ঈমান আনার পর নামাজ হচ্ছে মুসলমানের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এই ইবাদতের দাবি হচ্ছে, তা নিখুঁত ও শুদ্ধ হতে হবে। তাই নামাজে ভুলক্রমে ওয়াজিব কাজ ছুটে গেলে সাহু সেজদা দেয়ার মাধ্যমে নামাজ শুদ্ধ করা ওয়াজিব। (বুখারি: ৩৮৬, আবু দাউদ : ৮৭৪)
সাহু সেজদা অর্থ ভুলের সেজদা। এই সেজদার মাধ্যমে মূলত ভুল হওয়া নামাজ বিশুদ্ধ নামাজে রূপ নেয়। হানাফি মাজহাবে সাহু সেজদার পদ্ধতি হলো—
বিজ্ঞাপন
শেষ বৈঠকে তাশাহুদ পড়া শেষ করে ডান দিকে সালাম ফেরাবে। তারপর তাকবির বলে নামাজের মতো দুটি সেজদা করে বসে যাবে এবং তাশাহুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরাবে। (মুসনাদে আহমদ: ১৮১৮৮, বুখারি: ১১৫০, ১১৫৩)
সালামের আগে সেজদা করলেও নামাজ হয়ে যাবে। তবে, তা মাকরুহে তানজিহি। (মুসনাদে আহমদ : ১৮১৮৮; বুখারি: ১১৫০-১১৫৩; তিরমিজি: ৩৬১)
আর যে ব্যক্তির একই নামাজে কয়েকটি ওয়াজিব ভুলক্রমে ছুটে গেছে, সেক্ষেত্রে একবার সাহু সেজদা দিলেই হবে। (আব্দুর রাজ্জাক: ২/৩২১)
নামাজে অনেক ভুল-ভ্রান্তি হতে পারে—এমনটি ভেবে প্রত্যেক নামাজে সাহু সেজদা দেওয়ার কোনো বিধান নেই। নিশ্চিতভাবে যদি প্রবল ধারণা হয় যে, কোনো ওয়াজিব ছুটে গেছে কিংবা ফরজের ধারাবাহিকতায় ব্যত্যয় ঘটেছে, তাহলেই সাহু সেজদা ওয়াজিব হবে, অন্যথায় নয়। (ফতোয়ায়ে দারুল উলুম: খণ্ড-০৪, পৃ: ৫৯)
উল্লেখ্য, ইমামের ওপর সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হওয়ার কারণে সেজদায়ে সাহু করার সময় মুক্তাদিকেও ইমামের অনুসরণ করতে হবে (সহিহ বুখারি: ৩৬৫; সুনানে কুবরা: ৪০৫০)। আর যে ব্যক্তি নামাজের কোনো ওয়াজিব কাজ ইচ্ছা করে ছেড়ে দেয়, সে গুনাহগার হবে। তার নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। সাহু সেজদা দিলেও নামাজ সঠিক হবে না। তা অবশ্যই পুনরায় আদায় করতে হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সহিহ সুন্নাহমতো নামাজ আদায় ও যথাযথ নিয়মে সাহু সেজদা দেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

