আমল কবুলের নিশ্চয়তা পেতে ৩টি কাজ
আমল কবুল হওয়া প্রতিটি মুমিনের সবচেয়ে বড় আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন আপনার ইবাদত আল্লাহর দরবারে গৃহীত হয়েছে? এখানে কোরআন-হাদিস ও সালাফে সালিহিনের বর্ণনার আলোকে ৭টি সুস্পষ্ট আলামত তুলে ধরা হলো।
বিজ্ঞাপন
১. আমল শেষে অন্তরে প্রশান্তি
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ ও শুভ পরিণাম।’ (সুরা রাদ: ২৯)
বাস্তব লক্ষণ: ইবাদতের পর এমন এক অদৃশ্য প্রশান্তি অনুভব করা যা জাগতিক আনন্দ থেকে ভিন্ন।
ইমাম গাজালি (রহ.) বলেন- ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে কবুলের স্বীকৃতি।’
২. গুনাহ থেকে স্বতঃস্ফূর্ত দূরে থাকা
‘নিশ্চয়ই সালাত মানুষকে অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)
চেনার উপায়: নামাজ-রোজার পর পাপের প্রতি ঘৃণা জন্মানো এবং সহজে গুনাহ এড়িয়ে চলা।
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আল্লাহ কবুল করলে বান্দাকে গুনাহ থেকে হেফাজত করেন।’
বিজ্ঞাপন
৩. নেক আমলের ধারাবাহিকতা
নবীজি বলেছেন, ‘আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় আমল হলো যা নিয়মিত করা হয়—তা অল্পই হোক।’ (বুখারি: ৬৪৬৪)
কবুলের আলামত: একটি আমল শেষ করেই পরবর্তী নেকির তাগিদ অনুভব করা।
হাসান বসরি (রহ.) বলেন, ‘কবুল হওয়া আমল নতুন নেকির দরজা খুলে দেয়।’
আরও পড়ুন: অন্তরে নেক আমলের ঝোঁক সৃষ্টি হওয়া কীসের আলামত?
৪. বিনয় ও অহংকারশূন্যতা
নবীজি বলেছেন, ‘কস্মিনকালেও আমল নাজাত দিবে না। তাঁরা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনাকেও না? তিনি বললেন- আমাকেও না। তবে আল্লাহ আমাকে তাঁর রহমত দিয়ে আবৃত রেখেছেন। (বুখারি: ৬৪৬৩)
সঠিক মানসিকতা: আমল নিয়ে গর্ব না করে বরং আল্লাহর রহমতের প্রতি নির্ভরশীল হওয়া।
৫. অপ্রত্যাশিত বরকত ও সম্মান
আল্লাহর ওয়াদা, ‘যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহ তাদের জন্য সমাধানের পথ তৈরি করেন।’ (সুরা তালাক: ২-৩)
বাস্তব প্রমাণ: জীবনে অপ্রত্যাশিত সুযোগ আসা এবং মানুষের অন্তরে স্বতঃস্ফূর্ত সম্মান লাভ করা।
৬. বিপদে ধৈর্য ও শুকরিয়া
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করব... কিন্তু ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।’ (সুরা বাকারা: ১৫৫-১৫৬)
মুমিনের প্রতিক্রিয়া: মুসিবতে সবর করা বা ‘ইন্না লিল্লাহ...’ বলার শক্তি পাওয়া।
আরও পড়ুন: হাদিসের আলোকে সর্বোত্তম ১৭ আমল
৭. সুন্দর বিদায়
নবীজি (স.)-এর সুসংবাদ- ‘আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তাকে উত্তম মৃত্যু দেন।’ (তিরমিজি: ৯৭৬)
সালাফদের পর্যবেক্ষণ: ‘কবুল হওয়া বান্দার শেষ কথা হয় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'।’
কবুলের নিশ্চয়তা পেতে ৩টি কাজ করুন
গোপনে সদকা দিন ‘গোপন দান আল্লাহর ক্রোধ নিভায়।’ (তাবারানি)
প্রতিদিন এই দোয়া পড়ুন- ‘রব্বানা তাকাব্বাল মিন্না, ইন্নাকা আনতাস সামিউল আলিম।’
অন্যের জন্য দোয়া করুন। অন্যের জন্য দোয়া করলে ফেরেশতারা বলেন- ‘তোমার জন্যও অনুরূপ হোক।’ (মুসলিম: ২৭৩২)
মূল বার্তা
‘আমল কবুলের সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো—আপনার ঈমান, আমল ও চরিত্রের ধারাবাহিক উন্নতি।’

