কোরবানি ইসলামি শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। ১০ জিলহজ ফজরের পর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত সময়ে নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে তাকে কোরবানি দিতে হবে। এটি ওয়াজিব বিধান। আল্লাহ তাআলা কোরবানির নির্দেশ দিয়ে বলেন— ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন।’ (সুরা কাউসার: ২)
যেসব পশুতে শরিক হওয়া যায়
ছয় প্রকার পশু দিয়ে কোরবানি করা যায়। সেগুলো হলো গরু, মহিষ, ভেড়া, ছাগল, দুম্বা ও উট। অন্যান্য পশু দিয়ে কোরবানি নাজায়েজ। বড় পশু যেমন উট, গরু ও মহিষ সর্বোচ্চ সাত ভাগে কোরবানি করা যাবে। দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগেও বড় পশু কোরবানি কোরবানি করা জায়েজ। ছোট পশুগুলোতে (ছাগল, ভেড়া, দুম্বা) একজনের বেশি শরিক হওয়ার বিধান নেই।
কোরবানিতে কোনো শরিক কম টাকা দিতে পারবে?
শরিকদের কেউ কম টাকা দিয়ে যদি বলে যে, আমাকে কম টাকা পরিমাণ গোশত দিলে হবে। তাহলে তাকে শরিক করা জায়েজ নেই। কারণ, শরিকে কোরবানি করলে কারো অংশ এক-সপ্তমাংশের কম হতে পারবে না, এমন হলে কোনো শরিকেরই কোরবানি সহিহ হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে: ৫/৭১)
আরও পড়ুন: একজন একভাগ আরেকজন একাই ছয়ভাগে কোরবানি শুদ্ধ হবে কি?
বিজ্ঞাপন
তবে শরিকদের কেউ যদি তার বাকি টাকাটা স্বেচ্ছায় ভেঙে দেয় (ইসলামি ভাষায়, তাকে বাকি টাকাটার মালিক বানিয়ে দেয়) তাহলে শরিকদের সবার কোরবানি শুদ্ধ হবে। কারণ, তাতে কোনো অংশ আর কম হচ্ছে না। এটি মূলত শরিকে কোরবানি শুদ্ধ হওয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। ফুকাহায়ে কেরামের সর্বসম্মত অভিমত হলো- কোরবানির পশুতে প্রত্যেক অংশ সমান হতে হবে। কারো অংশ অন্যের অংশ থেকে কম হতে পারবে না। যেমন কারো আধা ভাগ, কারো দেড় ভাগ। এমন হলে কোনো শরিকের কোরবানি শুদ্ধ হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭)
আরও পড়ুন: কোরবানির পশুর পেটে বাছুর পাওয়া গেলে করণীয়
কোরবানিতে সাতের অধিক শরিক হওয়া যাবে?
এক পশুতে সাত জনের বেশি শরিক হওয়া বৈধ নয়। সাত জনের বেশি শরিক হলে কারো কোরবানি সহিহ হবে না। চাই অংশীদারগণ গরিব হোক বা ধনী। তাই কোরবানির পশুতে সাতের অধিক শরিক নেওয়া যাবে না। একান্ত এমন করতে চাইলে এক ভাগের সকল অংশীদার একজনকে মালিক বানিয়ে দিতে হবে। অতঃপর ওই ব্যক্তি নিজের পক্ষ থেকে ওই অংশ কোরবানি দিবে। গোশত পাওয়ার পর অংশীদারদের মধ্যে বণ্টন করে দিবে।
(ফাতাওয়া বাজজাজিয়া ৬/২৯০; খুলাসাতুল ফতোয়া: ৪/৩১৫; হিন্দিয়া: ৫/৩০৫; আলমুহিতুল বুরহানি: ৮/৪৭৮; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৬; মাজমাউল আনহুর: ৪/১৬৮; মাবসুত সারাখসি: ১২/১২; আদ্দুররুল মুখতার: ৬/৩১৫)

