আল্লাহ তাআলা বান্দাদের রাতে বা দিনে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচার উপায় শিখিয়ে দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, যদি শয়তানের পক্ষ হতে তোমাকে কোনও কুমন্ত্রণা দেওয়া হয়, তবে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সুরা আরাফ: ২০০)
এ আয়াতে সকল মুসলিমকে শিক্ষা দেয়া হয়েছে, শয়তান আমাদের মনে কখনও মন্দ প্ররোচনা দিলে সঙ্গে-সঙ্গে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করা উচিত। এক্ষেত্রে এ দোয়াটি পড়া যায়— أَعُوذُ بِاللهِ الْعَظِيمِ وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ উচ্চারণ: ‘আউজুবিল্লাহিল আজিম ওয়া বিওয়াঝহিল কারিম ওয়া সুলত্বানিহিল কাদিমি মিনাশ শাইত্বানির রাঝিম।’ অর্থ: ‘আমি মহান আল্লাহর কাছে; তাঁর মহানুভব চেহারার কাছে; তাঁর অনাদি-অনন্ত কর্তৃত্বের কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় চাই।’ হাদিসে এসেছে, যখন কেউ এই দোয়া পাঠ করে তখন শয়তান বলে, এই ব্যক্তি আজ সারাদিনের জন্য আমার অনিষ্ট হতে রক্ষা পেল। (আবু দাউদ: ৪৬৬)
বিজ্ঞাপন
আর ঘুমের মধ্যে শয়তান ভয় দেখালে أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ উচ্চারণ: ‘আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানির রাঝিম’ অর্থ: ‘বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই’ পড়ে বাঁ দিকে তিনবার থুতু (বাতাসে আদ্র ধরণের থুতু) নিক্ষেপ করবেন। রাসুল (স.) ইরশাদ করেন, কেউ যদি এমন কিছু দেখে, যা সে অপছন্দ করে, সে যেন বাঁ দিকে তিনবার থুতু ফেলে এবং শয়তান থেকে আশ্রয় চায়। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোনো ক্ষতি করবে না। আর শয়তান আমার আকৃতি ধরতে পারে না। (বুখারি: ৬৯৯৫)
উপরোক্ত হাদিসেই রাসুলুল্লাহ (স.) বাঁ দিকে তিনবার থুতু ফেলার পাশাপাশি মহান আল্লাহর কাছে অভিশপ্ত শয়তানের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাওয়ার হুকুম দিয়েছেন। (বুখারি: ৬৯৯৫) কোনো কোনো হাদিসে তিনবার আশ্রয় চাওয়ার কথাও উল্লেখ আছে। (ইবনে মাজাহ: ৩৯০৯)
শুধু ঘুমের মধ্যে ভয় পেলে নয়, জাগ্রত অবস্থায়ও শয়তানের যেকোনো কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচতে বেশি বেশি আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানির রাঝিম পড়া যাবে।
আরও পড়ুন: যে দোয়া ১০ বার পড়লে সারাদিন গুনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখা হয়
বিজ্ঞাপন
তবে, রাতে শয়তান থেকে হেফাজতে থাকার কার্যকর পদ্ধতি হলো আয়াতুল কুরসি পাঠ করে ঘুমানো। রাসুল (স.) বলেন, ‘তুমি যখন শয্যা গ্রহণ করবে, তখন আয়াতুল কুরসি পড়বে। তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বদা তোমার জন্য একজন রক্ষক থাকবে এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না।’ (বুখারি: ২৩১১)
এছাড়াও ঘরকে শয়তানমুক্ত রাখতে ঘরে সুরা বাকারা পড়ার চর্চা থাকা উচিত। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘তোমরা নিজেদের ঘরবাড়িগুলো (আমলশূন্য রেখে) কবরে পরিণত কোরো না। অবশ্যই যে বাড়িতে সুরা বাকারা পাঠ করা হয়, সে বাড়ি থেকে শয়তান পলায়ন করে।’ (মুসলিম: ৭৮০)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শয়তানের যাবতীয় কুমন্ত্রণা থেকে হেফাজত করুন। উল্লেখিত আমলগুলো করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

