওয়া আবশ্যিক। যদি না দেয় এবং তাদের সঙ্গে নামাজ পড়ায়, তবে নামাজ শুদ্ধ হবে না।’
অতএব, ওয়াক্তের আগে আজান দেওয়া একটি গুরুতর ভুল। মুয়াজ্জিনদের অবশ্যই আজানের সময় সম্পর্কে সচেতন ও সতর্ক থাকা উচিত। ভুল হলে ওয়াক্তের পর আজান পুনরায় দিতে হবে এবং মুসল্লিদের অবহিত করতে হবে, যাতে নামাজ ও ইবাদতের শুদ্ধতা বজায় থাকে। এটি ইবাদতের সঠিক সময় রক্ষা নিশ্চিত করে।
(আবু দাউদ: ৫৩৫; মুখতাসারু ইখতিলাফিল উলামা, জাসসাস: ১/১৮৭; আল-মাবসুত, সারাখসি: ১/১৩৪; তুহফাতুল ফুকাহা: ১/১১৬; মাজমাউল আনহুর: ১/১১৩; রদ্দুল মুহতার: ১/৩৮৫)

