সৌদি আরবে অবস্থানরত বিশ্বের লাখো মুসলমান এখন হজের আনুষ্ঠানিকতা পালন করছেন। পবিত্র এই সফর আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের এক অনন্য সুযোগ। হজ শুধু হাজিদের জন্য নয়, পুরো উম্মাহর জন্য একটি কল্যাণ ও দোয়ার সময়। এই পবিত্র সময়ে হাজিদের জন্য দোয়া করা প্রত্যেক মুসলমানের উচিত।
হাজিদের জন্য দোয়ার গুরুত্ব
রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘হাজি এবং ওমরাহ পালনকারী ব্যক্তি আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা তাঁকে ডাকে, আর আল্লাহ তাদের ডাকে সাড়া দেন।’ (ইবনু মাজাহ: ২৮৯২)
এই হাদিস থেকে বোঝা যায়—হাজিরা যেমন দোয়ার মাধ্যমে কল্যাণ কামনা করেন, তেমনি আমাদেরও উচিত তাদের হজ সহজ, কবুল ও নিরাপদ হওয়ার জন্য দোয়া করা।
আরও পড়ুন: হজ কবুল হওয়ার জন্য যেসব শর্ত পূরণ জরুরি
হাজিদের জন্য এই দোয়াগুলো করতে পারেন
১. হজ কবুল হওয়ার জন্য: اللَّهُمَّ تَقَبَّلْ حَجَّهُمْ، وَاجْعَلْهُ مَبْرُورًا مَغْفُورًا مَشْكُورًا উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা তাকাব্বাল হাজ্জাহুম, ওয়াজআলহু মাবরূরান মাগফূরান মাশকূরান।’ অর্থ: হে আল্লাহ! তাদের হজ কবুল করুন, এটিকে মাবরুর (গ্রহণযোগ্য), ক্ষমাপ্রাপ্ত ও পুরস্কৃত করুন।
২. নিরাপদ হজ সফরের জন্য: اللَّهُمَّ احْفَظْهُمْ فِي سَفَرِهِمْ، وَرُدَّهُمْ إِلَيْنَا سَالِمِينَ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মাহ ফাজহুম ফি সাফারিহিম ওয়া রুদ্দাহুম ইলাইনা সালিমীন।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তাদের হজযাত্রা নিরাপদ করুন এবং শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিন।’
৩. হাজিদের জন্য সম্মান ও বরকতের দোয়া: اللَّهُمَّ اجْعَلْهُمْ مِنْ عُتَقَائِكَ فِي عَرَفَةَ، وَارْزُقْهُمُ الْقَبُولَ وَالرِّضَا উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মাজ আলহুম মিন উতাকায়িকা ফি আরাফাতা ওয়ারজুকহুমুল কাবুলা ওয়া রিদা।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তাদের আরাফার দিন মুক্তিপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং তাদের কবুল ও সন্তুষ্টি দান করুন।’
আরও পড়ুন: হজ কবুল হয়েছে কি না কীভাবে বুঝবেন
উল্লেখ্য, দোয়াগুলো সরাসরি হাদিসের নয়। তবে এর বাক্যগুলো দোয়ার আদব ও শব্দচয়ন অনুসরণ করে সাজানো এবং কোরআন-সুন্নাহর ভাষাগত ও অর্থগত শিক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ ধরনের দোয়া ইসলামি শরিয়তে বৈধ।
হাজিদের জন্য কেন দোয়া করবেন?
হাজিরা আমাদেরই ভাই-বোন
তারা উম্মাহর পক্ষে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করছেন
হজ একটি সম্মিলিত ইবাদত, যেখানে সবার অংশগ্রহণ মানসিক ও আধ্যাত্মিক
আপনিও ভাগ পেতে পারেন তাদের দোয়ায়
হাদিসে এসেছে, ‘একজন মুসলমান অন্য মুসলমানের জন্য অগোচরে দোয়া করলে তার জন্য এক ফেরেশতা দোয়া করে: ‘তুমিও যেন এমনই পাও।’ (সহিহ মুসলিম: ২৭৩২)
তাই আপনি যখন হাজিদের জন্য দোয়া করবেন, ফেরেশতারা আপনার জন্যও তেমনি দোয়া করবেন।
এই পবিত্র সময়ে যখন লাখো হৃদয় কাবার চত্বরে, আরাফার ময়দানে, মিনার তাঁবুতে কান্নাকাটি করছেন, তখন আমাদের দায়িত্ব—তাদের জন্য হৃদয় উজাড় করে দোয়া করা। কারণ তারা যেন ফিরে আসে মাগফিরাত, মাবরুর হজ এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি নিয়ে—এটাই আমাদের কামনা।

