শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

আয়াতুল কুরসি: ঘুমের সময় নিরাপত্তার বলয়

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:০৭ পিএম

শেয়ার করুন:

ঘুমের সময় নিরাপত্তার বলয়ে থাকার আমল

ঘুম মানবজীবনের একটি অত্যন্ত দুর্বল ও অসহায় অবস্থা। এই সময়ে শয়তানের অনুপ্রবেশ ও অন্যান্য ক্ষতি থেকে সুরক্ষার জন্য রাসুলুল্লাহ (স.) শিক্ষা দিয়েছেন কিছু বিশেষ আমল। এসব আমল পালনকারীর চারপাশে তৈরি হয় আল্লাহর বিশেষ নিরাপত্তা বলয়, যা তাকে রাতভর হিফাজতে রাখে।

আয়াতুল কুরসি: নিরাপত্তা বলয়ের প্রধান স্তম্ভ

‘প্রতিটি জিনিসের একটি চূড়া থাকে। কোরআনের চূড়া হলো সুরা বাকারা। তাতে এমন একটি আয়াত আছে, যা কোরআনের অন্যসব আয়াতের ‘নেতা’। সেটা হলো আয়াতুল কুরসি।’ (সুনানে তিরমিজি: ২৮৭৮)

ঘুমের সময় এই আয়াত তেলাওয়াতকারীর জন্য আল্লাহ একজন বিশেষ ফেরেশতা নিযুক্ত করেন, যিনি সকাল পর্যন্ত তার পাহারায় নিয়োজিত থাকেন।

আয়াতুল কুরসির ফজিলত: শয়তানের স্বীকারোক্তি

রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যখন তুমি শয্যা গ্রহণ করবে তখন আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে। তাহলে সর্বদা আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার জন্য একজন হেফাজতকারী থাকবে এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না।’ (সহিহ বুখারি: ৫০১০)


বিজ্ঞাপন


হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-এর বর্ণনায় এসেছে, শয়তান নিজেই স্বীকার করেছিল যে আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমানো ব্যক্তির কাছে সে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও প্রবেশ করার সুযোগ পায় না।

আরও পড়ুন: ঘরে প্রবেশ ও বের হওয়ার দোয়া

রাতের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আমল

সুরা কাফিরুন: শিরকের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা
‘তুমি সুরা কাফিরুন পড়ে ঘুমাও। কেননা তা শিরক থেকে মুক্তকারী।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৫০৫৫)

সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত: সারারাতের জন্য যথেষ্ট
‘যে ব্যক্তি রাতে সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত পাঠ করবে, তার জন্য তা-ই যথেষ্ট হবে।’ (সহিহ বুখারি: ৫০০৯)

সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস: ত্রিমাত্রিক সুরক্ষা
‘রাসুলুল্লাহ (স.) প্রতি রাতে যখন বিছানায় যেতেন, তখন দুই হাত একত্র করে তাতে সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়ে ফুঁ দিতেন। অতঃপর মাথা ও চেহারা থেকে শুরু করে যতদূর সম্ভব দেহে তিনবার দুই হাত বুলাতেন।’ (সহিহ বুখারি: ৫০১৭)

আরও পড়ুন: রাতে শয়তান ভর করলে যে দোয়া পড়ে বাঁ দিকে থুতু মারবেন

ঘুমানোর আগের দোয়া
‏ اَللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا‘আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনার নামে আমি শয়ন করছি এবং আপনারই অনুগ্রহে পুনরায় জাগ্রত হবো। (বুখারি: ৬৩২৪)

রাসুলুল্লাহ (স.)-এর শেখানো এই আমলগুলো মুমিনের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যে ব্যক্তি নিয়মিত এই আমলগুলো পালন করবে, তার চারপাশে তৈরি হবে আল্লাহর অদৃশ্য নিরাপত্তা বলয়। শয়তান ও অন্যান্য অনিষ্ট থেকে সুরক্ষিত থাকবে সে সারা রাত। আসুন, আমরা এই সহজ কিন্তু অত্যন্ত কার্যকরী আমলগুলো নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করি এবং আল্লাহর বিশেষ হেফাজত লাভ করি।

হে আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট আশ্রয় চাই ঘুমের সময় যাবতীয় অনিষ্ট থেকে। আমাদেরকে আপনার নিরাপত্তা বলয়ে আবৃত করে রাখুন এবং এমনভাবে জাগ্রত করুন যেভাবে আপনি পুণ্যবানদের জাগ্রত করেন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর