হজ পালন ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ ও ফরজ ইবাদত। এই পবিত্র ইবাদত নারী-পুরুষ সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে নারীদের জন্য কিছু বিশেষ বিধান রয়েছে, যেগুলো মেনে চলা জরুরি। ইসলামি শরিয়তের আলোকে হজ পালনের সময় নারীদের যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত, তা নিচে তুলে ধরা হলো।
১. ইহরাম, পোশাক, তাওয়াফ ও সাঈ
নারীরা ইহরাম অবস্থায় সেলাই করা যেকোনো পোশাক পরতে পারেন। মুখ আবৃত করা নিষেধ, তবে চেহারার পর্দা যেন লঙ্ঘন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এর জন্য এক ধরনের ক্যাপ ব্যবহার করতে পারেন, যা পরিধান করলে মুখের পর্দাও হয়ে যায়, আবার মুখে কাপড় না লাগানোর উপরও আমল হয়ে যায়। আর মাথাও আবৃত রাখতে হবে। তাওয়াফের সময় রমল (দ্রুত হাঁটা) ও সাঈর সময় দৌড়াবে না। চুল মুণ্ডন না করে সামান্য কাটা যথেষ্ট। নারীদের জন্য তালবিয়া আস্তে পড়া সুন্নত। হজের শেষদিকে ঋতুস্রাব শুরু হলে তাওয়াফে বিদা করা জরুর নয়। তবে স্রাব বন্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে তাওয়াফে বিদা আদায় করে আসা উত্তম।
২. হায়েজ (ঋতুস্রাব) চলাকালে করণীয়
ঋতুস্রাব চলাকালে তাওয়াফ ও নামাজ পড়া নিষিদ্ধ। তবে ইহরাম বাঁধা, দোয়া, সাঈ এবং অন্য ইবাদত করা যাবে। যদি সময় সংকট হয়, তাহলে তাওয়াফ করলে কাফফারা (একটি দম - ছাগল বা দুম্বা) দিতে হবে।
বিজ্ঞাপন
৩. ঋতুস্রাব দেরিতে আনার ব্যবস্থা
অনেক নারী হজের সময় ঋতুস্রাব এড়াতে ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ সেবন করেন, যা শরিয়তসম্মত ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতেও গ্রহণযোগ্য, যদি কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকে।
৪. মাহরাম ছাড়া যাত্রা নয়
শরিয়ত অনুযায়ী, মাহরাম ছাড়া নারীর হজে যাওয়া বৈধ নয়। তাই হজে যাওয়ার সময় স্বামী, বাবা, ভাই বা অন্য মাহরাম থাকা বাধ্যতামূলক।
আরও পড়ুন: নারী হজের সফরে মাহরাম না পেলে কী করবেন
৫. দোয়া-ইবাদতে ব্যস্ত থাকা
মিনা, আরাফা ও মুজদালিফায় সময়কে দোয়া, ইস্তিগফার, দরুদ শরিফ ও ইবাদতে কাজে লাগানো উচিত। রওজা মোবারকের সামনে ধাক্কাধাক্কি বা চিৎকার না করে আদবের সঙ্গে সালাম জানানো ইসলামি ভদ্রতার অংশ। (ইসলামি ফিকহ, আল-বাহরুর রায়েক; সুনানে আবু দাউদ)
নারীদের জন্য শরিয়তের উল্লেখিত বিধানগুলো মানলে হজ সুন্দর ও সঠিকভাবে আদায় হয়। এসব নির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে চললে নারীদের হজ যেমন সহিহ হবে, তেমনি আল্লাহর সন্তুষ্টিও অর্জন হবে ইনশাআল্লাহ।

